Monday 07 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী যখন শনিবারের ডাক্তার!


১০ মে ২০১৯ ১৫:৩৫ | আপডেট: ১০ মে ২০১৯ ১৭:৫৯
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাসপাতালে রোগীর সঙ্গে ছবি ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং

ভুটানকে বলা হয় সুখী ও মানবিক দেশ, থান্ডার ড্রাগনের দেশ। দক্ষিণ এশিয়ার ছোট এই দেশটি বেশ কিছু কারণে অন্যদের চেয়ে একটু আলাদা। ভুটানে তামাক নিষিদ্ধ, ব্যবহার করা যায় না প্লাস্টিক পণ্য। এমনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে আইন করা আছে ৬০ ভাগ বনাঞ্চল থাকার ব্যাপারে। এমন কল্যাণকর রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীও যে কিছুটা ভিন্ন হবেন না তাও কি হয়?

শুনুন তাহলে, ভুটানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং (৫০) এর কথা। সরকারি কাজের পাশাপাশি তিনি প্রতি সপ্তাহের শনিবার কাটান হাসপাতালে রোগীর সেবা করে। ডাক্তার হিসেবে লোটে শেরিং যখন ‘দ্য জিগমে দর্জি ওর্য়াচুক ন্যাশনাল রেফারেল হসপিটালে’র করিডোর দিয়ে হেঁটে যান, তখন কেউ প্রধানমন্ত্রী বলে তার দিকে বাঁকা চোখে তাকায় না। কারণ এই ঘটনার সঙ্গেই তারা পরিচিত।

বিজ্ঞাপন

লোটে শেরিং ডাক্তারি পড়াশোনা করেছেন বাংলাদেশের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে। এরপর উচ্চতর ডিগ্রি নিয়েছেন জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র থেকেও। ২০১৩ সালে তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন এবং প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ২০১৮ সালে।

তবে সরকারি দায়িত্বে চাপা পড়ে তিনি তার পেশা ভুলে যাননি। বরং জানান, সপ্তাহে একদিন রোগী দেখাটা তার চাপ কমাতে সাহায্য করে। লোটে শেরিং বলেন, কেউ গলফ খেলে, কেউ শিখে ধনুর্বিদ্যা আর আমি আমার কাজটি (ডাক্তারি) করি।

লোটে শেরিং তার সাপ্তাহিক রুটিন জানাতে গিয়ে বলেন, সাধারণত শনিবার তিনি হাসাপাতালে রোগী দেখেন। বৃহস্পতিবার সকালটি তিনি কাটান ডাক্তার ও হাসপাতালের শিক্ষানবিশদের পরামর্শ দিয়ে। আর রোববার কাটে পরিবারের সঙ্গে। বাকি দিনগুলোতে সরকারি দফতরে কাজ করেন।

লোটে শেরিং হাসপাতালে তার চিকিৎসাসেবা দেওয়াকে বাড়তি কাজ হিসেবে দেখেন না। বরং ভাবছেন, নির্বাচনের আগে স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে জনগণকে দেওয়া তার ওয়াদা হিসেবে।

তিনি বলেন, হাসপাতালে আমি রোগীদের মেডিকেল রিপোর্ট দেখি। পরামর্শ দেই। আর সরকারি অফিসে  আমি স্বাস্থ্যসেবার নীতিমালাগুলোতে নজর দেই। উভয় কাজের সমন্বয় করে ভালো কিছু করার চেষ্টা করি।

প্রিয় পাঠক, এবার আপনাকে আরেকটু অবাক করে দেই। আপনি হয়তো জানেন না, পৃথিবীর একমাত্র দেশ হিসেবে ভুটানের রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন পরিমাপের মান নির্ধারণ করা হয়েছে, জিডিপি হিসেবে নয় বরং ‘সুখ’ হিসেবে। সেই ১৯৭৪ সাল থেকেই ভুটান আর্থিক সফলতার চাইতে তার দেশের নাগরিকদের আত্মিক পরিশুদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিতে থাকে। আর তাই দেশটির জাতীয় উন্নতির মাপকাঠি মিলিয়ন-বিলিয়ন ডলার নয় বরং ‘সুখ’। এমনকি এ বিষয়ে কাজ করে দেশটির জাতীয় সুখ কমিশন।

তাই ভুটানের মানুষদের আরেকটু সুখী করে তুলতে, হাসপাতালে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর নিয়মিত সেবা দেওয়া হয়ত বেমানান কিছু নয়!

ট্রিবিউন ইন্ডিয়া থেকে অনূদিত

সারাবাংলা/এনএইচ

 

ডাক্তার প্রধানমন্ত্রী ভুটান লোটে শেরিং

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর