তারুণ্যের ভাবনায় বঙ্গবন্ধু
১৪ আগস্ট ২০২২ ১৮:১৩
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষার্থীদের কাছে এক অনুপ্রেরণার নাম। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সৃষ্টির সাথে অবিভাজ্যভাবে জড়িয়ে আছে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতার নামটি। দীর্ঘ নয় মাস পর যুদ্ধ জয় লাভ করেছে এদেশের সোনার সন্তানেরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নকে সত্যি করেছে। তবে বিদ্রূপের বিষয়টি হলো পাকিস্তানিরা যা করতে পারেনি, কিছু দুর্নীতিবাজ সামরিক কর্মকর্তা তা করেছিলেন-তারা স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছর পরে ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে তার বেশিরভাগ বর্ধিত পরিবারকে হত্যা করেছিলেন।
তবে শেষ হয়ে যায়নি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। সেদিন তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা এ সময় বিদেশে থাকায় বেঁচে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে নিয়ে শোকের মাসে দেশে স্নাতকে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ভাবনা ও মতামত তুলে ধরেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ক্যাম্পাস সাংবাদিক ও জবি প্রেসক্লাবের দপ্তর, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ।
‘বঙ্গবন্ধুর বিদায় বাঙালির অপূরণীয় ক্ষতি’
—শিরিন সুলতানা, শিক্ষার্থী, ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ, গাজীপুর
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’, এই একটি নামের সাথেই জড়িয়ে আছে বাঙালির শত বছরের আবেগ। ১৯৭৫ সালের ভয়াল সেই ১৫ আগস্ট, বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির বাসভবনে সপরিবারে খুন হওয়া এই নেতার মৃত্য শুধুই অপূরণীয় ক্ষতিই ছিলনা, ছিল সদ্য স্বাধীনতা অর্জিত এক জাতির শত স্বপ্নের অবসান, ছিল অগ্রমামী জনতার দেশকে এগিয়ে নেওয়ার দৃঢ়প্রত্যয়ের পতন। ইতিহাসের সেই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড, যার মৃত্যুতে বাঙালি হারিয়েছে তার অভিভাবক, সেই কালো অধ্যায় হোক জাতির এগিয়ে যাওয়ার মূলমন্ত্র। ঘাতকরা জানুক, তাদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে সেদিন বুলেটের আঘাতে ধানমন্ডির ৩২ নং বাড়িটি স্তব্ধ হয়ে গেলেও, স্তব্ধ হয়নি বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া ১৬ কোটি বাঙালির হৃদয়ে সেই স্বাধীনতার চেতনা।
শোকাবহ সেই আগস্টে, বাঙালি জাতির এই শোকলগ্নে এসে, বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠা ও মুক্তি সংগ্রামের অন্যতম আহ্বায়ক, বঙ্গবন্ধুর সেই দ্ব্যর্থহীন বজ্রকণ্ঠ নতুন করে ধ্বণিত হোক কোটি প্রাণে। বাঙালির সেই কালো অধ্যায়কে শ্রদ্ধাবোধে স্মরণ করে দেশের তরুণ প্রজন্ম উজ্জীবিত হোক দেশপ্রেমে। তাদের নেতৃত্বে সূচিত হোক নতুন ভোর, অন্তরে জাগ্রত হোক ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও দুর্নীতিমুক্ত বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণের দৃঢ় প্রত্যয়।
‘বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে হোক দেশপ্রেমের শিক্ষা’
—জান্নাতুল ফেরদৌস জীম, শিক্ষার্থী, কবি নজরুল সরকারি কলেজ
স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের ইতিহাসে যার নামটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো দীপ্যমান তিনি হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার দূরদর্শী, বিচক্ষণ ও সঠিক নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু নিঃসন্দেহে একজন সেরা দেশপ্রেমিক। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন থেকে তরুণ প্রজন্ম অসীম সাহসিকতায় পথ পাড়ি দিতে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে, মানবতার সেবা করতে, মাথা নত না করে ন্যায়ের পথে চলতে আর আত্মবিশ্বাসী ও আত্মপ্রত্যয়ী হতে শিখে। তরুণ প্রজন্মের প্রতি বঙ্গবন্ধুর চোখ ছিল সবসময় কোমল। কারণ তিনি জানতেন তরুণরাই তাদের সৃষ্টিশীল মেধা ও প্রচেষ্টাকে কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম।
আমি চোখ বন্ধ করে বঙ্গবন্ধুর নাম নিলেই মনের অকপটে ভেসে ওঠে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্রের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর এক টুকরো হাসি। কানে যেন শুনতে পাই বঙ্গবন্ধুর সেই বজ্রধ্বনি “এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” বঙ্গবন্ধু তরুণদের কাছে চিরকালই সততা, ন্যায়, কল্যাণ ও আদর্শের প্রতীক। যিনি নিজের স্বার্থকে কখনোই প্রাধান্য দেননি, জাতির কল্যাণের কথা ভেবেছেন সবসময়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও বিশ্বাস মনের মধ্যে আঁকড়ে ধরে রাখলে তরুণ প্রজন্ম কখনোই বিপথে যাবে না- এমনটাই প্রত্যাশা।
‘বঙ্গবন্ধু আমাদেরই আছে, আমাদেরই থাকবে’
—মোছা. জান্নাতী বেগম, শিক্ষার্থী, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল
মুজিব নামের তরীটি বিপুল বিস্তার ও ত্যাগের সমুদ্রে ভাসমান ছিল, সে তরীর মানুষ কেবল বাংলার মানুষ। সে তরী স্রোতের বিপরীতে হলেও চালিয়ে নিয়েছেন, বিনির্মাণ করেছেন স্বাধীন রাষ্ট্রের। ১৫ আগস্ট সেই ভয়াল কালরাত্রে বঙ্গুবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন, রাজনৈতিক ঘাত-প্রতিঘাত, বাঙালির সংগ্রাম-সংঘাত, ইতিহাসের নানা বাঁকবদল প্রভৃতি বিষয়ের আবদানে হয়ে উঠেছেন একজন আদর্শ বাঙালি ও মহান নেতা।
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী কয়েকজনের ফাঁসি হয়েছে। কয়েকজন বিদেশে পালিয়ে আছে। তাদেরও অবিলম্বে ফিরিয়ে শাস্তি কার্যকর করতে হবে। সেই ভয়াল রাত্রে আমরা বঙ্গুবন্ধুকে হারালেও তার সততা, দেশপ্রেম, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, সাহসী পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে আমরা খুঁজে পাবো তাঁর স্বপ্নের বাংলাদেশকে। জাতির পিতাকে হারানোর সেই দুঃসহ স্মৃতি আমাদের মনে যে বেদনার সৃষ্টি করে, আমরা সেটিকে অনুপ্রেরণা হিসেবে উপলব্ধি করি। তিনি বেঁচে আছেন এবং চিরকাল থাকবেন।
‘তরুণ মনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রতিফলিত হোক’
—ফারহানা ইয়াসমিন, শিক্ষার্থী, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল
স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের ইতিহাসে যার নামটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো দীপ্যমান, তিনি হলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার আদর্শ ও চিন্তাভাবনা তরুণ প্রজন্মের জন্য এক অনুপ্রেরণার উৎস। তার দূরদর্শী, বিচক্ষণ ও সঠিক নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু নিঃসন্দেহে একজন সেরা দেশপ্রেমিক। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন থেকে তরুণ প্রজন্ম অসীম সাহসিকতায় পথ পাড়ি দিতে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে, মানবতার সেবা করতে, মাথা নত না করে ন্যায়ের পথে চলতে আর আত্মবিশ্বাসী ও আত্মপ্রত্যয়ী হতে শিখে। বঙ্গবন্ধুর পথচলা তরুণদের অসাম্প্রদায়িকতা ও দুর্নীতিমুক্ত মানুষ হিসেবে নিজেদের গড়তে তুলতে উৎসাহিত করে। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে হোক দেশপ্রেমের শিক্ষা।
তরুণ প্রজন্মকেই শপথ নিতে হবে এই মহান নেতার নীতি ও আদর্শ ধারণ করে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার। তরুণ প্রজন্মের প্রতি বঙ্গবন্ধুর চোখ ছিল সবসময় কোমল। কারণ তিনি জানতেন তরুণরাই তাদের সৃষ্টিশীল মেধা ও প্রচেষ্টাকে কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম। এজন্য স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আজও তারুণ্যের কাছে বঙ্গবন্ধু মানে শুধুমাত্র একটি নাম না, বঙ্গবন্ধু মানে এক আত্নবিশ্বাসের ছোঁয়া, গৌরবের উষ্ণতা, ভালোবাসা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও বিশ্বাস মনের মধ্যে আঁকড়ে ধরে রাখলে তরুণ প্রজন্ম কখনোই বিপথে যাবে না- এমনটাই প্রত্যাশা। স্বাধীন বাংলায় তরুণ সমাজের নিকট অমলীন থাকুক বঙ্গবন্ধুর অস্তিত্ব।
‘বাংলার বুকে অটুট থাকুক বঙ্গবন্ধুর নিঃশ্বাস’
—আনতাজ হেনা আখি, শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জন করা আজকের স্বাধীন বাংলা পৃথিবীর বুকে সুপরিচিত এক টুকরো লাল-সবুজের ঝলমলে আলোক রশ্মি। যতই ইতিহাসের গন্ডি থেকে মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাগুলো পড়ি ততই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি এক সংজ্ঞাহীন ভালোবাসার জন্ম হতে লাগে, তার সম্পর্কে জানার আগ্রহ এবং ঔৎসুক্যও ক্রমশ বেড়ে চলে। একটি মানুষ্যরুপী নবজাতকের জন্ম হওয়ার পর পরই বাবা-মায়ের শুরু হয়ে যায় সন্তানকে লালন পালন করে মানুষের মতো করে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা।
কেউ চায় তাদের সন্তান ডাক্তার হোক, জাজ হোক, ব্যারিস্টার হোক অথবা ইঞ্জনিয়ার হোক। একমাত্র এই পেশা গুলোই তাদের সন্তানকে মানুষের মতো করে গড়ে উঠতে সাহায্য করে। কিন্তু, শেখ লুৎফুর রহমান ও সায়েরা বেগমের মতো খুব কম পিতামাতাই চান তাদের সন্তান বঙ্গবন্ধুর মতো দেশপ্রেমিক হয়ে সমাজের বুকে মানুষ হয়ে উঠুক। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও এই বিষয়টা সত্যি খুব বেদনা দায়ক। বঙ্গবন্ধুর ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে সকল পিতামাতার সদায় দৃষ্টি কামনা করছি, সন্তানকে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ কিনে দিয়ে অনলাইন জগতে আসক্ত না করে বরং তাদেরকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে মানুষ করে তুলুন। তাবেই বঙ্গবন্ধুর সতেজ নিঃশ্বাস বাংলার বুকে খুঁজে পাওয়া যাবে।
‘বাঙালির চিন্তা জগতে সদা জাগ্রত বঙ্গবন্ধু’
—ফারজানা ইয়াসমিন জীবন, শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
বাঙালি, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শব্দ তিনটি একই সূত্রে গাঁথা। বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠেই মানুষের মনে স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল। বংশীবাদক বঙ্গবন্ধু হারিয়ে গেছে ঠিকই কিন্তু সঞ্জাবনী বাশিঁর সে সুর তা সেজেছে সুনির্ভীক। এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ যেমন গুরুত্ব পেয়েছে, তেমনি বাঙালির চিন্তার জগতে সদা জাগ্রত রয়েছে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান।
বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে অর্জন খুব একটা কম নয়। হয়তো অর্জন আরও বেশি হতে পারত। তবে যা হয়েছে তা খুব সামান্যও নয়, এককথায় অসামান্য। তিনি বেঁচে থাকলে হয়তো দেশটা আরো এগিয়ে যেতো। তার জীবনের প্রতিটি অধ্যায় থেকে আমাদের শেখার আছে অনেক। তিনিই আমদের অনুপ্রেরণার বাতিঘর। তার সততা, দেশপ্রেম, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, সাহসী পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে আমাদের তরুণরা খুঁজে নেক আগামীর বাংলাদেশকে। বর্তমান বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে সম্মানজনক দেশ ও রাষ্ট্র হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বাঙালি জাতি এবং একাত্ম দেশপ্রেমীদের অঙ্গীকার হোক একটাই- মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা।
‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে তারা হত্যা করতে পারেনি’
—আজাহার ইসলাম, শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বলা কালজয়ী নেতাটি বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সরাসরি চোখে না দেখলেও বঙ্গবন্ধু নামটি শুনলেই চোখে ভেসে ওঠে এক আঙুল উঁচিয়ে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণটি। বঙ্গবন্ধু শুধু একটি নাম নয়, পুরো জাতির অনুপ্রেরণা। যার হাত ধরে এসেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্য। আমরা পেয়েছি লাল-সবুজ পতাকা।
পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর দমন আর নিপীড়নের কাছে হার মানেন নি শেখ মুজিব। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সমানতালে কাজ করেছেন তিনি। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির উন্নয়ন ও অগ্রগতি শুরু হয়েছিল। সেই অগ্রগতিতে থামিয়ে দিতে চেয়েছিল কিছু বিপদগামী মানুষ। হাতিয়ে নিতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। হত্যা করতে চেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করতে পারলেও স্বপ্নগুলোকে হত্যা করতে পারেনি। বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা কালজয়ী এই নেতা সকলের হৃদয়ে, মননে ও মগজে জায়গা করে নিয়েছে।
‘বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকুক প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে’
—যোবায়ের ইবনে আলী, শিক্ষার্থী, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর
‘বঙ্গবন্ধু’ যে নামটির সাথে মিশে আছে অবর্ণনীয় ত্যাগ, সাধনা, সংগ্রাম, আর কষ্টক্লেশে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা। যে মানুষটি শিল্পীর মতো নিজের স্বপ্নের ক্যানভাসে ফুটিয়ে ছিলেন একটি স্বপ্নের সোনার বাংলা। সেই স্বপ্নের সোনার বাংলাকে বাস্তবে রুপ দেয়ার আগেই প্রেতাত্মারা বাংলার বুক চেপেঁ ধরেছিলো এই আগস্টেই, মুছে দিতে চেয়েছিল এই বাংলার মানচিত্র কিন্তু ওরা জানে না বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। যিনি ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সদা সোচ্চার। তাছাড়া ও নিপীড়িত গরিব, দুঃখী এবং মেহনতি বাংলার মানুষের কাছে ছিলেন তিনি হ্যামিলিওনের বাঁশিওয়ালা। তার জীবনের প্রতিটি অধ্যায় থেকে আমাদের শেখার আছে অনেক। তিনিই আমদের অনুপ্রেরণার বাতিঘর।
বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন, রাজনৈতিক ঘাত-প্রতিঘাত, বাঙালির সংগ্রাম-সংঘাত, ইতিহাসের নানা বাঁকবদল প্রভৃতি বিষয়ের আবদানে হয়ে উঠেছেন একজন আদর্শ বাঙালি ও মহান নেতা। যে তারুণ্য নিয়ে আমাদের আশার অন্ত নেই, সেই তারুণ্যে মিশে আছে ‘মুজিব’ নামটি। তরুণ হৃদয়ে ভালোবাসার প্রথম অনুসঙ্গ হোক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার সততা, দেশপ্রেম, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, সাহসী পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে আমাদের তরুণরা খুঁজে নেক আগামীর বাংলাদেশকে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চিন্তাচেতনা ছড়িয়ে পড়ুক এই বাংলায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে।
‘তারুণ্যের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা’
—আবু সুফিয়ান সরকার শুভ, শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একে অপরের পরিপূরক। তরুণ সমাজের কাছে শেখ মুজিবুর রহমান এক অনুপ্রেরণার নাম। তিনি এই তরুণ সমাজের কাছে একাধারে জীবন সংগ্রামের, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ও আদর্শের প্রতীক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কারিগর, উদার ব্যক্তিত্ব এবং একজন সফল রাজনীতিবিদ। বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠেই মানুষের মনে স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল। পরবর্তীতে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি।
১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলনের সময় থেকেই তিনি তরুণদের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি প্রায় বক্তব্যেই বলতেন, একটি দেশের সমস্যা এবং সম্ভাবনা দুটিই তরুণ সমাজের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। ছাত্রজীবন থেকে দেশ ও জাতির স্বার্থে সংগ্রাম করতে গিয়ে বারবার তিনি কারাভোগ করেছেন। তারপরও বঙ্গবন্ধুকে কেউ থামিয়ে রাখতে পারেননি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দেশের জন্য লড়াই করেছেন। তরুণরাই পারে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালিত করে এই বাংলাকে “বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা” গড়তে।
‘স্বাধীনতা, আদর্শ ও চেতনায় বঙ্গবন্ধু’
—বিথী রানী মন্ডল, শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
যে নামটিকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ কে কল্পনা করা যায় না তা হলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শত্রুমুক্ত স্বাধীন দেশে জাতির পিতার শত্রু হয়ে উঠলো নিজ ভূমির কিছু কুলাঙ্গার সন্তান। বাঙ্গালীর সোনালী ইতিহাসে ১৯৭৫ সালের ১৫-ই আগস্ট স্ব পরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যা যেন এক কলঙ্কিত অধ্যায়। বাঙ্গালী জাতির এ ক্ষতি কখনও পূরণ সম্ভব নয়। যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে মাত্র কয়েক বছরে যে অবস্থানে নিয়ে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু তা ছিলো স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রথম ধাপ। ঘাতকদের ভয়াল থাবায় অপূরনীয় রয়ে গেল জাতির পিতার অনেক স্বপ্ন।
স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক দুরদর্শিতা, অন্যায়ের সাথে আপোষহীন মনোভাব, বৈষম্যমুক্ত একটি স্বাধীন দেশের স্বপ্নের ফসল হচ্ছে আমাদের আজকের বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার স্বপ্ন ছিল একটি শোষণহীন, সাম্য, মানবিক মর্যাদাসম্পন্ন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার, যে রাষ্ট্রের কোনো মানুষ না খেয়ে থাকবে না, বেকারত্বের সমস্যা থাকবে না। তার এ স্বপ্ন পূর্ণতা পাক অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে, বেকারত্বের সমস্যা দূরীকরণের মাধ্যমে এবং সাম্য, মানবিক মর্যাদাসম্পন্ন দেশ গঠনের মাধ্যমে, তাহলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের স্বাধীনতা সার্থক হবে। বঙ্গবন্ধু হত্যার কয়েক যুগ পরও কোটি হৃদয়ে বিরাজমান জাতির পিতার আর্দশ। তার আর্দশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে তৈরী হবে এক স্বপ্নের বাংলাদেশ এমনটাই কাম্য।
‘আগস্টের শোক হোক বাঙালির শক্তি’
—বরকত উল্লাহ, শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
যতদিন রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান, ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৫ সালের এই দিনে একদল বিপদগামী পাক বাহিনীর সাথে আমাদের দেশের একদল স্বাধীনতা বিরোধী বাঙ্গালীর জাতির জনক, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান, বাঙ্গালীর অবিসংবাদিত নেতা তথা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে সপরিবারে হত্যা করে। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তাকে পাকিস্তান কারাগারে বন্দি করে রাখা হয় কিন্ত তখন তাঁকে হত্যা করতে পারে নি। স্বাধীন বাংলার মাটিতে ঠান্ডা মাথায় সুপরিকল্পিত ভাবে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এরপর ১৯৯৬ সালে চড়াই-উতরাই পার করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং মুজিবের স্বপ্নের তথা সোনার বাংলার দ্বার পাল শুরু হয়েছিলো।
বঙ্গবন্ধু সর্বদা সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মূল উদ্দেশ্য ছিলো বাঙ্গালী জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে বাংলাদেশের নাম পৃথিবীর বুক থেকে মুছে ফেলা। বঙ্গবন্ধুর হত্যার বদলা নিয়ে তার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর দিক নিদের্শনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের প্রত্যেককে এই সোনার বাংলা তৈরী করতে এগিয়ে কাজ করতে হবে। মুজিব আদর্শের সৈনিকদের নতুন করে শপথ গ্রহণ করতে হবে। এই শোককে আমরা শক্তিতে রূপান্তরিত করে সকল অপশক্তি দূর করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবো। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
‘তরুণ প্রজন্মের কিংবদন্তি বঙ্গবন্ধু’
—আফরোজা আক্তার, শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন দূরদর্শী এবং ক্যারিশম্যাটিক নেতা যিনি আদর্শ রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে আখ্যায়িত। তার দূরদর্শীতায় একটি পরাধীন জাতি বহু বছরের শোষন, দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে স্বাধীনতার স্বাদ পায়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ড শুধু একটি হত্যাকান্ডই নয়, বাঙ্গালী জাতিকে আবারো পরাধীন ও অভিভাবক শূন্য করার ষড়যন্ত্র। এ গনহত্যায় বাঙালির জীবনে শোকের ছায়া নেমে আসে। দুঃখে কাতর বাঙালি হয়ে যায় বাকরুদ্ধ ও কিংকর্তব্যবিমুঢ়। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রায় অর্ধশতাব্দী পরও তরুণ প্রজন্ম সেই শোকের গাম্ভীর্য ধরে রেখে জাতীয় শোক দিবস পালন করছে। কিন্তু অতীতের সাথে বর্তমানের কিছুটা ভিন্নতা লক্ষ্যণীয়।
জাতীয় শোকদিবসের তাৎপর্য তখনই ফলপ্রসূ হবে যখন রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাধ্যমে তরুনসমাজ এর সদব্যবহার করবে। বঙ্গবন্ধুকে সঠিকভাবে বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করাই শোক দিবসের মূল লক্ষ্য। বঙ্গবন্ধু ও তার আদর্শ, চিন্তাধারা সম্পর্কে সবাইকে সঠিক ধারণা দিতে হবে এবং সেই চেতনাকেই শক্তি হিসেবে ধারণ করে বাঙালি জাতীকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সেই সাথে তরুনদের উচিত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য উদার রাজনৈতিক, শোষনহীন ও সাম্যবাদী সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশেকে আগামীর দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় শোক দিবস তারুণ্যের ভাবনায় বঙ্গবন্ধু পাঁচমিশেল ফিচার মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ