হজের প্রস্তুতিতে যে বিষয়গুলো মনে রাখবেন
৪ জুন ২০২৩ ১৫:০৬
প্রতি বছর জিলহজ মাসের ৯ তারিখ আরাফার ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় এ মহাসম্মিলন। জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এ বছর ২৬ জুন সোমবার সন্ধ্যায় শুরু হয়ে পহেলা জুলাই শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হতে পারে পবিত্র হজ। এবার যারা হজ পালন করতে সৌদি আরবে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন তাদের প্রস্তুতি নিয়েই আমাদের বিশেষ আয়োজন।
হজে যাওয়ার আগে যে কাজগুলো করা জরুরি সেগুলো হলো- স্বাস্থ্যপরীক্ষা, টিকা দেওয়া, স্বাস্থ্যসনদ সংগ্রহ এবং হজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র সংগ্রহ। এছাড়া হজ পালনের প্রশিক্ষণও নেওয়া উচিত। হজ প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য তথ্য ঢাকার আশকোনা হজ কার্যালয় থেকে জানা যাবে। এছাড়া প্রয়োজনীয় বইপুস্তক বা পরিচিত লোকজনের কাছ থেকেও হজবিষয়ক তথ্য জানা যায়। তবে হজের প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যাবে www.hajj.gov.bd ওয়েবসাইটে।
হজযাত্রার আগে পাসপোর্ট, বিমানের টিকিট সংগ্রহ ও তারিখ নিশ্চিত করুন। প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করতে ভুলবেন না। হজের নিয়ম জানার জন্য একাধিক বই পড়তে পারেন। যারা পড়তে পারেন না, তারা অভিজ্ঞ হাজিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে পারেন।
বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর মহাসম্মিলন স্থল পূণ্যভূমি মক্কা। বৈধ অর্থের মালিকগণের ওপর এ মহাসম্মিলন স্থলে উপস্থিত হওয়া ফরজ। জাবালে রহমতের পাদদেশে ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে এ মহাসম্মিলন অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ব মুসলিম আল্লাহর দরবারর হাজিরা জানাতে এক সুরে গেয়ে ওঠবে হজের তালবিয়া। যেখানে রয়েছে মাওলার গুণগান; শান ও মান। মুসলিম উম্মাহ এক সুরে উচ্চ আওয়াজে জানান দেবে-
‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক;
লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক;
ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক;
লা শারিকা লাক।’
হজের এ মহা পবিত্র কর্ম সম্পাদনে রওয়ানা হওয়ার আগে হজ পালনকারীদের শারীরিক ও মানসিক বিশেষ কিছু প্রস্তুতি গ্রহণ করা আবশ্যক। আবার এমন কিছু অভ্যাস রয়েছে যেগুলো পরিত্যাগ করাও জরুরি।
হজের প্রস্তুতিতে যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে
হজ মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহ তাআলার এক মহানির্দশন। এ ইবাদত পালনে যেমন অর্থের প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন মানসিক ও শারীরিক সক্ষমতা। এছাড়া যে বিষয়গুলো মেনে চলা অবশ্য কর্তব্য-
১. হজের যাবতীয় খরচাদি বৈধ অর্থের উৎস থেকে করা।
২. হজের যাবতীয় সরঞ্জামাদি কেনা-কাটা সম্পন্ন করা।
৩. পাসপোর্ট, টাকা-পয়সা ও জরুরি কাপজপত্র রাখার ব্যাগ এবং বেল্ট সংগ্রহ করা।
৪. আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীদের কাছে দায়-দাবি মুক্ত হওয়া জরুরি।
৫. ওসিয়ত থাকলে তা সম্পাদন করা।
৬. অবশ্যই ঋণ পরিশোধ করা।
৭. হজের আগেই দুনিয়ার কাজ-কারবার থেকে পেরশানিমুক্ত হওয়া।
৮. ইবাদত-বন্দেগির মন-মানসিকতা তৈরির অভ্যাগ গড়ে তোলা
৯. হজের নিয়ম-কানুনগুলো ভালোভাবে জেনে নেয়া।
১০. কুরআন তেলাওয়াত সহিহ না হলে, তা গুরুত্বসহকারে শিখে নেয়া।
১১. সব ধরনের ইচ্ছা, লোভ-লালসা ত্যাগ করা।
১২. সব ধরনের খারাপ কাজ হতে বিরত নেওয়া।
১৩. বিলাসিতা, পদমর্যাদা, গর্ব ও অহংকার ত্যাগ করা।
১৪. ইবাদত ও কবর জেয়ারতের প্রতিটি মুহূর্তে তাড়াহুড়া না করে ও বিনয়ী হওয়া।
১৫. দুনিয়ার সব ধরনের অন্যায় কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা।
লেখক: ইসলামি লেখক, আইনজীবী
সারাবাংলা/এসবিডিই