Saturday 05 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইমোজি দিবসের সাতকাহন


১৭ জুলাই ২০১৮ ১৬:০৫ | আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৮ ১৬:১১
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

।। মাকসুদা আজীজ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর।।

ইমোজি বা ইমোটিকন এখনকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যুগে বিশাল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা যারা চ্যাটিং, ক্ষুদে বার্তা আদানপ্রদান বা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের সীমিত বর্ণ সংখ্যায় ভাবের আদান প্রদান করি তারা এই ইমোজি ব্যবহার করি হরহামেশাই। তাই বলে ইমোজির জন্য একটা দিবস রাখতে হবে?

ভাই, তাহলে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞদের হালচাল খুলেই বলি। শুধু দিবস না, দুনিয়াতে একটা এনসাইক্লোপিডিয়া আছে যার নাম ইমোজি এনসাইক্লোপিডিয়া।

গত ডিসেম্বরে তুরস্ক রেডিও ও টেলিভিশন কর্পোরেশনের আমন্ত্রণ ও পৃষ্ঠপোষকতায় ১৫ দিনের যে আন্তর্জাতিক মিডিয়া ট্রেনিং নিলাম সেখানে পুরো এক বেলার শিক্ষা ছিল ইমোজির ব্যবহার নিয়ে। কে বলবে ইমোজি যে ভবিষ্যত মানুষের মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যমই হয়ে দাঁড়াবে না?

বিজ্ঞাপন

আমাদের দেশে আমরা ইমোজির ব্যাবহার খুব সীমিত মাত্রায় করি। এই যেমন বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে। দুই একজন বন্ধুভাবাপন্ন মুরুব্বির সামনে খুব সাহস নিয়ে অতি সাবধানে ইমোজি যদি ব্যবহার করে ফেলি নিচে আবার সাবটাইটেল বসাই। পাছে যাদি ভাবে বেয়াদবি হচ্ছে।

ওদিকে দুনিয়া সুদ্ধ মানুষ টুইটারে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেয় ইমোজিতে। করার কী আছে বলুন? টুইটার যে বর্ণ সংখ্যা সীমিত রেখেছে এখনও। আর এত ব্যস্ততার দুনিয়ায় কার সময় আছে মোবাইল টিপে টিপে এত আলাপ করার, তাই সহজ সমাধান, ইমোজি!

ইমোজি কিন্তু ঐ বুড়ো দাদুদের ‘তোমাদের প্রজন্মের ভাব বিনিময় হয় না’ কথার বিশাল জবাব। আচ্ছা, ভালো কথা আমরা মুখে কথা বলি কম, চ্যাটে লিখি বেশি। বেশতো আমাদের হাতের লেখা নাই তাই আমাদের লেখা দেখেও বোঝা যায় না আমরা কোন অবস্থায় আছি। চেহারা তো আমরা দেখাইই না, দেখাই ইমোজি। বরং আমাদের ইমোজি কালচার দাদুদের ভাব বিনিময়ের চেয়ে ভালো, আমরা সচিত্রে বলতে পারছি কোন পরিস্থিতিতে আছি।

ইমোজির সবচেয়ে বড় গুণ সে দারুণ সময় বাঁচায়। গুরুত্বপূর্ণ কাজ পড়েছে, ওদিকে যার সঙ্গে কথা হচ্ছিল তাকেও অবহেলা করা যায় না, তাই না? ধুপ করে একটা ইমোজি লাগিয়ে দিলাম, সময় বাঁচলো আবার সম্পর্কও ঠিক থাকলো।

এশিয়া যাবেন, রাশিয়া যাবেন, ক্রোয়েশিয়া যাবেন, ইন্দোনেশিয়া যাবেন এত দেশের মানুষ সবাই কি আমার আপনার ভাষা জেনে বসে আছে? রাশিয়ার মানুষ ক্রোয়েশিয়ার কথা বুঝলেও বুঝতে পারে, মেক্সিকোর ভাষা বুঝতে যাবে কোন দুঃখে? বা মিশরের? খোদ ইংরেজি ভাষারই তো দেশে দেশে উচ্চারণ ভিন্ন শব্দ প্রয়োগ ভিন্ন।

সেক্ষেত্রে ইমোজি এখানে একদম জীবন রক্ষা করতে পারে। আমার কথা বিশ্বাস না হলে চায়না গিয়ে টয়েলেটের খোঁজে বের হতে পারেন। ইমোজির এমন ফ্যান হবেন যে আর কোনো ভাষার খোঁজই করবেন না।

ইমোজির এই ভাষা সবচেয়ে ভালোভাবে রপ্ত করেছেন তরুণ প্রজন্ম। বয়সে বৃদ্ধ কিন্তু মনে তরুণরাও দারুণ ইমোজি পারেন। এইসবে মুগ্ধ হয়ে ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড ফান্ড কোন কোন প্রাণী বিলুপ্ত হওয়ার পথে তার তালিকা ইন্টারনেটে ইমোটিন দিয়ে প্রকাশ করেছে। ওদিকে কিছু খাওয়ার দোকানও মেনুকার্ড ইমোজিতে ছেড়ে দিয়েছে। নাও বাবা এবার সময়, পয়সা, জায়গা সব বাঁচাও।

তো এই মহামতি ইমোজির জন্য বিশ্বের ইমোজির রাজা জের্মি বার্গ ২০১৪ সাল থেকে ১৭ জুলাইকে ইমোজি দিবস হিসেবে পালন করছেন, আর সবাইকে করাচ্ছেনও। এই বার্গ ভাইও অসাধারণ। জীবনের সকল সময় নিয়ে তিনি ইমোজিকে গঠন করছেন। এখন কে বলবে এই ইমোজি আগামী যুগের ভাষা হয় নাকি মনোফনিক রিংটোনের মতো কালের গর্ভে হারিয়ে যায়!

সারাবাংলা/এমএ/এসএমএন

ইমোজি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর