বিরিয়ানির হাড়িতে লাল কাপড়ের রহস্য
৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:০৯
ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে পরিপূর্ণ পুরান ঢাকা। আর পুরান ঢাকার কথা মনে পড়লে প্রথমে আসে বিরিয়ানির গন্ধ। এখানের মানুষ খুবই ভোজনপ্রিয়। প্রতিটি রাস্তার মোড়ে বিরিয়ানির দোকান আছে। দোকানের একশ মিটারের মধ্যে এসে পড়লেই নাকে বিরিয়ানির ঘ্রাণ আর লাল কাপড়ে মোড়া বিরিয়ানির বিশাল হাঁড়ি দেখা যায়। সারা বাংলাদেশে পুরান ঢাকার খাবার খুবই বিখ্যাত। এখানকার উল্লেখযোগ্য খাবারগুলো হলো- কাচ্চি বিরিয়ানি, পাক্কি বিরিয়ানি, মোরগ পোলাও, নান রুটি, বাকরখানি, নিহারী, বোরহানী, লাবাং ইত্যাদি।
কিন্তু বিরিয়ানির হাড়ি লাল কাপড়ে আবৃত থাকে। অনেক মানুষের মনে কৌতুহল জাগে লাল কাপড়ের রহস্য জানার। ইতিহাস থেকে জানা যায়, সম্রাট হুমায়ুনের খাদ্য পরিবেশনে ‘দরবারি রীতি’ অনুযায়ী, রুপালি পাত্রের খাবারগুলোর জন্য লাল কাপড়, আর অন্য ধাতব বা চিনামাটির পাত্রগুলোকে সাদা কাপড়ে ঢেকে নিয়ে আসা হতো। পরে মোগল দরবারেও এই রীতি অনুসরণ করা হয়। জানা যায় একবার মোঘল সম্রাট হুমায়ুন যুদ্ধে পরাজিত হয়ে রাজ্য হারিয়ে ইরানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ওই সময় তাকে সাদর অভ্যর্থনা জানানো হয় লাল রঙের গালিচা পেতে এবং খাবার পরিবেশনের করা হয় ধাতব পাত্র লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে এবং চীনা মাটির পাত্র সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে। সেই সময় থেকেই মোঘলরা খাবার পরিবেশনের এমন রীতি মেনে চলত। তারা খাবার পরিবেশনে লাল কাপড় ব্যবহার করত। তাছাড়া এই রীতি ও রঙের ব্যবহার লখনউয়ের নবাবরাও অনুসরণ করতেন। সেই থেকে বিরিয়ানির পাত্র লাল কাপড়ে ঢাকার রীতি চলে আসছে। অনেকেই মনে করেন, ইতিহাস বা ঐতিহ্যের রীতি মেনে নয়, ব্যবসার খাতিরে ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই বিরিয়ানির পাত্র লাল কাপড়ে মুড়ে রাখা হয়। ফলে দূর থেকেই তা ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে।
লেখক: শিক্ষার্থি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
সারাবাংলা/এসবিডিই