Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাতভর কর্মব্যস্ত মোহাম্মদপুর থানা


৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৯:৩৩

শামীম রিজভী,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মঙ্গলবার দিনগত রাত সাড়ে ১২ টা। ১৪ বছরের এক কিশোরীকে বুঝাতে বুঝাতে থানার ভেতর ঢুকলেন দুই নারী।
– কোথায় গিয়েছিলি তুই?
– তোকে আমরা কোথায় না খুঁজেছি!
– বল… বল… আমরা তোর খেয়াল রাখি না?
– কেন তুই না বলে চলে যাবি?
– তোর জন্য আমাদের চোখের পানি বের হয়ে গেছে!

এভাবেই এই নারী এ কথা বলেন তো অন্য নারী ও কথা। সব কথাই কিশোরীটিকে উদ্দেশ্য করে। আর কিশোরীটি নির্বাক। একবার এর দিকে তাকায় তো আরেক বার অন্য জনের দিকে।
থানায় যখন এসেই গেছে, নাম পরিচয়ও জানা যাবে। কিছুক্ষণে জানা গেল, দুই নারীর মধ্যে একজন নার্গিস আক্তার, অন্যজন তার শ্বাশুড়ি শেফালি বেগম।
নার্গিসের স্বামী কামাল হোসেনও এসেছে পিছনে পিছনে। এরা মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা। ১৪ বছরের কিশোরীটি তাদের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করে।

নার্গিসই বর্ণনা দিলেন ঘটনার। জানালেন, মঙ্গলবার সকালে কাউকে কিছু না বলে মেয়েটি বাসা থেকে চলে যায়। সারাদিন পাওয়া যাচ্ছিলো না, রাতে খোঁজ মিলেছে।

মেয়েটির পরিচিত রিপন নামে একজন তাকে ভাল কাজ দেবে বলে সাথে নিয়ে যায়, এমনটাই বলছিলেন নার্গিস।

তিনি জানান, খুঁজে না পেয়ে প্রথমে প্রতিবেশীদের কাছে তার খবর নেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে ওর বাবাকে খবর দেওয়া হয়। বিকেলে মোহাম্মদপুর থানায় গিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এখন খুঁজে পাওয়ার পর থানায় সে তথ্য জানাতেই মেয়েটিকে নিয়ে হাজির হয়েছেন তারা।

অবশেষে মুখ খুললো মেয়েটিও। সে জানায়, রিপনের সঙ্গে গেলেও কিছুক্ষণ পর থেকে তার ভয় হতে থাকে। তাই রাস্তায় রিপনকে কিছু না বলে সেখান চলে আসে। কিছুক্ষণ পর রাস্তা হারিয়ে ফেলে। পরে পথচারিদের জিজ্ঞেস করতে করতে নাগির্সের বাসায় পৌঁছায়। এখন তাকে নিয়ে সবাই থানায় এসেছেন জিডি তুলে নিতে। সব কাজ শেষ করে রাত একটার দিকে তারা থানা থেকে চলে যান।

বিজ্ঞাপন

মোহাম্মদপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক বলেন, এমন অনেক ধরনের ঘটনা থানায় আসে। আমরা তদন্ত করে দেখি। সমাধান দেই।
থানায় আপনি কেমন সেবা পেলেন, সে মতামত জানানোও সুযোগ রয়েছে এখানে। থানাটিতে নারী সহায়তা কেন্দ্র নামেও একটি শাখা রয়েছে। তবে মধ্যরাতে সে শাখাতে কোন নারী কর্মকর্তা দেখা যায়নি।

তখনও (রাত একটা) থানায় নিজ কর্তব্য পালনে ব্যস্ত সময় পার করছিলেন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন মীর। সেখানে দেখা গেছে, এক সরকারি কর্মকর্তা পরিবারের সদস্যসহ এসেছেন আইনি সহায়তার জন্য। তাদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করলেন ওসি। বাহিরে আরও বেশ কয়েকজনকে আইনি সহায়তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন মধ্যরাত পার করে।

জামাল উদ্দিন মীর সারাবাংলাকে বলেন, সারাদিনই কোন না কোন ঘটনা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটে। সকল ঘটনাকেই গুরুত্ব দিয়ে দেখার চেষ্টা করি। নারী ও শিশুদের আইনী সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।

থানায় নিয়ে আসা যে কোন শিশুর বিনামূল্যে আইনী সহায়তা, নিরাপদ আশ্রয়, খাদ্য, শিক্ষা এবং পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টাই কাজ করছে থানার দায়িত্বরত সদস্যরা।

বিপদগ্রস্ত শিশুর সহায়তার জন্য ১০৯৮ এবং নারী ও শিশুর সহায়তার জন্য ১০৯ এ কল করার সুবিধার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, রাজধানীবাসী এই নম্বরগুলোতে কল করে যে কোন সময় সেবা পেতে পারেন।

সারাবাংলা/এসআর/এমএম

ঢাকার_থানা থানা মোহাম্মদপুর রাত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর