মাছদের প্যারা ট্রুপিং
৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৫:২৩
।। বিচিত্রা ডেস্ক।।
প্লেনে থেকে প্যারাসুট দিয়ে নামা সারা পৃথিবীতে খুব জনপ্রিয় স্পোর্টস। মোটামুটি পাহাড়ি এলাকা আর একটু পর্যটন দেশ হলেই সেখানে প্লেন নিয়ে প্যারাসুটে চেপে মানুষ আকাশ থেকে নেমে আসে। আর সেনাবাহিনীতে কাজ করা মানুষদের জন্য তো এটা ডাল-ভাত। কাজের প্রয়োজনেও নামেন আবার জাতীয় অনুষ্ঠান ইত্যাদিও নামেন। তাদের ব্যাপারখানা দেখলে মনে হয় প্যারা ট্রুপিং জিনিসটা বেজায় মজার!
মানুষের এই মজা যদি মাছরা করতে বসে তাহলে বিষয়টা কেমন হয়? আসলে ঘটনটা ঠিক এমন নয়, মাছগুলোর একদম ইচ্ছে ছিল না প্যারা ট্রুপিং করার। বরং এই মাছেরা তো ঐ এলাকায় থাকতেই চায় না। ওদেরকে ধরে এনে এনে আবার ফেলা হচ্ছে।
ঘটনাটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউটা অঙ্গরাজ্যের। ইউটা এমনিও একটু কম জনপ্রিয় অঙ্গরাজ্য। দেশটির দশম কম মানুষের রাজ্য এটা। ওদিকে রাজ্য জুড়ে অনেক লোনা পানির লেক। সেই লেকেই এইসব এক থেকে তিন ইঞ্চির মাছগুলোর বাড়ি। তবে এই মাছগুলো ঐসব লেকে ঠিক থাকে না। তারা এদিক সেদিক চলে যায়, আবার কম মানুষের বাস হলে কী হবে ইউটাতে প্রচুর মানুষ আসে তারা মাছ ধরেও। ফলে লেকগুলো খালি হয়ে যায় সহসাই।
ইউটার ওয়াইল্ড লাইফ রিসোর্সেস ডিভিশন মাছেদের এই পরিব্রাজন নিয়ে বেশ চিন্তিত। অনেক বছর ধরেই লেকগুলোতে তারা নিয়ম করে মাছ যোগ করে। এর জন্য এই সংস্থাটির বেশ ঝামেলা হয়। দূর থেকে মাছ বহন করে আনা সহজ না। আর বিষয়টা সময় সাপেক্ষও বটে। তাহলে আর কী করা? এই বার তারা বুদ্ধি এঁটেছে, প্লেনে করে নিয়ে এইসব মাছদের লেকে ফেলা হবে।
বিস্তর গবেষণা করে ওয়াইল্ড লাইফ ডিভিশন দেখেছে এতে আসলে এক থেকে তিন ইঞ্চি বড় মাছেদের কোনো কষ্টই হবে না। পানির সঙ্গে ওদের যখন লেকে ফেলা হবে, নিম্নমুখী বাতাস ওদের সুন্দর ধীরে ধীরে পানিতে নামাবে। ফলে এতে মাছের জীবন ৯৭ শতাংশ নিরাপদ।
এখন কথা হচ্ছে, কেন মাছেদের এভাবে কানে ধরে লেকে নিয়ে আসা? আসল বিষয় হচ্ছে, লেকগুলো যদি মাছ শূন্য হয়ে যায় তবে এই এলাকার জলজ বাস্তুসংস্থান বেশ খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই কি আর হতে দেয়া যায়? মানুষ কি আর এটা জানে না, তাদের বেঁচে থাকার স্বার্থেই প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, মানুষের বুঝতে সময় লেগে যাচ্ছে। এতে প্রকৃতির এমন অনেক ক্ষতিই হয়ে যাচ্ছে যা আর ফিরিয়ে আনা যাবে না কোনোদিনও।
সারাবাংলা/এমএ