পারমাণবিক পরীক্ষার বিরুদ্ধে একটি দিন
২৯ আগস্ট ২০২২ ১৪:২১
বিশ্বের পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো নিজেদের আরো শক্তিশালী করতে কোটি কোটি অর্থ ব্যয় করে যাচ্ছে। অত্যাধুনিক সব পরমাণু অস্ত্রের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে পারমাণবিক পরীক্ষা চালায় রাষ্ট্রগুলো। কিন্তু এসব পরীক্ষা থেকে নির্গত তেজস্ক্রিয় কণা’র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক বেশি মারাত্মক। তেজস্ক্রিয়তার কারণে ক্যান্সার আক্রান্তের হার এবং বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম নিতে পারে। বিশ্বের সকল মানুষের মধ্যে অস্ত্রবিরোধী সচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে ২০০৯ সালের ২ ডিসেম্বর, ২৯ আগস্টকে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক পরীক্ষা বিরোধী দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয় জাতিসংঘ।
বর্তমান বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, চায়না, ভারত, পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্রের উপস্থিতির ঘোষণা দিয়েছে। ইসরায়েল এখনো পারমাণবিক অস্ত্রের উপস্থিতি স্বীকার করে নি।
যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ইতিহাস খুবই ভয়াবহ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানে দুটি পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ করা হয়েছিল। ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট ‘লিটল বয়’ নামের পারমাণবিক বোমা ফেলা হয় জাপানের হিরোশিমাতে। এর তিনদিন পর ‘ফ্যাটম্যান’ নামক দ্বিতীয় বোমাটি নিক্ষেপ করা হয় নাগাসাকিতে। ভয়াবহ এসব বিস্ফোরণে তাৎক্ষণিকভাবে লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। পরে মারা যায় আরো অনেকে। তেজস্ক্রিয়তার কারণে সেইসব এলাকায় এখনো অনেক বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম নেয়। সেই ঘটনার পর শত শতবার পরীক্ষামূলক ও প্রদর্শনের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
তবে অনেক আগে থেকেই পারমাণবিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণের দাবি এসেছে। ১৯৪৬ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন থেকে পরমানু অস্ত্রবিরোধী প্রস্তাব তোলা হয়। আন্তর্জাতিকভাবে পারমাণবিক অস্ত্র সম্পূর্ণভাবে নিরস্ত্রীকরণের প্রস্তাব তোলা হয় ১৯৫৯ সালে। এরপর ১৯৭৫ সাল থেকে নিউক্লিয়ার নন-প্রোলিফারেশন ট্রিয়েটি বা পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির পক্ষের রাষ্ট্রগুলো জাতিসংঘে পারমাণবিক অস্ত্র সম্পর্কে একটি রিভিউ প্রোগ্রাম চালু করে। যা প্রতিবছরই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এরপরও পরমানু শক্তিধর দেশগুলোর কাছে হাজার হাজার পারমাণবিক অস্ত্র মজুদ আছে। কোটি কোটি অর্থ খরচ করে চলছে সেগুলোকে অত্যাধুনিক করার প্রক্রিয়া।
সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি