যুক্তরাষ্ট্রের কর্মক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে
১৫ জানুয়ারি ২০২০ ১৩:১১
যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের কর্মক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় নারীর সংখ্যা বেশি। দেশটির শতকরা ৫০.৪ ভাগ নারী এখন অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর উদ্যোগে ২০১০ সাল থেকে করা এক সমীক্ষায় এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
কর্মক্ষেত্রে নারীদের এগিয়ে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শ্রম অর্থনীতিবিদ জুলিয়া পল্লাক বলেন, ‘আমাদের কর্মক্ষেত্রে নারীরাই বেশি দায়িত্বশীল। নারীদের আওতায় যেসব অফিস কিংবা কারখানা আছে সেগুলো দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে পুরুষ নিয়ন্ত্রিত কর্মক্ষেত্রগুলো কখনও ধীর গতিতে আবার কখনও স্থবির হয়ে আছে’।
দেশটির বিগত বছরগুলোর অর্থনীতির চিত্র তুলে ধরে জুলিয়া পল্লাক জানান, তেল, গ্যাস এবং উৎপাদনখাতে পুরুষ নিয়ন্ত্রিত কারখানাগুলোর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। অন্যদিকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাত মূলত নারীরাই দেখভাল করছে এবং এই খাতগুলো ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। এই দুটি খাত থেকে দেশটির অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইকোনোমিক পলিসি অব ইনস্টিটিউট ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে নারী ও পুরুষ পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের অবস্থান সম্পর্কিত একটি গবেষণা পরিচালনা করে। ফলাফলে দেখা গেছে, বিগত অর্থবছরে ‘নির্মাণ ও উৎপাদন’ খাতে পুরুষদের অংশগ্রহণ এবং ‘স্বাস্থ্য ও শিক্ষা’ খাতে নারীদের অংশগ্রহণ সমান ছিল। অর্থাৎ এই দুটি খাতে নারী, পুরুষ কর্মীর সংখ্যা ছিল শতকরা ৭৭ ভাগ। বছর শেষে নির্মাণ ও উৎপাদন খাতে যুক্ত হয়েছে ৩ লক্ষ ৫৬ হাজার কর্মী। আর স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে যুক্ত কর্মীর সংখ্যা ৬ লক্ষ ৩ হাজার।
জুলিয়া পল্লাক বলেন, কর্মক্ষেত্রে সৃজনশীল মানুষকেই নিতে চায় সবাই। যুক্তরাষ্ট্রের নারীরা পুরুষদের তুলনায় সৃজনশীল হওয়ায় কর্মক্ষেত্রে তারাই প্রাধান্য পাচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, অনেক নারী মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটানোর পর আবার যখন কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করেন, তখন আগের মতোই নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করেন। ফলে কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে একাত্ম হতে সময় লাগেনা।
চাকরির বাজারে নারী, পুরুষের অবস্থান সংক্রান্ত সম্প্রতি পিউ রিসার্চ সেন্টারের প্রকাশ করা এক রিপোর্টের বরাত দিয়ে জুলিয়া পল্লাক বলেন, ‘এই দেশের বেশিরভাগ পুরুষ বাসায় থাকতেই পছন্দ করে।’
পিউ রিসার্চ সেন্টারের গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, ১৯৮৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বেকার পুরুষদের সংখ্যা ছিল শতকরা ৪ ভাগ। ২০১৬ তে এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে শতকরা ৭ ভাগ। অন্যদিকে বেকার নারীদের সংখ্যায় কোন পরিবর্তন আসেনি। তখন যা ছিল, ২০১৬ তেও একই আছে।