Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শবে কদর কেন এতোটা গুরুত্বপূর্ণ?

মিরাজ রহমান
১৭ এপ্রিল ২০২৩ ১৬:৫১

বোখারী ও মুসলিম শরীফে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরে আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রেখে তার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সওয়াবের আশায় ইবাদত করবে তার আগের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’

তাফসীরে মারেফুল কোরআন ও তাফসীরে মাজহারিতে উল্লেখ হয়েছে, ‘রাসুল (সা.) একবার সাহাবায়ে কেরামকে বনী ইসরাইলের একজন আবিদ ও জাহিদ ব্যক্তির আমল-আখলাকের ঘটনা শুনাচ্ছিলেন। তিনি বলছিলেন, সেই আবিদ ব্যক্তি হাজার মাস বিরতিহীনভাবে সারারাত জেগে ইবাদত-বন্দেগী, জিকির-আজকার করতেন এবং সারাদিন সিয়াম পালন করতেন ও আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করতেন।

বিজ্ঞাপন

সাহাবা আজমাইনরা ঐ ব্যক্তির আমলের বর্ণনা শুনে নিজেদের স্বল্প আয়ূর কথা স্মরণ করে আফসোস করছিলেন। এমন সময় সূরা কদর নাজিল হলো এবং তাতে ইরশাদ হলো- ‘হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হচ্ছে লাইলাতুল কদর।’ অর্থাৎ মাত্র একটি রাত না ঘুমিয়ে ইবাদত-বন্দেগী, জিকির-আজকারসহ বিভিন্ন নেক আমলে সময় কাটাতে পারলে হাজার মাস লাগাতার ইবাদত করার চেয়েও অনেক বেশি সওয়াব অর্জন করা সম্ভব হতে পারে।

এক হাজার মাস = ৮৩ বছর চার মাস। একটি রাত ইবাদাতে কাটানো সম্ভব হওয়া মানে ৩০ হাজার ৪১৫ দিন ও রাত ইবাদাতে মশগুল থাকার সাওয়াব-সৌভাগ্য অর্জন করা। মাত্র একটি রজনী অর্থ্যাৎ মাগরিবের নামাজের পর থেকে ফজরের নামাজ পর্যন্ত আনুমানিক মাত্র ১০ থেকে সাড়ে ১০ ঘন্টা সময় আমল-ইবাদতে কাটানো সম্ভব হওয়া মানে ৭ লাখ ২৯ হাজার ৯৬০ ঘন্টা, ৪ কোটি ৩৭ লাখ ৯৭ হাজার ৬০০ মিনিট অথবা ২৬ কোটি ২৭ লাখ ৭৬ হাজার সেকেন্ড লাগাতার আমল-ইবাদতে সময় ব্যয় করার নিশ্চিত সাওয়াব-সৌভাগ্য অর্জন করা।

মহিমান্বিত শবে কদর বা লাইলাতুল কদরে ১০ ঘন্টা আমল-ইবাদতে সময় কাটানো সম্ভব হওয়ার হিসেব মোতাবেক এ রজনীতে মাত্র ১ সেকেন্ড ইবাদাত করা মানে অন্য সময়ে ২০ ঘন্টা ইবাদতে কাটানো। এ রাতে মাত্র ১ মিনিট আমলে মশগুল থাকা মানে অন্য সময়ে ৫০ দিন লাগাতার আমলে মশগুল থাকার সমান। মহিমান্বিত এ রজনীতে মাত্র ১ ঘন্টা আমল-ইবাদতে সময় ব্যয় করা মানে অন্য সময়ে ৮ বছর ৩৩ দিন বা ৭২ হাজার ৯৯৬ ঘন্টা আমল-ইবাদতে সময় ব্যয় করার সমান।

বিজ্ঞাপন

পরিশেষ রাসুল (সা.)-এর কিছু হাদীস স্মরণ করিয়ে দেই। ইবনে মাজাহ শরিফে উল্লেখ রয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ‘শবে কদর’ থেকে বঞ্চিত হলো; সে যেন সমগ্র কল্যাণ থেকে পরিপূর্ণ বঞ্চিত হলো।’

আবু দাউদ শরিফে উল্লেখ আছে, হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি ‘লাইলাতুল কদর’ পেল কিন্তু ইবাদত-বন্দেগীতে সময় কাটাতে পারলো না, তার মতো হতভাগা দুনিয়াতে আর কেউ নেই।’

সুতরাং পবিত্র রমজানের মাসে লাইলাতুল কদর আপনার আমার দরজায় কড়া নাড়ছে। এ রাতটিকে খুঁজে আমল-ইবাদতে কাটিয়ে সৌভাগ্যবানদের তালিকাতে নাম লেখাবো নাকি হতভাগা থেকে যাবো; সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদেরকেই।

লেখক: সম্পাদক, ইসলাম প্রতিদিন

সারাবাংলা/এসবিডিই

শবে কদর কেন এতোটা গুরুত্বপূর্ণ?