জরায়ু কেটে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন ভারতের নারী শ্রমিক
৫ জুলাই ২০১৯ ২০:৫৪
কাজে অনুপস্থিত থাকলেই বেতন কাটা। শুনতে হয় মালিকের গঞ্জনা। অনেকসময় জরিমানাও দিতে হয়। কৃষি খাতে যেসব নারীরা শ্রম দেন, পিরিয়ডের সময় ভারি কাজ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না তাদের। তাই এসময় অনেক নারী শ্রমিকই কাজে অনুপস্থিত থাকেন। কিন্তু বেতন কাটাসহ মালিকের গঞ্জনা সহ্য করতে না পেরে জরায়ু কেটে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন হাজার হাজার ভারতীয় নারী শ্রমিক।
ভারতের মহারাষ্ট্র ও তামিলনাড়ুর অনেক গ্রামে খুঁজলেও জরায়ু আছে এমন নারী পাওয়া যাবে না। এদের বয়স ২০ থেকে ২২ বছর। অনেকেই দুই বা তিন সন্তানের মা। শুধুমাত্র অভাবের তাড়নায় অপারেশন করে জরায়ু ফেলে দেন এই দরিদ্র নারী শ্রমিকরা।
ভারতের মহারাষ্ট্রে গত তিন বছর ধরে এই অবস্থা চলে আসলেও সম্প্রতি স্থানীয় গণমাধ্যম এবং আন্তর্জাতিক মহলের নজরে এসেছে বিষয়টি। সংবাদ বলছে, আলোচনায় এলেও দেশটির প্রশাসন এখনো গুরুত্ব দিচ্ছে না বিষয়টিতে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আরও বলছে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতি, শ্রম আইন কিছুই মানা হচ্ছে না মহারাষ্ট্রে। নারী শ্রমিকদের থাকতে দেওয়া হয় ক্ষেতের পাশেই। নেই নির্দিষ্ট শ্রম ঘণ্টা। অনেক সময় রাত জেগেও কাজ করতে হয় তাদের। নারী শ্রমিকদের মতে, একদিনের টাকা মানে ‘অনেক কিছু’। তিন-চারদিন ঘরে বসে থাকার কোনো উপায় নেই।
রয়েছে ভূ-স্বামীদের অত্যাচার এবং কাজ পেতে অনিশ্চয়তা। যে কারণে নারী শ্রমিকরা ছুটি নিতে সাহস পান না।
এ বছরের জুন মাসে মহারাষ্ট্রের রাজ্যসভায় বিধায়ক নিলাম ঘোরে নারীদের ওপর ঘটা এই নিপীড়নের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী একনাথ সিন্ধ দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সে সময় একটি তদন্ত কমিটি করারও ঘোষণা দেন তিনি।
তামিলনাড়ুতেও অনেক নারী শ্রমিক এই ধরনের ভয়াবহ নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। অভিযোগ উঠেছে, কল-কারখানায় কাজ করা নারীদের পিরিয়ডের সময় খাওয়ানো হয় নাম না জানা ওষুধ। এতে সেখানকার নারীদের স্বাস্থ্য সমস্যা আরও বাড়ছে।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন তামিলনাড়ুর নারীদের নিয়ে কাজ করে। সংগঠনটি ভুক্তভোগী ১শ’ নারী শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে। তারা জানিয়েছে, নাম না জানা এসব ওষুধ খেয়ে কম-বেশি সবারই নানা শারীরিক সমস্যা হয়েছে।
সারাবাংলা/টিসি/একে/এটি