এবার ভারতের সামরিক বাহিনীর নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে নারীরা
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৪:৩১
ভারতের সামরিক বাহিনীর নারীরা এতদিন মাঠপর্যায়েই কাজ করতেন। তবে পরিস্থিতি এবার পালটে গেল। এখন থেকে দেশটির সামরিক বাহিনীর নীতি-নির্ধারণী পর্যায়েও দেখা যাবে নারীদের। পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এবার নারীরাও থাকছেন সামরিক বাহিনীর সকল পর্যায়ে কমান্ডিং রোল বা নেতৃত্বদানকারী ভূমিকায়।
গত মাসে (জানুয়ারি) ভারতের সর্বোচ্চ আদালত (সুপ্রিম কোর্ট) এমনই ঘোষণা দিয়েছেন।
যদিও সামরিক বাহিনীর কয়েকজন পুরুষ সেনা কর্মকর্তা আদালতের নির্দেশনার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে, তবুও ঘোষিত সিদ্ধান্ত আপাতত পরিবর্তন করছেন না দেশটির আদালত।
অন্যদিকে, এই ঘোষণাকে অনেকেই ইতিবাচকভাবে দেখছেন। তারা মনে করছেন, নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করা নারীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তাছাড়া নারী সম্পর্কে সমাজে যেসব ট্যাবু আছে সেগুলোও ধীরে ধীরে ভাঙবে। নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আসবে।
ভারতের সামরিক বাহিনীতে নারী কর্মকর্তাদের প্রথম নিয়োগ দেওয়া হয় ১৯৯২ সালে। তখন থেকেই মাঠপর্যায়ে কাজ করতেন নারীরা। যেমন নৌবাহিনীতে নারীরা এতদিন পাইলট হিসেবে ছিলেন। তবে নতুন নিয়ম অনুযায়ী, নারীদের এখন নাবিক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে।
দেশটির সেনাবাহিনীতে নারীদের কাজের ধরন শুরু থেকেই কিছুটা আলাদা। সেনাবাহিনীতে নারীরা বিভিন্ন পদে কাজ করার সুযোগ পান। চিকিৎসক, প্রকৌশলী, প্রশাসন, নার্স, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পদে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন তারা। অবশ্য নারীদের এই সাফল্যের স্বীকৃতিও মিলছে। ২০ বছরের বেশি সময় ধরে যে নারীরা সেনাবাহিনীতে কাজ করছেন, দক্ষতা ও পদের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবছর তাদের কমিশন দেওয়া হয়।
দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের গবেষক আকাঙক্ষা খুলার বলেন, ‘নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ নারীদের জন্য মাইলফলক সৃষ্টি করেছে। নারী-পুরুষ কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈষম্য কমবে। জেন্ডার সমতা তৈরি হবে।’
২০১৮ তে অবসর নেওয়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক নারী কর্মকর্তা বলেন, ‘নারীদের পক্ষে সবসময় মাঠে কাজ করা সম্ভব হয় না। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় এই কাজ করা একেবারেই অসম্ভব। নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করলে অন্তত এই সময় নারীরা নিশ্চিন্তে ও নিরাপদে কাজ করতে পারবেন।’