Friday 29 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্লাস্টিকের বোতল ধরাই যখন পেশা


১৫ জুলাই ২০১৮ ১১:১৯

।। মাকসুদা আজীজ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর।।

জেলারা মাছ ধরে এটাই তো সবাই সারাজীবন শুনে এসেছে, কিন্তু দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্যের মালাবার উপকূলের শহর কোল্লামের জেলারা ধরে বোতল। আর এই বোতল ধরাটা এখন তাদের পেশাই হয়েছে গেছে বলা যায়।

কোল্লাম দক্ষিণ ভারতের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর কেননা এই শহর ঘেঁষে যে সাগর তা দেশটির ব্যবসা বাণিজ্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর এ কারণেই সাগর ঘিরে গড়ে উঠেছে নানান কারখানা আর মানুষ। এই মানুষগুলো যখন নিজেদের দৈনন্দিন জীবন যাপন করেন তখন স্বাভাবিক নিয়মেই সাগর দূষিত হয়।

“এভাবে সাগরের অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছিল যে যে মাছ ধরতে জাল ফেললে মাছের চেয়ে বেশি প্লাস্টিকের বোতল উঠে আসত” এভাবেই মালাবার উপকূলের অবস্থা ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে ব্যাখ্যা করেন সে এলাকার একজন স্থানীয় জেলে।

সাগরকে দক্ষিণ ভারতের মানুষেরা “মা” জ্ঞান করে। মায়ের জীবন রক্ষায় তখন এগিয়ে আসেন একদল জেলেই। প্রথমে এমনভাবে বোতল জালে আটকা পরলে তারা তা ছুঁড়ে আবার সাগরেই ফেলে দিত। কিন্তু এভাবে সমস্যা আরও বাড়তে থাকে, উপায় না দেখে তারপর সে বোতল টেনে ডাঙ্গায় আনার সিদ্ধান্ত নেন তারা। কিন্তু কী করা হবে এই বোতল নিয়ে তাই ভাবতে বসেন জেলেরা।

কিন্তু ঐ যে বলে না, উদ্যমী লোকের কাজ কিছুতে আটকে থাকে না। এই জেলের উদ্যমও বৃথা যায় না। ঠিক সরকারের লোকেরাই এগিয়ে আসেন বোতলের একটা ব্যবস্থা করতে। কোল্লামে তৈরি হয় একটি রিসাইকেল সেন্টার, ঐ অঞ্চলে সেটাই প্রথম রিসাইকেল সেন্টার।

এরপর আর কী? এখন তো জেলারা তক্কে তক্কে থাকে, কে কবে একটা বোতল পাবেন আর রিসাইকেল সেন্টারে জমা দিবে। স্থানীয় সেই জেলে জানান, এখন পর্যন্ত তারা সকলে মিলে ৬৫ মেট্রিকটন বোতলের একটা হিল্লে করেছে।

বিজ্ঞাপন

তবে এই বোতল ধরা আর রিসাইকেল করাই এই গল্পের সবটা নয়। এখানে আরও চমকপ্রদ বাঁক বাকি আঁচে। কোল্লামের সেই রিসাইকেল সেন্টারটা চলায় নারীরা। এলাকার সব নারীর কর্মসংস্থানের একটা পথ দেখিয়েছে এই রিসাইকেল সেন্টারটি। জেলেদের ধরে আনা বোতল এখানে প্রক্রিয়াজাত করে ছোটছোট টুকরা করা হয় তারপর তা ব্যবহার হয় রাস্তা নির্মাণে কাজে।

বুদ্ধিটা কিন্তু দারুণ, প্লাস্টিকের জীবনকাল পাঁচশ বছরেরও বেশি। এদিকে পথ ঘাট তো ভাঙ্গতেই থাকে। এখন দুই সমস্যাকে মিলিয়ে একটিকে আরেকটা সমাধান করে দেওয়া হয়েছে যেন জগতের লোক কিছুদিন অন্তত স্বস্তিতে থাকতে পারে।

একেই বলে সমস্যার জাদুকরী সমাধান।

সারাবাংলা/এমএ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর