বোতলের ভেতর জিন-পরী বন্দির রুপকথা শোনা যায়। আবার বোতলবন্দি চিঠির গল্পও আছে প্রচুর। সেগুলো কি শুধুই গল্প? বাস্তবেও আছে এমন ঘটনা! বিপদে পড়া নাবিক সাহায্যের আশায় চিঠি লিখে বোতলবন্দি করে ছেড়ে দিয়েছেন সমুদ্রে। যদি কেউ চিঠিটি পায় সেই আশায়।
আবার কেউ স্রেফ শখের বশেই নিজের অস্তিত্বের কথা অজানার উদ্দেশ্যে বোতলবন্দী করে ছেড়ে দিয়েছেন।
এবার এমন এক চিঠিবাহী বোতলের সন্ধান পেলেন আলাস্কার নাগরিক টেইলর ইভানফ। বাড়ি থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ করতে বেরিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই প্লাস্টিকের কর্কে আটকানো এক বোতল নজরে আসে তার। সবুজ রঙের কাচের বোতলে একটি কাগজ রয়েছে তা বাইরে থেকেই দেখেছিলেন তিনি। তাই আগ্রহী হয়ে উদ্ধার করেন বোতলটি।
বহু চেষ্টা তদবির করে, এমনকি দাঁত লাগিয়ে বোতল খোলেন। তখনো ওয়াইনের গন্ধ রয়েছে বোতলটিতে। রুশ ভাষায় লেখা চিঠিটি উদ্ধার করেই তার আর বুঝতে বাকি রইলো না যে অনেক পুরনো এক চিঠির উদ্ধারকর্তা বনে গেলেন তিনি। এরপর সেই চিঠিটির ছবি তুলে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন।
যেখানে তিনি এই চিঠির অনুবাদেরও আহবান জানান। ফেসবুকে পোস্ট হওয়ার সঙ্গেসঙ্গেই ঘটনাটি লুফে নেয় রাশিয়ান সংবাদমাধ্যমগুলো।
চিঠির নিচে প্রেরকের নাম দেখে তারা শনাক্ত করে ঠান্ডা যুদ্ধের সময়কার রাশিয়ান ক্যাপ্টেন বুতসানেনকোকে। আর খুজ নিতেই জানা যায় চিঠিটির প্রেরক ক্যাপ্টেন বুতসানেনকো এখনো জীবিত। যোগাযোগ করা হয় তার সঙ্গে। তিনি হয়তো ভুলেই গিয়েছিলেন এরকম কিছু করেছিলেন তিনি। তাই চিঠি দেখে বললেন, হাতের লেখা দেখে মনে হচ্ছে আমারই লেখা। হ্যাঁ ওটা আমারই! এই যে ইস্ট ইন্ডাস্ট্রি ফিশিং ফ্লিট! (ই-আই-এফএফ)!
আবেগে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। এত বছর ধরে নিজের লেখা একটি চিঠি ভেসেছিলো সমুদ্রে। সেটা উদ্ধার হয়ে আবার তারই হাতে। আবেগাপ্লুত হওয়াটাই স্বভাবিক। ৮৬ বছর বয়েসি ক্যাপ্টেন বুতসানেনকো জানান সুলাক নামের একটি জাহাজের ক্যাপ্টেন থাকাকালীন তিনি এই চিঠিটি লিখে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। চিঠিটিতে আরেকটি জাহাজের ঠিকানাও লেখা ছিলো। তাদেরকে শুভেচ্ছা জানিয়েই লিখেছিলেন চিঠিটি।
চিঠির উদ্ধারকর্তা ইভানফও ভাবছেন তিনিও এমন কিছু করবেন। তিনি বলেন, আমি জানি না উত্তর পাবো কি না। তবে আমি আমার সন্তানদের নিয়ে এমন একটি চিঠি লেখব।