নারীদের জন্য মদের দোকান
১০ মার্চ ২০১৮ ১১:২৪
সারাবাংলা ডেস্ক
ঢাকা : কাঁচের দেয়ালের ওপাশে রুচিশীল সাজসজ্জা, আরামদায়ক সোফা আর এপাশে গোলাপি রঙে লেখা ‘এক্সক্লুসিভ সেকশন অনলি ফর উইমেন’ অর্থাৎ শুধু নারীদের জন্য নির্দিষ্ট।
এই ‘এক্সক্লুসিভ’ বা বিশেষ অংশটি আর কিছুই নয়, শুধুমাত্র নারী গ্রাহকদের জন্য নির্দিষ্ট লিকুয়ার শপ বা মদের দোকান।
দিল্লিতে মদের দোকানগুলোকে সাধারণত ঠেকা বলা হয়। দিল্লির ময়ূর বিহার এলকায় অবস্থিত স্টার সিটি মলে বেশকিছু মদের দোকানের পাশাপাশি এ দোকানটি একটি ভিন্ন ধাঁচের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
এ দোকানটিকে দৃষ্টান্ত বলা হচ্ছে কারণ, এই দিল্লিই ২০১২ তে ভয়াবহ ‘নির্ভয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড’ দেখে হতবাক হয়েছিল। ভারতের রাজধানীতে নারীরা কতটা নিরাপদ এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল দেশে-বিদেশে। সেই দিল্লিতেই শুধুমাত্র নারীদের জন্য মদের দোকান খোলা তাই বিশেষ ঘটনা।
এ বিশেষ মদের দোকান শুধুমাত্র একটি মদের দোকানই নয়। এর সঙ্গে জড়িত আজকের যুগে একজন নারী কতটা স্বাবলম্বী আর স্বাধীন সেই প্রশ্নটি। চালু হওয়ার পর থেকেই দোকানটি নারী ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে থাকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ২৯ বছর বয়সী একজন মিডিয়াকর্মী জানান, তার বন্ধুর কাছে খবর পেয়ে এ দোকানে এসেছিলেন।
দোকানটির ব্যবস্থাপক উমেশ সাক্সেনা জানান, দোকানের মূল কনসেপ্ট জানে না তাই অনেক পুরুষ এখানে চলে আসে আবার অনেকে তাদের নারী সঙ্গীদের নিয়েও এখানে আসেন।
দোকানটির নারী-বান্ধব ব্যাপারটি তুলে ধরার জন্য এখানে নিরাপত্তাকর্মী, বিক্রয়কর্মী যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তারা সবাই নারী।
এমনই একজন বিক্রয়কর্মী ২৮ বছর বয়স্ক বীণা শর্মা জানান, এখানকার ক্রেতারা নারী, তাই তিনি বেশ স্বস্তিবোধ করেন। বেশিরভাগ ক্রেতারা ভদকা, ওয়াইন আর শ্যাম্পেন কেনেন বলে জানান তিনি।
সবকিছুর মাঝে ইতিবাচক ব্যাপার হল নারীরা এখানে এসে সময় নিয়ে তাদের ইচ্ছামত পণ্য কিনতে পারেন। অন্য কোনো সাধারণ মদের দোকানে গেলে পুরুষদের অস্বস্তিকর দৃষ্টি এড়াতে তাড়াহুড়া করে কিনে চলে আসতে হয়।
বিকাশ সাক্সেনা বলেন, নারী ক্রেতাদের জন্য এমন পরিবেশ তারা তৈরি করেছেন যে তারা এসে নিরাপদে আর নিজেদের ইচ্ছামত সময় নিয়ে পণ্য বাছাই করতে পারেন।
দিনে এখন দশ থেকে পনেরোটা কেনাবেচা হলেও দোকান মালিক রোহিত অরোরা মনে করেন, চার থেকে ছয়মাসের মধ্যে তাদের দোকানের ব্যাপারে লোকজন আরও জানবে আর ক্রেতাও বাড়বে।
মদ খাওয়া ভালো না খারাপ সে নিয়ে বিতর্ক চলতে পারে আর তা অন্য কোন আলোচনার বিষয় হতে পারে। কিন্তু দিল্লির এই নারীদের জন্য মদের দোকান আমাদের মনে করায় যেকোন প্রাপ্তবয়স্ক স্বাধীন আর স্বাবলম্বী নারী তার ইচ্ছামত জীবন কাটাতে পারে।
সূত্র : দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
সারাবাংলা/আরএফ/একে