কিশোর মুজিব শেরেবাংলার সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন
১৭ মার্চ ২০২৩ ২২:১৩
ছেলেবেলা থেকেই শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, ত্যাগ আর মানুষের প্রতি তীব্র ভালোবাসা তাকে বাংলার মানুষের বঙ্গবন্ধু করে তুলেছিল। পরিবারের সবাই যেমন বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসতেন, তেমনি স্কুলেও ছিলেন তিনি সমান জনপ্রিয়। বাবা-মা আদর করে ডাকতেন খোকা নামে। আর ভাইবোনদের আদরের মিয়াভাই ছিলেন তিনি। স্কুলছাত্র থাকা অবস্থায়ই দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোসহ নানা সমাজ সেবা কাজে যুক্ত হন শেখ মুজিব। অধিকারের প্রশ্নে সবসময় সরব বঙ্গবন্ধু ছেলেবেলাতেও কোন সুযোগ হাতছাড়া করতেন না।
বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বই থেকে জানা যায়, গোপালগঞ্জের মাথুরানাথ মিশনারি স্কুলে ১৯৩৯ সালের অষ্টম শ্রেণীতে পড়েন বঙ্গবন্ধু। অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক একদিন সেই স্কুল পরিদর্শনে যান। সঙ্গে ছিলেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। স্কুলের শিক্ষকদের ভড়কে দিয়ে হঠাৎ করে একদল ছাত্র এসে বুক চিতিয়ে দাঁড়ালেন তাদের সামনে। মুখ্যমন্ত্রীর সামনে দাঁড়িয়ে মুজিব নির্ভয়ে স্কুলের ছাদ মেরামতের দাবি উত্থাপন করেন। বলেন, ‘আমরা এই স্কুলেরই ছাত্র। স্কুলের ছাদে ফাটল ধরেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সেখান থেকে বৃষ্টির পানি চুইয়ে পড়ে আমাদের বই-খাতা ভিজে যায়। ক্লাস করতে অসুবিধা হয়।’
প্রথম বজ্রধ্বনিতেই সফল হয়েছিলেন কিশোর মুজিব। মুজিবের সৎ সাহসে মুগ্ধ মুখ্যমন্ত্রী সেদিন স্কুলের ছাদ মেরামতের আশ্বাস দিয়েছিলেন।
ছোটবেলা থেকেই এমন সাহসী ও দৃঢ়প্রত্যয়ী ছিলেন বঙ্গবন্ধু। যুক্ত ছিলেন খেলাধুলা ও সমাজসেবামূলক নানা কাজে। যা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে খুব সহজেই অনুমেয়। মুষ্ঠি ভিক্ষার চালে গরীব ছেলেদের পড়াশুনা ও পরীক্ষার খরচ, নিজের পরা জামা গরীবদের দেয়াসহ অধিকারবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মহৎ গুণ ছিল তার জন্মগত। আর তার প্রকাশও ছিল সেই শৈশব থেকেই।
এমন মহানায়ক আর পায়নি বাঙালি। দেশের প্রতি দেশের মানুষের প্রতি তার অকৃত্রিম ভালোবাসার প্রমাণ পাওয়া যায় অসমাপ্ত আত্মজীবিনীতে, “একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙালিদের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এই নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা, অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।”
সারাবাংলা/এজেডএস