Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খালি পায়ে হেঁটে চলা একাত্তরের জননীর আখ্যান

রাতিন রহমান
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১২:৪৭

মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। জীবিকা হারিয়েছে, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বামী হারিয়েছেন, তিন সন্তান হারিয়েছেন— তবুও অটল পর্বতের মত অকল্পনীয় দৃঢ়তায় স্থির ছিলেন মানুষটি। জীবনের প্রায় পুরোটাই পার করে দিয়েছেন মানুষকে বই পড়ানোর মহৎ উদ্যোগে। বই ফেরি করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন খালি পায়ে। জীবনে আর কিছুই চাননি, প্রচন্ড অর্থাভাবেও স্রেফ একটাই লক্ষ্য ছিল তার, সেটা মানুষকে পড়াতে শেখানো। বই পড়ানো। পড়াতে চেয়েছেন, বিশেষ করে একাত্তরের বীভৎস নারকীয়তা যা কিছু তুলে এনেছিলেন তিনি তার লেখায়, তার বেদনাবিধুর অবিস্মরণীয় জীবনের গল্পে!

বিজ্ঞাপন

মানুষটার নাম রমা চৌধুরী। আমাদের একাত্তরের জননী। একাত্তরে পাকিস্তানি জেনোসাইডার সেনাবাহিনীর হাতে পাশবিক নির্যাতনের শিকার এই মানুষটা জীবনের একটা বড় অংশ হেঁটেছেন খালি পায়ে। কেন? এর পেছনে লুকিয়ে আছে আরেক বেদনাবিধুর গল্প। ১৯৪১ সালের ১৪ অক্টোবর। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার পোপাদিয়া গ্রামে জন্ম রমা চৌধুরীর। দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে রমা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬১ সালে ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য’ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পড়ালেখা শেষে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেছিলেন কক্সবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে, স্বামী ও ৩ সন্তান নিয়ে নির্বিঘ্নেই কাটছিল রমার দিনগুলো। এরপর এল একাত্তর!

বিজ্ঞাপন
আমাদের একাত্তরের জননী রমা চৌধুরী

আমাদের একাত্তরের জননী রমা চৌধুরী

যুদ্ধের শুরুতে রমার স্বামী পরিবার ফেলে চলে যান ভারতে। পোপাদিয়ায় গ্রামে পৈতৃক ভিটায় বৃদ্ধা মা আর ছোট ছোট তিন সন্তানকে নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় দিনাতিপাত করতে থাকেন রমা চৌধুরী। ১৩ এপ্রিল তার পরিবারের উপর নেমে আসে নরক। রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি সেনারা তার বাড়িতে আক্রমণ চালায়। পাশবিক নির্যাতন চালায় তার ওপর। ধর্ষণের এক পর্যায়ে তাদের হাত থেকে ছুটে গিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে লুকিয়ে থাকেন জীবন বাঁচাতে। ওই বিভীষিকার বর্ণনা রয়েছে তার “একাত্তরের জননী” বইয়ে। সেখানে তিনি লিখেছেন,

‘যখন আমাকে নির্যাতন করতে উদ্যত হলো পাকসেনা, তখন জানালার পাশে দাঁড়ানো আমার মা ও দুই ছেলে বারবার আকুতি করছিলেন। ছিল আমার পোষা বিড়াল কনুও। তখন আমি মাকে আমার সন্তানদের নিয়ে সরে যেতে বলেছিলাম।’

ধর্ষণের এক পর্যায়ে রমা চৌধুরী পাকিস্তানি সেনাদের হাত থেকে পালিয়ে পুকুরে ডুবে লুকিয়ে আত্মরক্ষা করেছিলেন। তাকে না পেয়ে গানপাউডার দিয়ে ঘরবাড়িসহ তার যাবতীয় সহায় সম্পদ সবকিছুই পুড়িয়ে দেয় পাকিস্তানি হায়নারা। এই সময় এলাকাবাসী কেউ কেউ তার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার নিজের আত্মীয়রাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। রমা চৌধুরী তার ‘একাত্তরের জননী’ বইয়ে লিখেছেন, ‘…আমার আপন মেজো কাকা সেদিন এমন সব বিশ্রী কথা বলেছিলেন, লজ্জায় কানে আঙুল দিতে বাধ্য হই। আমি লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছি না, দোকানে গিয়ে কিছু খাবারও সংগ্রহ করতে পারলাম না মা ও ছেলেদের মুখে দেবার জন্য।…’

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী মানুষটার কাছেও তিনি নিজের জন্য কিচ্ছু চাননি রমা চৌধুরী

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী মানুষটার কাছেও তিনি নিজের জন্য কিচ্ছু চাননি রমা চৌধুরী

চোখের সামনেই তার বছরের পর বছর ধরে সৃষ্টি সাহিত্যকর্ম, ডকুমেন্টস, সহায়সম্বল সব পুড়তে দেখেও কিছু করতে পারেননি তিনি। এরপর থেকে বিজয়ের আগ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের বাকি সময়টা বৃদ্ধা মা ও তিন সন্তানকে নিয়ে পাশের বন-জঙ্গলে অবর্নণীয় দুঃখ-কষ্ট ও যন্ত্রণায় পার করেছেন তিনি, লুকিয়ে দিন কাটিয়েছেন। রাতের বেলা বাড়ির ধ্বংসাবশেষে মাথার ওপর খড়কুটো বা পলিথিন দিয়ে কোনোমতে রাত পার করতেন। মুক্তযুদ্ধকালীন তার এই অবর্ণনীয় কষ্টের কথাই লিখে গেছেন ‘একাত্তরের জননী’ গ্রন্থে। তার ভাষায়, ‘সেদিন আমাদের পাড়ায় কত মেয়েকে যে ধর্ষণ করেছে পিশাচগুলো তার ইয়ত্তা নেই। যুবতী মেয়ে ও বৌ কাউকেই ছাড়েনি। গর্ভবতী বৌ, এমনকি আসন্ন প্রসবারাও বাদ যায়নি। এসব কথা জানতে পেরে আমি অন্তরের গ্লানি ভুলে নিজেকে কোনোমতে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করলেও মা কিন্তু আমার গর্ভে হানাদারের সন্তান আসতে পারে ভেবে আতংকে ও উদ্বেগে ছটফট করতে থাকেন।’

মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তার বড় সন্তান সাগর ছিল বছর পাঁচেকের, দ্বিতীয় সন্তান টগরের বয়স ছিল ৩ বছর। যে দুরন্ত সাগর মিছিলের পেছনে ‘জয় বাংলা, জয় বাংলা’ বলে ছুটে বেড়াত, পোড়া বাড়িঘরে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে খাদ্যহীন বাসস্থানহীন জঙ্গলে থাকতে থাকতে সেই সাগর ফুসফুসের প্রদাহে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করল একাত্তরের ২০ ডিসেম্বর, বিজয়ের চারদিন পর। সাগরের মৃত্যু রমা তার বই একাত্তরের জননী-তে লিখেছেন এভাবে,

‘…ঘরে আলো জ্বলছিল হ্যারিকেনের। সেই আলোয় সাগরকে দেখে ছটফট করে উঠি। দেখি তার নড়াচড়া নেই, সোজা চিৎ হয়ে শুয়ে আছে সে, নড়চড় নেই। মা ছটফট করে উঠে বিলাপ ধরে কাঁদতে থাকেন, ‘আঁর ভাই নাই, আঁর ভাই গেইয়্যে গোই’ (আমার ভাই নেই, আমার ভাই চলে গেছে)।’

আমাদের একাত্তরের জননী রমা চৌধুরী

আমাদের একাত্তরের জননী রমা চৌধুরী

রমা তখনো জানতেন না ছোট ছেলে টগরকেও তিনি হারাবেন ঠিক এক মাস আটাশ দিনের মাথায়, নিউমোনিয়া কেড়ে নেবে তার চার বছরের বুকের মানিককে। এরপরের গল্পটা অন্তহীন হতাশার, দুঃখের, অনাদর আর অবহেলায় টিটকারি আর বিদ্রুপের। দেশকে শত্রুমুক্ত করতে বিজয় আনতে যে মানুষগুলো তাদের সব হারাল, সেই বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধের পরে শিকার হলো চরম অপমান আর বঞ্চনার। পর পর দুটো সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় রমা চৌধুরী বেশ কিছু দিশেহারা ছিলেন। এক পর্যায়ে পালিয়ে যাওয়া প্রথম স্বামীর সংসারের পাট চুকিয়ে দ্বিতীয়বারের মত সংসার বাঁধার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে জীবন এখানেও তার প্রতি সদয় আচরণ করেনি। প্রতারণার শিকার হন তিনি, এরপর সব ছেড়েছুড়ে ঘুরে দাঁড়ান প্রবলভাবে। বেশ কিছুকাল শিক্ষকতা করলেও শেষ পর্যন্ত থিতু হন লেখালেখি পেশায়। লেখালেখির শুরুতে একটি পাক্ষিক পত্রিকায় নিয়মিত লেখা শুরু করেন। সম্মানী হিসেবে টাকা নিতেন না, সেই পত্রিকারই পঞ্চাশ কপি নিতেন। নিজেই তা বিক্রি করে সেই উপার্জন দিয়ে কোনোমতে চলতেন। এরপর নিজেই বই লেখা শুরু করেন। নিজের লেখা বই নিজেই পথে পথে ঘুরে বিক্রি করতেন। চট্টগ্রামের রাস্তায় রাস্তায় রোদে পুড়ে কিংবা বৃষ্টিতে ভিজে খালি পায়ে অনেকেই হয়তো এই বৃদ্ধাকে বই বিক্রি করতে দেখেছেন।

সাগর ও টগরের মৃত্যুতে স্তব্ধ রমা করেছিলেন এক অদ্ভুত কাজ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংস্কার অনুযায়ী ছেলেদের মৃতদেহ না পুড়িয়ে মাটিচাপা দিয়ে কবর দিয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকে জুতা পরা ছেড়ে দেন। ছেলেরা মাটির নীচে ঘুমিয়ে, মাটির উপরে মা জুতো পায়ে হাঁটবেন না, এই ছিল তার প্রতিজ্ঞা। ছেলেদের মৃত্যুর স্মৃতি কখনোই তিনি ভুলতে পারেননি। খালি পায়ে হাঁটতে হাঁটতে একসময় তার পায়ে ঘা হয়ে যায়। আত্মীয়স্বজনদের জোরাজুরিতে তিনি অনিয়মিতভাবে তখন জুতা পড়া শুরু করেন।

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী মানুষটার কাছেও তিনি নিজের জন্য কিচ্ছু চাননি রমা চৌধুরী

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী মানুষটার কাছেও তিনি নিজের জন্য কিচ্ছু চাননি রমা চৌধুরী

কিন্তু দুর্ভাগ্য তার পিছু ছাড়েনি। প্রচন্ড সাহসী দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এই মানুষটাকে ভেঙ্গে ফেলতে আরেকটা প্রচন্ড ধাক্কা আসে। তার দ্বিতীয় সংসারের ২১ বছর বয়সী ছেলে সন্তান দীপঙ্কর টুনু বোয়ালিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। এরপর থেকে একেবারেই জুতা পরা ছেড়ে দেন তিনি। বলেন, ‘আমার তিন ছেলে মাটির নীচে, তাদের শরীরের উপর দিয়ে আমি জুতা পায়ে হাঁটি কিভাবে? তাদের কষ্ট হবে।’

বছরের পর বছর নিজের এবং জীবিত সন্তানের আহার যোগাতে খালি পায়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে নিজের লেখা বই বিক্রি করেছেন তিনি। কখনো কারও কাছে সাহায্যের জন্য হাত পাতেননি। বিশেষ করে নিজের তৃতীয় সন্তানের মৃত্যুর পরে একবিন্দু না টলে অবিশ্রান্ত বইয়ের ফেরিওয়ালা হিসেবে জীবনধারণ চালিয়ে যেতে থাকেন তিনি। নিজের বই ফেরি করা নিয়ে বলেছেন, ‘কারো কাছে জীবনে হাত পাতিনি। আমি নিজের লেখা বই বিক্রি করি। যেদিন বিক্রি করতে পারি সেদিন খাই, যেদিন পারি না সেদিন উপোস থাকি।’

আমাদের একাত্তরের জননী রমা চৌধুরী

আমাদের একাত্তরের জননী রমা চৌধুরী

রমা চৌধুরীর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ২০টি। তার লেখা উল্লেখযোগ্য কিছু গ্রন্থ হল- একাত্তরের জননী, আগুন রাঙা আগুন ঝরা অশ্রু ভেজা একটি দিন, সেই সময়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শহীদের জিজ্ঞাসা, স্বর্গে আমি যাব না, ভাববৈচিত্র্যে রবীন্দ্রনাথ, চট্টগ্রামের লোকসাহিত্যে জীবন দর্শন, অপ্রিয় বচন, লাখ টাকা, হীরকাঙ্গুরীয়, ১০০১ দিন যাপনের পদ্য ইত্যাদি। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তিনি ছিলেন লেখালেখি নিয়েই। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় মৌসুমী আড্ডায় আমন্ত্রিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা রমা চৌধুরী। সেখানে দেয়া তার বক্তব্যের ভিডিও

https://www.facebook.com/ratinraad71/videos/741050716240022/

সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তোলে, মিডিয়ায় আলোচিত হওয়ায় ঘটনাটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চোখে পড়ে।প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক আগ্রহে এবং আমন্ত্রণে রমা চৌধুরী গণভবনে দেখা করতে যান প্রধানমন্ত্রীর সাথে। খালি পায়ে বঙ্গবন্ধু কন্যার সাথে সাক্ষাতে নিজের জীবনের রূপকথার চেয়েও অবিশ্বাস্য গল্প শোনান তাকে, কষ্টের কথা জানান। প্রধানমন্ত্রী তার কথা শোনেন, আর্থিক সহযোগিতা করতে চাইলে রমা চৌধুরী বিনয়ের সঙ্গে তা ফিরিয়ে দেন। বলেন নিজের উপার্জনেই তিনি বেঁচে থাকতে চান। শেখ হাসিনাকে তিনি তার জীবনালেখ্য “একাত্তরের জননী” গ্রন্থটা উপহার দেন।

রমা চৌধুরীর জীবনের গল্পটা উঠে এসেছে তার বলা স্রেফ দুটো লাইনে- ‘আমার সন্তানেরা শহীদের মর্যাদা পায়নি, কিন্তু তারা আমার কাছে শহীদ। কারণ, একাত্তর আমাকে দিয়েছে পোড়া ভিটে, কাঁধের ঝোলা, ছেলের শোক আর খালি পা।’

প্রচণ্ড দৈন্যতার মাঝেও তীব্র আত্মসম্মানবোধ নিয়ে চলা রমা চৌধুরী দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছেও কোনো সহায়তা চাননি, কারও কাছেই চাননি। জীবনের সব ট্রাজেডিকে পরাভূত করে অদ্ভুত ঋজু দৃঢ়তায় শিরদাঁড়া উঁচু রেখেই ২০১৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ৭৭ বছর বয়সী রমা চিরবিদায় নেন। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী চেরাগী পাহাড়ের লুসাই ভবনের ৪০৮ নাম্বার কক্ষে চারটা বেড়াল নিয়ে একাকী যে জীবনটা পার করে গেলেন রমা, তাতে অন্যতম প্রধান অর্জন ছিল নিজের অকালপ্রয়াত সন্তানের নামে ‘দীপংকর স্মৃতি অনাথালয়’ নামের একটি অনাথ আশ্রম চালানো। হতদরিদ্র দৈন্যতার মধ্যেও অনাথ বাচ্চাদের জন্য এক মাতৃস্নেহের আশ্রয় তৈরি করেছিলেন একাত্তরের জননী রমা, যা অনেক বেশুমার সম্পদে ডুবে থাকা বিত্তশালী বিলাসি কেউ করার কথা ভাববেও না বোধহয় জীবনে একবারও!

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী মানুষটার কাছেও তিনি নিজের জন্য কিচ্ছু চাননি রমা চৌধুরী

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী মানুষটার কাছেও তিনি নিজের জন্য কিচ্ছু চাননি রমা চৌধুরী

প্রতিবার যখনই রমা চৌধুরীর কথা মনে পড়ে, তখনই সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা লাগে এটা ভেবে যে মানুষটা জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত শুধু চেয়েছিলেন, মানুষ তার বইগুলো কিনে পড়ুক, জানুক একাত্তরে কি বীভৎসতা এবং নারকীয়তার মধ্যে যেতে হয়েছে বাঙালীকে। মুক্তিযুদ্ধের বীভৎস ইতিহাস আর যন্ত্রণাগাঁথা নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেবেন বলে প্রিয় সন্তানদের শোক বুকে চেপে খালি পায়ে হেঁটেই গেলেন মানুষটা। তার জীবনে আর কিছু চাওয়ার ছিল না, পাওয়ার ছিল না, এমনকি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী মানুষটার কাছেও তিনি নিজের জন্য কিচ্ছু চাননি, উল্টো তাকে বই উপহার দিয়ে এসেছিলেন।

এমন মানুষের মত মানুষ আর কোথায় পাবো! আর কি পাবো কখনো!

তথ্য কৃতজ্ঞতা:

১। জননী রমা চৌধুরী/ বিনয় দত্ত
২। রমা চৌধুরী: একাত্তরের জননী হয়েই বেঁচে ছিলেন যিনি/ রাফিয়া তামান্না
৩। মৃত্যুঞ্জয়ী নারীর নাম রমা চৌধুরী/ আবু আজাদ

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

খালি পায়ে হেঁটে চলা একাত্তরের জননীর আখ্যান ফিচার মুক্তিযুদ্ধ রমা চৌধুরী রাতিন রহমান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর