একাত্তরের জন্মদিনে লেখা বঙ্গবন্ধুর চিঠি
১৭ মার্চ ২০২৩ ২২:০৫
খুব একটা আয়োজন করে নিজের জন্মদিন কখনোই পালন করতেন না বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নিজের জন্মদিন নিয়ে তার কথা ছিল এরকম, “আমার জন্মবার্ষিকী আমি কোনোদিন নিজে পালন করি নাই-বেশি হলে আমার স্ত্রী এই দিনটাতে আমাকে ছোট্ট একটি উপহার দিয়ে থাকত। এই দিনটাতে আমি চেষ্টা করতাম বাড়িতে থাকতে।”
দেশ স্বাধীনের আগে আটটি জন্মদিন জেলে কেটেছে তার। এই অসহনীয় অবস্থাতেও ভাবতেন মানুষের মুক্তির কথা। একাত্তরের উত্তাল সময়ে আসা জন্মদিনের বার্তাতেও তিনি দিয়েছিলেন স্বাধীনতার ডাক। চিঠিতে লিখেছিলেন,
“বাংলাদেশের সাত কোটি মানুষের সার্বিক মুক্তির জন্য আমাদের আজকের এই সংগ্রাম। অধিকার বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে। বুলেট বন্দুক বেয়নেট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে আর স্তব্ধ করা যাবে না। কেননা জনতা আজ ঐক্যবদ্ধ।
লক্ষ্য অর্জনের জন্যে যে কোন ত্যাগ স্বীকারে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। ঘরে ঘরে গড়ে তুলতে হবে প্রতিরোধের দুর্গ। আমাদের দাবি ন্যায় সঙ্গত তাই সাফল্য আমাদের সুনিশ্চিত।
জয় বাংলা
শেখ মুজিবুর রহমান, ১৭.৩.৭১”
স্বাধীন দেশে বাংলার মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন বঙ্গবন্ধু। পত্রিকার পাতায় পাতায় থাকতেন বঙ্গবন্ধু, তাকে ঘিরে শুভেচ্ছাবার্তা।
একাত্তরের জন্মদিনে কী চিঠি লিখেছিলেন বঙ্গবন্ধু?
১৭ মার্চ ১৯৭২ছিলো স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধুর প্রথম জন্মশতবার্ষিকী। বিশেষ সংখ্যা বের করেছিল পত্রিকা। ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা ভীড় করেন।
সেদিন সারাদিনই রাজনৈতিক কাজে ব্যস্ত সময় পার করেন শেখ মুজিবুর রহমান। এরমধ্যেই শুভাকাঙ্খীদের ভালোবাসার বার্তা তাকে সিক্ত করেছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সেদিন বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর জন্য তিনি উপহার নিয়ে এসেছিলেন ফল আর মিষ্টি।
এরপর ১৯৭৩, ১৯৭৪ ও ১৯৭৫ সালের জন্মদিনগুলোতেও ব্যস্ততার মধ্য দিয়েই পার করেন বঙ্গবন্ধু। পত্রিকার পাতায় জন্মদিনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিশেষ পাতাও প্রকাশ করা হয়।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের সেই কালো রাতের পর বদলে যেতে থাকে বাংলাদেশের দৃশ্যপট। ১৯৭৬ সালে ১৭ মার্চ পত্রিকার পাতায়ও দেখা যায়নি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যেন রাতারাতি ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলা হয় বাঙালির মুক্তি সংগ্রমের অবিসংবাদিত মহানায়ককে।
সারাবাংলা/এজেডএস