Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গৃহহীন, তাই জায়গা হয়নি আশ্রয়কেন্দ্রেও


১৫ অক্টোবর ২০১৯ ২৩:২০

জানুয়ারি মাসের সরকারি হিসাব অনুযায়ী জাপানে গৃহহীনের সংখ্যা ৪ হাজার ৫৫৫ জন। ৪৭টি প্রধান এলাকার মধ্যে টোকিওতে গৃহহীনের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ১২৬ জন। দ্বিতীয় স্থানে আছে ওসাকা ১ হাজার ৬৪ জন। তৃতীয় স্থানে আছে কানাগাওয়া ৮৯৯ জন।

এর মধ্যেই, জাপানে আঘাত হেনেছে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ টাইফুন হাগিবিস। চলতি সপ্তাহে ২২৫ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া ঝড়ো হাওয়ায় রাজধানী টোকিওসহ আশেপাশের এলাকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অন্তত ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এই টাইফুনে। লাখ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সেনাবাহিনীসহ লক্ষাধিক উদ্ধারকর্মী এই বিপর্যয় মোকাবিলায় কাজ করেছে।

বিজ্ঞাপন

এতকিছুর পরও, জাপানজুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। কারণ, কয়েকজন গৃহহীন ভবঘুরেকে আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আপদকালীন সময়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঘুরতে থাকা গৃহহীন মানুষদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের এমন অমানবিক আচরণের কার্যকারণ নিয়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যাচ্ছে জাপানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতেও।

জাপানের সানইয়া এলাকার ডোয়েল পার্ক। এর আশেপাশের রাস্তাগুলোতে ও নদীর পাড়ে বহুদিন ধরেই গৃহহীন ভবঘুরে শ্রমিকশ্রেণির মানুষ বসবাস করে আসছিলেন। তারা সচারচর অন্যদের সঙ্গে মিশতেন না। কিন্তু এই প্রলয়ংকরী টাইফুন সবাইকে একসঙ্গে নিরাপদ আশ্রয়প্রার্থীর লাইনে দাঁড় করিয়েছিল।

স্থানীয় টেইটো স্কুলে খোলা হয়েছিল আশ্রয়কেন্দ্র। অন্য সবার সঙ্গে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে সেখানে গিয়ে হাজির হয়েছিল ৬৪ বছরের একজন গৃহহীন। আশ্রয়কেন্দ্রে ঢোকার মুখেই তার কাছে ঠিকানা জানতে চাওয়া হয়। তিনি বলেন তার ঠিকানা ছিল হোক্কাইডো দ্বীপে, এখন আর সেই ঠিকানার কিছুই অবশিষ্ট নেই। এই উত্তর শুনে বাঁধ সাধে ওই আশ্রয়কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ। ঠিকানা না থাকার কারণে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, সেই গৃহহীন বৃদ্ধ লোকটি প্রচণ্ড বাতাস আর বৃষ্টির মধ্যে একটিমাত্র ছাতার নিচে দুর্যোগের রাত কাটিয়ে দেন।

মুহূর্তেই এই খবর ছড়িয়ে পড়ে। এই ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাপানিদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি হয়। একপক্ষ বলছে, গৃহহীনদের সঙ্গে এমন অমানবিক আচরণ করা মোটেও উচিত হয়নি। অপরপক্ষ বলছে, যেহেতু ভবঘুরেরা কোনো নাগরিক দায়িত্ব পালন করে না, তাই তাদের সঙ্গে সঠিক ব্যবহারই করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে সংসদে প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে। প্রশ্নের উত্তরে এই ঘটনা কেন ঘটলো সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে চেয়েছেন তিনি।

আশ্রয়কেন্দ্র উদ্ধারকর্মী গৃহহীন জাপান টাইফুন হাগিবিস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর