অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হলে নারীর ক্ষমতায়ন হবে বলে মনে করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেসা। তিনি বলেন, ‘নানা ধরনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীরা শিক্ষিত হয়ে উঠবেন। তখন নিজ উদ্যোগে নানা বিষয়ে কাজ করার সক্ষমতা অর্জন করবেন। কারো উপর যেন নির্ভর করতে না হয় এমন শিক্ষাই নারীর পেতে হবে।’
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) জাতীয় মহিলা সংস্থায় অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের ‘বিকাশ সাধন’ প্রকল্প’র আয়োজনে ‘প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে মতবিনিময়, ভাতা ও সনদ বিতরণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেগম ফজিলাতুন নেসা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার। তিনি বলেন, ‘নারীরা যদি অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী না হয় তাহলে তার কথার দাম থাকে না। সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণ করতে পারে না। কোন কিছুর প্রতিবাদ করতে পারে না। এক্ষেত্রে সরকারের এই প্রকল্পটি নারীদের জন্য সহায়ক। এই প্রকল্পের আওতায় নারীরা প্রশিক্ষণ নিয়ে সেই শিক্ষা নিজের জীবনে প্রয়োগ করতে পারছে এবং সাফল্য অর্জন করছে।’
অনুষ্ঠানে ২০০ জন নারী প্রশিক্ষণার্থীকে সনদ দেওয়া হয়, যারা পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ৬৫ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। পাঁচটি ক্যাটাগরির মধ্যে আছে- বিউটিফিকেশন, ফ্যাশন ডিজাইন, ক্যাটারিং, ইন্টেরিয়র ডিজাইন এবং বিজনেস ম্যানেজমেন্ট এন্ড ই-কমার্স। সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে সম্পূর্ন বিনামূল্যে নারীদের এই ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
বক্তব্যের শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া এছাড়া যে নারীরা প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহী, এই অনুষ্ঠানে ছিল তাদেরও উপস্থিতি। জুন ২০২০ পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে।
ইন্টেরিয়র ডিজাইনে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন আফসানা নাহিদ। প্রশিক্ষণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রশিক্ষণে অংশ নিয়ে অনেককিছু শিখেছি। ইন্টেরিয়র ডিজাইনের ওপর আমরা এখানে যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে সবাই মিলেই এখন কিছু করতে চাই। কিন্তু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। এই মুহূর্তে আমাদের কাছে এতো টাকা নেই। তাই আমাদের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হতে আরো কিছুটা সময় লাগবে। এখন যেহেতু অনলাইনের মাধ্যমেই সব ধরনের ব্যবসা শুরু হয়, ফলে আমাদেরও এই ধরনের চিন্তা আছে।’
উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার জন্য কীভাবে চেষ্টা করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপাতত কিছু মেলায় (যেমন বৈশাখি মেলা) কাজ করছেন। এছাড়া বন্ধু বা পরিচিতদের বিয়ের অনুষ্ঠানের সাজসজ্জায় থাকেন। এভাবেই কিছু টাকা আয় হচ্ছে বলে জানান আফসানা নাহিদ।
জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান ও অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক মমতাজ বেগম বলেন, ‘এই প্রকল্প নারীদের অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। নারীরা স্বনির্ভরতা অর্জন করছে।’
ক্যাটারিং প্রশিক্ষণার্থীদের তৈরি খাবার প্রদর্শনী করা হয় এই অনুষ্ঠানে।
প্রসঙ্গত, সুবিধাবঞ্চিত নারীদের আত্ম-নির্ভরশীলতা অর্জনের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় জাতীয় মহিলা সংস্থা ২০১৫ থেকে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায় বাস্তবায়ন করছে।
সারাবাংলা/টিসি/