ভাবতেই অবাক লাগে, একসময় মানুষ বিশ্বাসই করতে পারত না যে লোহার তৈরি কোনো বস্তু পাখির মতো আকাশে ভাসতে পারে! অথচ এই ‘অসম্ভব’কেই সম্ভব করেছিলেন দুই ভাই— অরভিল রাইট ও উইলবার রাইট। ১৯০৩ সালের ১৭ ডিসেম্বরে তাদের হাত ধরেই মানুষ পেয়েছে ডানা। তাই আজ রাইট ব্রাদার্স ডে।
সাইকেলের দোকান থেকে আকাশের পথে
রাইট ভ্রাতৃদ্বয় ছিলেন না কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী কিংবা বড় কোনো গবেষণাগারের বিজ্ঞানী। তারা ছিলেন সাধারণ মানুষ—ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ডেটনে একটি সাইকেলের দোকান চালাতেন। দিনের বেলা সাইকেল সারাই, আর রাতের বেলা নোটবুকে আঁকিবুঁকি— ‘মানুষ কীভাবে উড়তে পারে?’
এই ভাবনাই একদিন তাদের নিয়ে যায় ইতিহাসের পাতায়।
১২ সেকেন্ডের উড্ডয়ন, শতাব্দীর পরিবর্তন
১৯০৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর, যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনার কিটি হক এলাকায়, তাদের তৈরি বিমান ‘ফ্লায়ার-১’ প্রথমবারের মতো আকাশে ওঠে।
উড্ডয়ন সময়: মাত্র ১২ সেকেন্ড,
দূরত্ব: প্রায় ১২০ ফুট,
পাইলট: অরভিল রাইট,
শুনতে কম মনে হলেও, এই ১২ সেকেন্ডই বদলে দিয়েছে মানব সভ্যতার গতিপথ।
মজার কিছু তথ্য
প্রথম উড্ডয়নের সময় আশপাশে ছিল মাত্র ৫ জন প্রত্যক্ষদর্শী। কেউ তখন ভাবেনি— এই ঘটনাই একদিন মানুষকে চাঁদে পৌঁছে দেবে! রাইট ভ্রাতৃদ্বয়ের বিমানে তখন কোনো সিটবেল্ট ছিল না, এমনকি পাইলট শুয়ে শুয়েই বিমান চালাতেন। তাদের আবিষ্কারকে প্রথম দিকে অনেকেই ‘অবাস্তব কল্পনা’ বলে হাস্যরস করেছিলেন।
কেন এই দিনটি গুরুত্বপূর্ণ
রাইট ব্রাদার্স ডে শুধু দুটি ভাইয়ের সাফল্যের গল্প নয়; এটি স্বপ্ন দেখা, চেষ্টা করা এবং বারবার ব্যর্থ হয়েও হাল না ছাড়ার দিন। আজকের আধুনিক বিমান, জেট, এমনকি মহাকাশযাত্রার পেছনেও রয়েছে সেই ছোট্ট ফ্লায়ার-১-এর ছায়া।
শেষ কথা
আজ আপনি যখন বিমানে চড়ে ঘণ্টার ব্যবধানে এক দেশ থেকে আরেক দেশে যান, তখন মনে রাখুন— এই আরামদায়ক যাত্রার শুরু হয়েছিল একটি কাঠের বিমান আর দুই স্বপ্নবাজ ভাইয়ের হাত ধরে।