Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাকিস্তানের সাংবাদিকতার পথিকৃৎ সিলেটের আলতাফ


১৫ জুলাই ২০২০ ১৩:০০

একজন বাঙালির হাত ধরে পাকিস্তানে আধুনিক সাংবাদিকতার বিকাশ হয়েছিল। শুধু তাই নয়, তার হাতেই শুরু হয়েছিল পাকিস্তানে সাংবাদিকতা বিষয়ের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাদান। তিনি হলেন সিলেটের আলতাফ হোসাইন। পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইংরেজি দৈনিক দ্য ডনের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের সম্পাদক ছিলেন। তার হাতেই দ্য ডন জনপ্রিয়তার শীর্ষে যায়।

আলতাফ হোসাইন ১৯০০ সালের ২৬ জানুয়ারি সিলেটের মৌলভীবাজারে (তখন নাম ছিল দক্ষিণ সিলেট) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সিলেটের এমসি কলেজ থেকে আইএ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে বিএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৩ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

লেখাপড়া শেষ করে কলকাতা মিউনিসিপালটিতে চাকরি নেন আলতাফ। ১৯৪২ সালে তিনি মিউনিসিপালটির ডাইরেক্টর অফ ইনফরম্যাশন পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৪৩ সালে তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান। সেসময় তিনি বিখ্যাত স্টেটম্যান পত্রিকায় কলাম লিখতেন। ভারতের মুসলমানদের অধিকার ও পাকিস্তান আন্দোলন নিয়ে তিনি “Through the Muslim Eyes” নামে একটি পাক্ষিক কলাম লিখতেন। অবশ্য নিজের নামে নয়, ছদ্মনামে। আইন-উল-মুলুক নামে।

স্টেটম্যানে তার প্রকাশিত লেখাগুলো মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ মনোযোগ দিয়ে পড়তেন। ১৯৪২ সালে জিন্নাহ মুসলিমলীগের মুখপত্র হিসেবে দ্য ডন নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। ১৯৪৪ সালে পত্রিকাটির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক পথান যোসেফ সরকারি চাকরি নিয়ে চলে যান। এ শূন্যতা পূরণের জন্য জিন্নাহ, আলতাকে তার বোম্বের বাসাতে ডেকে পাঠান। তিনি দ্য ডন পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব নিতে রাজি হন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর পত্রিকাটির সদর দফতর দিল্লি থেকে করাচিতে স্থানান্তরিত হয়। অবশ্য এর আগেই পত্রিকাটির মালিকানার একটা বড় অংশ ব্যবসায়ী হাজী আব্দুল্লাহ হারুন কিনে নেন।

বিজ্ঞাপন

জিন্নাহর মৃত্যুর পর তার বোন ফাতেমার সঙ্গে হারুনের মালিকানার দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ কারণে ১৯৫১ সালে হারুণ পত্রিকাটি বন্ধ করে নতুন পত্রিকা প্রকাশ করেন। কিন্তু জনগণের দাবির মুখে কিছুদিনের মধ্যে আবার আলতাফের সম্পাদনায় দ্য ডন প্রকাশ করতে বাধ্য হন। একটানা ২১ বছর পত্রিকাটির সম্পাদনা করেন আলতাফ। তার হাত ধরে পাকিস্তান আধুনিক সাংবাদিকতার জগতে প্রবেশ করে বলা হয়। করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগ খোলা হলে সেখানে তিনি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।

পাকিস্তান সৃষ্টির আন্দোলনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তিনি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ’র অন্যতম প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন। পাকিস্তান সৃষ্টির জনমত গড়ে তুলতে দ্য ডন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। সেসময়ের স্মৃতির আলোকে লেখা তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘ফ্রম মিউটিনি টু মাউন্টব্যাটেন’।

১৯৬৫ সালে তিনি আইয়ুব খানের মন্ত্রিপরিষদে শিল্পমন্ত্রী হিসেবে যোগ দান করেন। তবে তার এই পদস্খলন পাকিস্তানের বুদ্ধিজীবীরা ভালোভাবে গ্রহণ করেননি। ১৯৬৮ সালের ২৫ মে তিনি মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুর মাত্র ১০ দিন আগে তিনি জেনারেল আইয়ুব খানের মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন।

সূত্র: উইকিপেডিয়া, pakistan.mom-rsf.org, tribune.com.pk

আলতাফ হোসাইন দ্য ডনের সম্পাদক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ সিলেটের আলতাফ হোসাইন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

শরৎ বাংলাদেশের কোমল স্নিগ্ধ এক ঋতু
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৪

সম্পর্কিত খবর