রাশিয়ার এক ‘তিয়েনআনমেন কন্যা’র কথা
৭ আগস্ট ২০১৯ ২০:৪৯
১৭ বছর বয়সি এক রাশিয়ান তরুণী বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে রাস্তার মাঝখানে বসে আছে। তার কারণে আটকে আছে কয়েকশ দাঙ্গা পুলিশ। তাদের পেছনে স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনকারীরা। কিন্তু মেয়েটি সম্পূর্ণ নির্বিকার ভঙ্গিতে কোলের ভেতর ১৯৯৩ সালের রাশিয়ার সংবিধান রেখে পড়েই চলেছে।
ওলগা মিস্ক নামের এই তরুণীর ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে তিনিই হয়ে উঠেছেন রাশিয়ার গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনের প্রতীক। অনেকেই তার তুলনা করেছেন তিয়েনআনমে স্কয়ারের সেই ট্যাংক ম্যানের সঙ্গে। যিনি ১৯৮৯ সালে বেইজিংয়ের রাস্তায় একটি ট্যাংকের পথ রোধ করে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন।
আগামী সেপ্টেম্বর থেকে মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগে পড়তে যাবেন ওলগা। তিনি স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবিতে মস্কোতে চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে এ কাজ করেছিলেন। তবে তিনি শুধুমাত্র স্বচ্ছ নির্বাচন হলেই সন্তষ্ট নন বরং তিনি নিজের জন্য, রাশিয়ার মানুষের ন্যায্য অধিকারের পক্ষে লড়ে যাবেন। যদিও এর জন্যে তিনি প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলোর কোনটির কাছেই যাবেন না।
ওলগা মিস্ক মস্কোর কাছকাছি এক মফস্বলে জন্ম নিয়েছেন। তিনি তার বাবা মার মেঝ সন্তান। পড়তে তিনি ভালোবাসেন। বিশেষত ডিস্টোপিয়ান ভবিষ্যৎ এবং একনায়কতন্ত্র যুগের লেখক জর্জ অরওয়েল এবং অ্যালডাস হাক্সলে তার পছন্দের। চলমান বিশ্ব পরিস্থিতির ব্যাপারে তার আগে থেকেই আগ্রহ ছিল। কিন্তু অবসরের বয়সসীমা নিয়ে আন্দোলনের সময়ে রাজনীতির ব্যাপারেও তার আগ্রহ বেড়েছে।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে মানুষের আহাজারি দেখেই তিনি রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যে এসে এভাবে অবস্থান নেন।
ওলগা নিজেকে অন্য তরুণদের চেয়ে আলাদা বলেছেন। তিনি বলেছেন এরকম মুহুর্তে তিনি চুপ করে বসে থাকতে পারেননি। তিনি এরকম অবস্থান নেওয়ার কারণে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তিত নন। যেহেতু তিনি এখনও প্রাপ্তবয়স্ক নন, তাই তার বাবা-মা ই তার ব্যাপারে সর্বশেষ সিদ্ধান্ত দেবেন।
রাশিয়ার প্রসিকিউটররা অবশ্য আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে ওলগার বাবা-মার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।