Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

লাইলাতুল কদরের রাতে মুসলিম হিসেবে বর্জনীয় কী কী?

মিরাজ রহমান
১৮ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:১৪

লাইলাতুল কদরে আমাদের করণীয়, বর্জনীয় কী? মহিমান্বিত এ রজনীতে মাত্র ১ ঘন্টা আমল-ইবাদতে সময় ব্যয় করা মানে অন্য সময়ে ৮ বছর ৩৩ দিন বা ৭২ হাজার ৯৯৬ ঘন্টা লাগাতার আমল-ইবাদতে সময় ব্যয় করার সমান।

লাইলাতুল কদরের রাতে বর্জনীয়
সৌভাগ্যমন্ডিত এ রাতকে কেন্দ্র করে মুসলিম সমাজে মনগড়া কিছু আমলের প্রচলন ঘটেছে। প্রত্যেক মুমিন-মুসলমানের উচিত হবে মহিমান্বিত এ রজনীতে মনগড়া বিভিন্ন আমল-ইবাদত ত্যাগ করা। শবে কদরের নামাজ নামে মুসলিম সমাজে আলাদা ১২ রাকাত বা ২০ রাকাত নামাজের যে প্রচলন রয়েছে সেটা সম্পূর্ণ বিদআত। এ রাত উপলক্ষে আলাদা কোনো নামাজের বিধান ইসলামে নেই। এ রাতের গোটা সময়ই আপনি চাইলে নামাজে বা অন্য যে কোনো আমল-ইবাদতে কাটাতে পারবেন। কিন্তু নির্দিষ্ট রাকাতের শবে কদরের কোনো নির্দিষ্ট নামাজ নেই। বিভিন্ন বই-পুস্তকে শবে কদরের নামাজের যে বিধান ও নির্দিষ্ট সুরা পাঠের যে নিয়ম-কানুন বর্ণিত রয়েছে; সেগুলো শুদ্ধ নয়। হাদীস শরীফ থেকে এ ধরনের কোনো নিয়ম বা বিধানের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। সুতরাং এসব মনগড়া পন্থা পরিত্যাগ করে বেশি বেশি বিভিন্ন আমল-ইবাদত করা।

বিজ্ঞাপন

অনেক মুমিন-মুসলমান ভাই-বোন এ রাতে কবর জিয়ারত করে থাকেন। কদরের রাতে কবর জিয়ারত করার কোনো সহিহ বর্ণনা রাসুল (সা.) থেকে পাওয়া যায় না। সুতরাং ভাল হলেও লাইলাতুল কদরে কবর জিয়ারত করা থেকে বিরত থেকে অন্য আমল-ইবাদতে মশগুল থাকা অধিক উত্তম হবে।

এছাড়া বাংলাদেশসহ বিভিন্ন মুসিলিম দেশে কদরের রাতে দল বেঁধে বিভিন্ন মসজিদে মসজিদে ঘোরাঘুরিকরাসহ উৎসবমুখর বিভিন্ন আয়োজন পরিলক্ষিত হয়। প্রত্যেক মুমিন-মুসলমানভাঈদের একটি কথা গুরুত্বের সঙ্গে মনে রাখতে হবে, মহিমান্বিত লাইলাতুল কদরে অহেতুক কোনো আয়োজনে লিপ্ত না হয়ে গোটা রাতের প্রতিটি সেকেন্ড, প্রতিটি মিনিটি এবং প্রতিটি ঘণ্টা কোরআন-সুন্নাহয় বর্ণিত বিভিন্ন ইবাদত বন্দেগীতে ব্যয় করার মাঝেই প্রকৃত সৌভাগ্য নিহিত।

বিজ্ঞাপন

পরিশেষ রাসুল (সা.)-এর কিছু হাদীস স্মরণ করিয়ে দেই। ইবনে মাজাহ শরিফে উল্লেখ রয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ‘শবে কদর’ থেকে বঞ্চিত হলো; সে যেন সমগ্র কল্যাণ থেকে পরিপূর্ণ বঞ্চিত হলো।’

আবু দাউদ শরিফে উল্লেখ আছে, হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি ‘লাইলাতুল কদর’ পেল কিন্তু ইবাদত-বন্দেগীতে সময় কাটাতে পারলো না, তার মতো হতভাগা দুনিয়াতে আর কেউ নেই।’
সুতরাং পবিত্র রমজানের মাসে লাইলাতুল কদর আপনার আমার দরজায় কড়া নাড়ছে। এ রাতটিকে খুঁজে আমল-ইবাদতে কাটিয়ে সৌভাগ্যবানদের তালিকাতে নাম লেখাবো নাকি হতভাগা থেকে যাবো; সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদেরকেই।

লেখক: সম্পাদক, ইসলাম প্রতিদিন

সারাবাংলা/এসবিডিই

লাইলাতুল কদরের রাতে মুসলিম হিসেবে করণীয় কী?

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর