নিরামিষ ভোজী হাঙ্গর!
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৬:৫৯
।। বিচিত্রা ডেস্ক।।
একজন রক্তক্ষয়ী হিংস্র শ্বাপদ। হঠাৎ করেই যদি হিংস্রতা বাদ দিয়ে নিরামিষ ভোজী হয়ে যায় তবে শুনতেই যেন কেমন লাগে না? মনে হয়, কী সমস্যা ওর? সে কি সন্ন্যাস নিলো? নাকি অন্য কোনো সমস্যা হয়েছে।
বিশ্বাস করা কঠিন হলেও এমন একটা ঘটনা সত্যিই ঘটেছে বিজ্ঞানীরা এমন এক হাঙ্গরের সন্ধান পেয়েছে যার নাকি মাংসে দারুণ অরুচি! এই হাঙ্গর পরিবারের কুলাঙ্গার প্রজাতির প্রিয় খাবার শাক লতা পাতা, কী বিচিত্র কথা!
বিচিত্র কথার এই শেষ নয়। হাতুড়ি মাথা হাঙ্গরের কাছাকাছি প্রজাতির এই হাঙ্গর নাকি সারা জীবনই আমেরিকার উপকূল জুড়ে মহড়া দিয়ে বেড়াতো। এতদিনে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পেরেছেন, আরে এরা তো স্বেচ্ছায় নিরামিষ খায়!
এই হাঙ্গরের নাম হচ্ছে বনেটহেডেড হাঙ্গর। যেমন নাম তেমন চেহারা। একদম যেন গাড়ির বনেট। এরা একদম বিশাল দলবল নিয়ে বাস করে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বে আটলান্টিকের পশ্চিম উপকূলে। ম্যাক্সিকোর সাগরেও। এই সব জায়গায় প্রচুর পরিমাণে কাঁকড়া, চিংড়ি, শামুক আর কাঁটাওয়ালা মাছ পাওয়া যায়। এই ছোটখাটো আমিষ খেয়েই দারুণ খুশিতে জীবন পার করে দেয় এসব হাঙ্গরগুলো। কতই বা বড় আকারে? স্ত্রী হাঙ্গরগুলো একটু বড়সড় হয় সেগুলো পাঁচ ফুট পর্যন্ত বড় হতে পারে। ফলে ছোটরা যে কত ছোট বোঝাই যাচ্ছে।
এই ছোট্ট-খাট্টো হাঙ্গরগুলো নিয়ে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার এবং ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সায়েন্টিস্টরা তাদের নিয়ে গবেষণা করে দেখতে পেয়েছেন এটা বেশ খুশি মনে সামুদ্রিক উদ্ভিদ খেয়ে থাকে।
গবেষকদের দলের একজন অবশ্য মনে করছিলেন হাঙ্গরদের এভাবে শাক সবজি খাওয়া একটা কাকতালীয় ঘটনা, এটা তাদের শরীরে কোনো পুষ্টির যোগান দেয় না। তিনি তো উল্টা এটা দেখতে বসেছেন এই ঘাস লতাপাতা খেয়ে হাঙ্গররা বাঁচতে পারে। কারণ তিনি মনে করেন, প্রাণী যা খায় তার সবটাই তার হজম হওয়ার বা পুষ্টিতে যোগ হয় না।
এরপর তারা বেশ করে সামুদ্রিক আগাছা এনে গবেষণাগারে চাষ করেছেন। তারপর কিছু বনেটহেডেড হাঙ্গরকেও সেগুলো তিন সপ্তাহব্যাপী এই আগাছা খাইয়েই রেখেছেন। মজার বিষয় হচ্ছে তারা সত্যি এগুলো খেয়ে বড় হয়েছে। তাদের ওজনও বেড়েছে।
এইসব দেখে এখন তো মানতেই হয় এই হাঙ্গর নিরামিষ ভোজী। তাই যদি হয় তাহলে আর হাঙ্গর দেখে দৌড়ে পালানোর কিছু নেই। সব হাঙ্গর ভয়ঙ্কর নয় কিন্তু।
সারাবাংলা/এমএ