১০ হাজার বছর পুরনো চুইংগামে মানব ডিএনএ
১৯ মে ২০১৯ ১৯:২৯
আমরা আমাদের কত পূর্বপুরুষের অস্তিত্ব সম্পর্কে ধারণা রাখতে পারব? দুই তিন কিংবা চার পুরুষ। কিন্তু সে কেবলই অস্তিত্ব। তাদের সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস এগুলো বের করা হয়তো সম্ভব হবে না। কিন্তু বিজ্ঞান এমন এক পর্যায় চলে গেছে যে, এখন সামান্য বস্তু থেকে ১০ হাজার বছর আগের মানব চিহ্ন এবং তাদের সমাজ-সংস্কৃতি সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় তারই প্রমাণ মিলেছে।
গবেষকরা দশ হাজার বছরের পুরনো একটি চুইংগামে স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চলের প্রথম মানব বসতির ডিএনএ নমুনা খুঁজে পেয়েছেন। সুইডেনের পশ্চিম উপকূলবর্তী হিউজবাই-ক্লেভ এলাকায় চুইংগামটি পাওয়া যায়।
বার্চ বার্ক গাছের আলকাতরাতে প্রত্নতাত্ত্বিকরা দুইজন নারী এবং একজন পুরুষের ডিএনএ খুঁজে পায়। এই আলকাতরা প্রাচীনকালে চুইংগাম হিসেবে খেতো মানুষ। এছাড়া তীরের গতি বাড়ানো ও কুঠারের ধারালো পাত মেরামতের কাজেও ব্যবহার করা হত এই আলকাতরা।
কমিউনিকেশনস বায়োলজির একটি জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণার গবেষকরা বলছেন, এই অঞ্চল থেকে পাওয়া এটিই প্রাচীনতম মানব ডিএনএ। ফলাফল থেকে আরও জানা যায়, প্রাপ্ত তিন জনের ডিএনএ’র সঙ্গে সুইডেনের অন্যান্য প্রাচীন শিকারী গোষ্ঠী ও ইউরোপের বরফ যুগের প্রাথমিক মেসোলিথিক জনগোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ জেনেটিক সম্বন্ধ রয়েছে।
গবেষকরা এখন আশা করছেন, এই চুইংগাম ঐতিহাসিক রহস্যগুলো উদঘাটনে সহায়তা করবে, যেমন লৌহ যুগের সরঞ্জাম গুলো কারা তৈরি করত, স্ক্যান্ডিনেভিয়ার প্রথম মানব বসতির খাদ্য কি ছিল এবং তাদের দাঁতে কেমন ব্যাকটিরিয়া বসবাস করত এইসব।
স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব গবেষণা ল্যাবরেটরিতে এই ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করা হয়। ল্যাবরেটরির অ্যান্ডারস গোথারস্টর্ম বলেন, ‘আমরা যেই ডিএনএ বহন করি এর মধ্যে আমাদের অনেক ইতিহাস পাওয়া যায়। তাই যেখনেই ডিএনএ নমুনা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেখানেই আমরা খুঁজি।’
‘প্রাচীনকালের মানব সম্প্রদায়ের উত্স এবং গতিবিধি সন্ধানেই শুধুমাত্র নয়, তাদের সামাজিক সম্পর্ক, রোগ ও খাদ্যাভ্যাস জানার জন্যেও এই প্রাচীন চুইং গামের ডিএনএ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ বলছিলেন নরওয়ের ওসলো শহরের সামাজিক ইতিহাস জাদুঘরের এক কর্মকর্তা।
সারাবাংলা/টিএম/এমএম