Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কেনো, কবে, কিভাবে শুরু লিপ ইয়ার


২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১২:৩১

২০২০ সালে যে অতিরিক্ত দিনটি আমরা পাচ্ছি… সেটি আজ পার করছি। এটি লিপ ইয়ার। সাধারণ হিসেবে আমরা জানি প্রতি চার বছর পর পর একেকটা লিপ ইয়ার আসে। আর সে হিসাবেই ২০২০ লিপ ইয়ার। এর আগে ২০১৬ সালটি লিপ ইয়ার ছিলো। ২০২৪ সালে আরেকটি আসবে।

কিন্তু কেনো এই লিপ ইয়ার?
আমাদের বার্ষিক ক্যালেন্ডারগুলো ৩৬৫ দিনের। তার একটাই কারণ প্রতি ৩৬৫ দিনে সৌরজগতে পৃথিবী নামক গ্রহনি সূর্যের চারিদিকে একবার ঘুরে আসে। আসলে কী তাই? সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম হিসাব বলছে মূলত ৩৬৫.২৪২১৯ দিনে একবার পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘোরে। এটাই মূলত একটি সৌরবর্ষ। সে হিসাবে আমাদের ঘরে ঘরে যে বার্ষিক ক্যালেন্ডার দেখতে পাই তাতে প্রতি বছরই এই ০.২৪২১৯ দিনের হিসাবটির উল্লেখ থাকে না। তাতে প্রতি চারবছর পর পুরো একটি দিন পিছিয়ে পড়ে। সে কারণেই চতূর্থ বছরে এসে একটি দিন ক্যালেন্ডারে যোগ করে নিয়ে সেই ঘাটতি পুষিয়ে দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

কবে থেকে কিভাবে এই গণনা শুরু?
সেটি ছিলো খ্রিষ্টের জন্মের ৪৫ বছর আগের কথা। রোম সম্ম্রাট জুলিয়াস সিজারই প্রথম প্রতি চার বছরে এক দিন ক্যালেন্ডারে যোগ করার উদ্যোগটি নেন। এটি করে তিনি যে ক্যালেন্ডারের প্রবর্তন করলেন, সেটির নামও দেওয়া হয় জুলিয়ান ক্যালেন্ডার। সেটিও শতভাগ ঠিক কিছু হলো না, কিছুটা খামতি রয়ে গেলো। কারণ পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘুরে আসতে সময় নেয় ঠিক ৩৬৫.২৪২ দিন। ৩৬৫.২৫ দিন নয়। ফলে প্রতি বছর সামন্য ঘাটতি থেকেই যায়। ১৫৮২ সাল নাগাদ এসে বছরে বছরে থেকে যাওয়া সেই সামান্য ঘাটতি মিলে ১০ দিন দাঁড়ায়। সে বছর পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি প্রবর্তন করলেন গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। সেখানেই তিনি এই লিপ ইয়ার শব্দটি প্রথম আনলেন। আর প্রতি চার বছর পর ফেব্রুয়ারি মাসে ২৯ তারিখটি ক্যালেন্ডারে যোগ করলেন। এছাড়াও বছরে সামান্য যে ঘাটতি থেকে যায় সে ব্যাপারেও একটি রীতি বাতলে দিলেন তিনি এই গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে।

বিজ্ঞাপন

সে অনুযায়ী প্রতি চার বছর অন্তর যে বছরটি ৪ সংখ্যা দিয়ে বিভাজ্য সেটি লিপ ইয়ার হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু শতবর্ষগুলোর মধ্যে যেগুলো ৪০০ দিয়ে বিভাজ্য নয়, সেগুলো গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার লিপ ইয়ার বলছে না। যেমন ৮০০, ১২০০, ১৬০০, ২০০০ লিপইয়ার। কিন্তু ১৭০০, ১৯০০ সাল লিপ ইয়ার ছিলো না। কারণ ওই বছরগুলো ৪০০ দিয়ে বিভাজ্য নয়।

এতে করে ঘাটতি সময়টুকুও পুরোপুরি পূরণ হয়ে যায়। হ্যাঁ এটা সত্য একেবারে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মিলে যায় না। এর পরেও গ্রেগরিয়ান বছরের চেয়ে একেকটি সৌরবর্য ২৬ সেকেন্ড কম। কিন্তু সে সময়টুকু কালের গর্ভেই যায় হারিয়ে, যার হিসাব কেউ কখনো রাখে না।

এবার জানিয়ে রাখি লিপ ইয়ার বিষয়ক কিছু মজার তথ্য
এক. গোটা বিশ্বে এখন ৪০ লাখ মানুষ রয়েছে যারা লিপ ইয়ার বেবি, অর্থাৎ তাদের জন্ম হয়েছে ২৯ ফেব্রুয়ারি
দুই. এই মানুষগুলোকে লিপারস বা লিপিংস বলা হয়।
তিন. বিশ্বের প্রতি ১হাজার ৪৬১ জনের মধ্যে ১ জনের এই লিপ ইয়ার বেবি হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
চার. বেশ কয়েকজন বিখ্যাত ব্যক্তিরও জন্ম হয়েছে এই ২৯ ফেব্রুয়ারি
পাঁচ. তবে আগেই বলেছি, ১০০ দিয়ে বা চার দিয়ে বিভাজ্য সব বছরই লিপইয়ার হবে না। যেমন ১৭০০ ও ১৯০০।
ছয়. ২০২০ লিপ ইয়ারটি শুরু হয়েছে ১ জানুয়ারি বুধবার, যা শেষ হবে ৩১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার।
সাত. ২৮, ২৯ এর পর ১ সংখ্যাটি কেবল লিপইয়ারেই আসে। বিষয়টি তুলে ধরে দিনটিতে ডুডল করেছে গুগল।

সারাবাংলা/এমএম

২০২০ টপ নিউজ লিপ ইয়ার

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর