কচ্ছপের হুইল চেয়ার!
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৬:০৮
।। বিচিত্রা ডেস্ক।।
কচ্ছপ যে ধীরে হাঁটে এই কথা তো আমরা সবাই জানি। আর ধীরে সুস্থে হাঁটলে নাকি দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও থাকে না; কিন্তু এটা একটা ধারণা মাত্র। দুর্ঘটনা শুধু নিজের কারণে না বরং পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণেও হতে পারে। আর এমন একটা দুর্ঘটনায় পড়ে আমেরিকার মেরিল্যান্ডে এক কচ্ছপের বাহন হয়েছে হুইল চেয়ার। একে কচ্ছপ, তায় হুইল চেয়ার! কেমন হলো না বিষয়টা? যাক তাহলে বিস্তারেই জানা যাক ঘটনাটা আসলে কী ছিল?
মেরিল্যান্ডের স্থানীয় এক পার্কে একটা কচ্ছপ পাওয়া গেছে যার শরীরে অনেক অনেক ভাঙ্গাচোরা। কচ্ছপদের ব্যাপার-স্যাপার আবার আমাদের মতো না। আমাদের যেমন শরীরের ভেতরে হাড়গোড় ওদের শরীরটাই আটকে থাকে একটা শক্ত খোলসে, চিড় ধরেছে সেখানেই। এই ফাটল নিয়ে খুব কষ্টে ছিল বেচারা কচ্ছপ। এখন ওদের তো আর ডাক্তার বদ্যির কাছে যাওয়ার উপায় নেই, কী আর করা!
এই নিরূপায় কচ্ছপটিকে খুঁজে পেয়ে মেরিল্যান্ড চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ নিয়ে আসে শুশ্রূষা করবে বলে। আনার পর দেখা গেলো বেচারা কচ্ছপের খোলসের নিচের অংশ ভেঙ্গে গেছে। এখন মানুষের যখন এমন হাড়ে চিড় ধরলে তাদের তো চলাচলে বারণ করা হয়, বিশ্রাম নিতে বলা হয় আর ফাটল জোড়া দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কচ্ছপের যদি ফাটল ভরাট করার ব্যবস্থাও করা হয় তাহলেও চলাচলের বিষয়টা নিয়ে চিন্তা থেকে যায়। আহা, কচ্ছপকে তো আর বললেই হাঁটা থামাবে না, তার হাঁটা গতি ধীর হতে পারে কিন্তু অধ্যবসায়ের তো সীমা নেই।
মেরিল্যান্ড চিড়িয়াখানার পশু চিকিৎসকরা তাই কচ্ছপটির ভাঙ্গা খোলস জোড়া দেয়ার আগে ভাবতে শুরু করলেন কী করলে তার হাঁটার পরেও এই ক্ষত পূরণ হতে অসুবিধা হবে না। এরপর যা ভাবলেন তা নিয়ে এখন ভাবতে বসেছে বিশ্ববাসী।
মেরিল্যান্ডের চিকিৎসকরা কচ্ছপটির জন্য একটা চাকার ব্যবস্থা করে দিলেন যেন চলা ফেরা করতে আরাম হয় তার। কিন্তু কাজটা খুব সহজ ছিলো না। একজন রীতিমতো বিশেষজ্ঞ লেগো আর্টিস্টের সহায়তায় লেগো দিয়ে একটা গাড়ি বানানো হলো। লেগোর গাড়ি শুনতে যত সহজ লাগছে জিনিসটা অতও সহজ ছিল না। লেগো শিল্পীকে রীতিমতো মাপজোক নিয়ে কাজ করেছেন কীভাবে কচ্ছপটাকে আরাম দেয়া যায়।
মজার বিষয় হচ্ছে, কচ্ছপটির কিন্তু এই গাড়িতে চড়তে একটুও কষ্ট হয়নি। সে খুব খুশি মনেই নতুন এই বাহনে চেপে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর খুব ধীরে ধীরে তার ক্ষতও সেরে যাচ্ছে। কচ্ছপ তো তাই তার ক্ষতের সাড়া গতি সেই ধীরই।
সারাবাংলা/এমএ/এনএইচ