Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অতিথি হয়ে আসা পাখিরা ফিরে যাক অতিথির মর্যাদায়

তৌহিদ- উল বারী
৮ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৩০

ক’দিন পরেই শীত ঋতুর আগমন ঘটবে। আগমন ঘটবে নানা ধরনের পাখিদেরও। এরা অতিথি পাখি, পরিযায়ী পাখি। পরিবেশগত চাপ, আরামদায়ক পরিবেশের আশা আর জিনগত নিয়মের কারণে এদের দেশান্তরী হতে হয়। তাদের এই দেশান্তরী হওয়ার রেওয়াজটা এখনের নয়। এটি বেশ পুরনো একটি রেওয়াজ। ধারণা করা হয়, পাখিদের এই দেশান্তরী হওয়াটা শুরু হয় প্রায় ৫ কোটি বছর আগে। কিন্তু দেশান্তরী হয়ে তারা কই যায়? আবার ফিরে যেতে পারে কি? নাকি অসাধু লোকের লোভের ফাঁদে পড়ে তারা আর স্বদেশে ফিরতে পারে না?

বিজ্ঞাপন

শীতপ্রধান দেশে যখন প্রচণ্ড শীত; পাখিদের বাস করা অত্যন্ত কষ্টের আর অসুবিধার, যখন বাঁচা-মরার প্রশ্ন দেখা দেয় কিংবা দেখা দেয় খাদ্য ও আশ্রয়ের প্রচন্ড সঙ্কট তখন তারা স্বদেশ ত্যাগ করে অতিথি হয়ে আসে আমাদের দেশে। হয়তো একটু উষ্ণতা, আর্দ্রতা আর খাদ্যের যথাযথ সুবিধা ভোগের আশায় পাড়ি জমায় বাংলাদেশে। এখানে আসতে তাদের পাড়ি দিতে হয় হাজার হাজার কিলোমিটার পথ।

পরে খুঁজে নেয় তাদের পছন্দনীয় নির্জন স্থান, জলাশয় নতুবা বনজঙ্গল। উড়ে বেড়ায় হাওর, বিল ও বিভিন্ন জলাশয়ে। তাদের আগমনে মুখরিত থাকে বাংলার জনপদ। মানুষ তাদের দেখে আনন্দ পায়, প্রশান্তি আসে মনে। তাদের দল বেঁধে ছুটে চলা কার না চোখে পড়ে? যখন তারা দল বেঁধে উড়ে যায় তখন মনে হয় এ যেন তারা ঐক্যের, শান্তির আর সৌন্দর্য্যের আগমনী বার্তা দিচ্ছে। তারা আমাদের অতিথি, তারা আমাদের মেহমান।

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, অতিথি পাখি হয়ে আসা এ পাখিগুলো অতিথি হয়ে থাকতে পারছে না। এক শ্রেণীর শিকারীর হাতে তারা শিকার হয়, হয় খাবারের থালায় মচমচে স্বাদের খাবার হিসেবে। নিঃসন্দেহে বলা চলে যে, পাখিরা মানুষের কাছে একসময় বিস্ময় হিসেবে থাকলেও আজ তা অনেকের কাছে সৌখিন খাবারে পরিণত হয়েছে।

কিন্তু কেন এই অমানবিক আচরণ তাদের প্রতি? তারা অতিথি; আমাদের আতিথেয়তায় যেখানে তাদের হাসি-খুশিতে দিন পার করার কথা, সেখানে তারা আজ নিজের জীবন নিয়ে স্বদেশে ফেরার শঙ্কায় থাকে। আমরা কি এতই অমানবিক? এতই পাষাণ? আসুন একটু মানবিক হই, মানবিকতা দিয়ে স্থাপন করি মানবের মহৎ পরিচয়।

পাশাপাশি সচেতন হই। সচেতনতাস্বরুপ প্রচার করি পাখির গুরুত্ব, বন্য প্রাণী ও পাখি শিকারের শাস্তির বিধান। এতে সরকারী শাস্তির বিধানও বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত জরুরি। সরকারি কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রুখে দিতে হবে এই অবৈধ শিকারিদের। আইনের আওতায় আনতে হবে তাদের।তবেই হয়তো রক্ষা পাবে অতিথি পাখিসহ স্থানীয় পাখি। রক্ষা হবে জীববৈচিত্র্য আর পরিবেশের যথাযথ ভারসাম্য।

বিজ্ঞাপন

লেখক: শিক্ষার্থী; বাকলিয়া সরকারি কলেজ, চট্টগ্রাম

সারাবাংলা/এসবিডিই

অতিথি হয়ে আসা পাখিরা ফিরে যাক অতিথির মর্যাদায় তৌহিদ-উল বারী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর