Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শহীদ বুদ্ধিজীবীরা কি কেবলই কিছু সংখ্যা মাত্র?

রহমান রা’আদ
১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:৫৯

যুক্তরাজ্যের এডিনবার্গ থেকে কার্ডিওলজিতে এমআরসিপি ডিগ্রী অর্জন করেছিলেন ডাঃ ফজলে রাব্বী সেই ১৯৬২ সালেই। মেডিসিনে নোবেলও পেতে পারতেন মানুষটা! কি, অবিশ্বাস্য লাগছে? ‘A case of congenital hyperbilirubinaemia (DUBIN-JOHNSON SYNDROME) in Pakistan’ এই টাইটেলে আর্টিকেলটা Journal o Tropical Med Hyg.’ নামক বিখ্যাত জার্নালে সেই ১৯৬৪ সালেই পাবলিশ করেছিলেন ডঃ রাব্বী! ‘Spirometry in tropical pulmonary eosinophilia’ নামে আরেকটা ফাইন্ডিংস ছাপা হয়েছিল ব্রিটিশ জার্নাল ‘অফ দা ডিসিস অফ চেস্ট’-এ ১৯৭০ সালে!

বিজ্ঞাপন

তার মত একজন অসামান্য প্রতিভাবান ডাক্তার খুব সহজেই পা কি স্তা ন সরকারের আনুগত্য জানিয়ে চলে যেতে পারতেন উন্নত বিশ্বের যে কোন দেশে। ভালো ক্যারিয়ার গড়ে সুখ শান্তিতে থাকতে পারতেন!সেই সুযোগ তার ছিল। অথচ একদিন না একদিন পা কি স্তা নী দের হাতে ধরা পড়তে পারেন, মরে যেতে পারেন জেনেও মানুষটা একাত্তরের পুরো ৯ মাস ঢাকা মেডিকেল কলেজে সেনাদের নাকের ডগায় গোপনে হাজারো আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা করেছেন, সাহায্য করেছেন যতটা সম্ভব, ছদ্মবেশে অচিন্তনীয় সব কাজ করেছেন! এমনকি তার গাড়ীটাও দিয়ে দিয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য। আজকের বাংলাদেশের হাজারো তরুণ এই বোকা ডাক্তারকে চিনতে না পারলেও ঠিকই চিনতে পেরেছিল পা কি স্তা নী নরপিশাচেরা, আ ল ব দ রের জল্লাদেরা তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

ডাক্তার এ এফ এম আবদুল আলীম চৌধুরী ছিলেন আরেক অকুতোভয় যোদ্ধা। কারফিউ উঠে গেলে আলীমের কাজ আরম্ভ হতো। গাড়ির বনেট ভর্তি করে ওষুধ সংগ্রহ করতেন বিভিন্ন ফার্মেসি আর ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে। এগুলো আবার মুক্তিযোদ্ধাদের গোপন ঘাঁটিতে পৌঁছে দিয়ে আসতেন তিনি। এ ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা করার জন্য একটি গোপন হাসপাতাল ছিল। সেখানে গিয়ে ডাঃ আলীম, ডাঃ ফজলে রাব্বি এবং এদের মতো আরো অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তারেরা নিজের এবং তাদের পরিবারের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন, সুস্থ করে আবার যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠিয়ে দিয়েছেন অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধাকে। ডা. আলীমের মৃত্যুর পর একজন মুক্তিযোদ্ধা বলেছিল, “আলীম ভাইয়ের দেয়া আমার চোখের ব্যান্ডজটি এখানো আছে। কিন্তু আলীম ভাই নেই। আলীম ভাইকে কোথায় হারালাম?”

তাদের দুজনকেই তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর। তিনদিন পর ১৮ ডিসেম্বর রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে ডা. আবদুল আলীমের ক্ষত-বিক্ষত লাশটির সন্ধান পাওয়া যায়। বুকটা ঝাঁজরা ছিল অনেকগুলো গুলিতে, সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন। কপালের বা-দিকে এবং তলপেটে ছিল বেয়নেটের গভীর ক্ষত। খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারা হয়েছিল তাকে। আলবদর এক্সিকিউশনার বা প্রধান জল্লাদ আশরাফুজ্জামান এতটাই নির্মম সারকাস্টিক ছিল যে, সে উপড়ে তুলে নিয়েছিল চক্ষুবিশেষজ্ঞ আবদুল আলীমের চোখ দুটো! মুক্তিযোদ্ধাদের দৃষ্টিশক্তি দান করা ডাঃ আবদুল আলীমকে কতটা কষ্ট আর যন্ত্রণা দিয়ে মারা হয়েছিল, আমরা হয়তো কখনো কল্পনাও করতে পারবো না!

ডাঃ ফজলে রাব্বীকে নির্মম অত্যাচারের পর ব্রাশফায়ার করে মেরে ফেলা হয়। কিন্তু এখানেই শেষ না! আশরাফুজ্জামান যে কতটা ঠাণ্ডা মাথার মেধাবী নরপিশাচ ছিল, তার প্রমাণ সে এখানেও রাখে। ফজলে রাব্বীর বুকটা বেয়নেটে চিরে হৃদপিণ্ডটা খুবলে তুলে এনেছিল সে! হার্ট স্পেশালিষ্ট কিনা, তাই হার্টটাই খুবলে তুলে আনা!

এই দুজনসহ বুদ্ধিজীবীদের জেনোসাইডে অপারেশন ইনচার্জ ছিল চৌধুরী মইনুদ্দীন। চিফ এক্সিকিউশনার বা প্রধান জল্লাদ ছিল আশরাফুজ্জামান। আশরাফুজ্জামান ছিলো জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের (বর্তমান ছাত্র শিবির) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। যে গাড়ি করে ঘাতকেরা বুদ্ধিজীবিদের রায়ের বাজারের শিয়ালবাড়ি বধ্যভূমিতে নিয়ে যেত, তার ড্রাইভার মফিজুদ্দিন ধরা পড়ার পর জবাববন্দীতে তার এই পরিচয়ই দেয়। দুজনে জামায়াতে ইসলামী অফিসের উল্টোদিকে থাকত। আশরাফুজ্জামানের ৩৫০ নম্বর নাখালপাড়ার বাড়ি থেকে একটি ব্যক্তিগত ডায়েরি উদ্ধার করে মুক্তিবাহিনী। সেখানে দুটো পৃষ্টায় ২০জন বুদ্ধিজীবির নাম পাওয়া যায় যাদের মধ্যে ৮ জনকে হত্যা করা হয়। তারা হলেন মুনীর চৌধুরী, ড. আবুল খায়ের , গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, রশিদুল হাসান, ড. ফয়জুল মহী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ডাক্তার গোলাম মুর্তজা। এদের প্রত্যেককে আশরাফুজ্জামান নিজে গুলি করে হত্যা করেছিল বলে জবানবন্দী দেয় মফিজুদ্দিন। ডায়েরির অন্যান্য পাতায় দালাল বুদ্ধিজীবীদের নামের পাশাপাশি আলবদর হাই কমান্ডের নামের তালিকা ছিলো।

এতে মঈনউদ্দিন ছাড়াও ছিল কেন্দ্রীয় কমান্ড সদস্য শওকত ইমরান ও ঢাকা শহরপ্রধান শামসুল হকের নাম। ১৫ ডিসেম্বর রাতে চৌধুরী মইনুদ্দীন সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারত ও নেপাল হয়ে মঈনউদ্দিন পাকিস্তানে চলে যায়। সেখানে হাজিরা দেয় গোলাম আযমের কাছে। পাকিস্তানী পাসপোর্ট নিয়ে যায় সৌদি আরব। বাংলাদেশ নাস্তিক হয়ে গেছে, সেখানে সব মসজিদ এখন মন্দির- ইত্যাদি মিথ্যে দিয়ে সৌদির আনুগত্য লাভ করে এরা। আর এই অনুগত্য ও অর্থ জোগাড়ে গোলাম আযম ছাড়াও তার সঙ্গী ছিলো সিলেটের কুখ্যাত আল-বদর ঘাতক আবদুর রাজ্জাক এবং পাকিস্তান জামাতে ইসলামী নেতা মিয়া মোহাম্মদ তোফায়েল।

বুদ্ধিজীবী হত্যার সাথে জড়িত বাঙালী রাজাকার আল-বদর বাহিনীর কিছু সদস্য বিচারের সম্মুখীন হয়েছে, যেমন কাদের মোল্লা বা আলী আহসান মুজাহিদ। কিন্তু অন্যতম কুখ্যাত দুই খুনী, চৌধুরী মঈনুদ্দিন এবং আশরাফুজ্জামান খান তাদের গুরু রাও ফরমান আলীর মতই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে। মঈনুদ্দীন ব্রিটেন প্রবাসী, সেখানে ‘মডারেট ইসলামিক নেতা’ বলে সমাজে বেশ নামডাক, এক সময় ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের একজন পরিচালক হিসেবেও নিয়োগপ্রাপ্ত ছিল, প্রিন্স চার্লসও তার বন্ধু মানুষ। অন্যদিকে আশরাফ হয়েছে আমেরিকাতে প্রবাসী, তারও ‘মডারেট ই স লা মি ক নেতা’ হিসেবে জানাশোনা আছে, মুসলিম ইসলামিক সার্কেল অফ নর্থ আমেরিকা (ইকনা) এর নিউ ইয়র্ক কুইন্স ব্রাঞ্চের প্রধানও ছিল এক সময়। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ফান্ডিং কালেক্ট করা সহজ হয়ে যায় তাদের জন্য। তবে ১৯৭২ সালের ৩ জানুয়ারি নিউইয়র্ক টাইমসে ফক্স বাটারফিল্ডের লেখা ‘আ জার্নালিস্ট ইজ লিংকড টু দ্য মার্ডার অব বেঙ্গলিজ’ নামে একটি বিশেষ রিপোর্ট ছাপা হয়। এতে বুদ্ধিজীবি হত্যাকান্ডে মঈনউদ্দিনের সংশ্লিষ্ঠতার আদ্যোপান্ত বর্ণনা করা হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জেনোসাইডের দায়ে অভিযুক্ত প্রত্যেক মাস্টারমাইন্ড থেকে শুরু করে এমনকি কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পের ইনচার্জ, গার্ডকে পর্যন্ত আজ ৮০ বছর পরেও দুনিয়ার যে প্রান্তে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে, সেখান থেকে ধরে এনে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে, সেখানে মানবতা আর ন্যায়বিচারের বিশাল তালেবর আমাদের মানবাধিকার নিয়ে সবক দিতে আসা আমেরিকা আর ব্রিটেন সভ্যতার অন্যতম জঘন্য দুই জেনোসাইডের প্রধান কুশীলব এবং প্রধান জল্লাদকে রীতিমত সম্মানিত নাগরিকের প্রিভিলেজ দিয়ে রেখেছে নিজেদের দেশে। কি নোংরা উৎকট রসিকতা!

আর আমাদের দেশে তাদের নেতা নিজামী-মুজাহিদেরা রাজনীতি করেছে, এমপি হয়েছে, মন্ত্রী হয়েছে, তাদের গাড়িতে উড়েছে জাতীয় পতাকা। আরো মজার ব্যাপার হচ্ছে এই রাজাকার আলবদরদের সন্তানেরা, ছাত্র সংঘের মতাদর্শিক জামায়াতপন্থীরা,প্রাক্তন শিবির কর্মীরা এই দেশে আজ বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত।

কুমিল্লা জেলা শান্তি কমিটির নেতা জহিরুল হক লিল মিয়ার নাতি ও অ্যাডভোকেট এম কে করিমের ছেলে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক প্রয়াত পিয়াস করিম ছিল আমাদের মিডিয়ার কাছে তথাকথিত বুদ্ধিজীবী।রাজাকারের ফাঁসীর দাবিতে গণজাগরণ চলাকালে এই পিয়াস করিম যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে টকশোতে এসে ইনিয়েবিনিয়ে নানা আলাপ দিতেন। পিয়াস করিমের মৃত্যুর পর আম্মা জাহানারা ইমামের সাথে বেইমানী করা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাবেক সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসিফ নজরুল আমাদের সুশীল সমাজে বুদ্ধিজীবী হিসেবে বেশ পরিচিত। নিজামী-সাইদী যুদ্ধাপরাধী ছিল কিনা সে ব্যাপারে টকশো-তে সন্দেহ প্রকাশ, সাইদীকে নির্দোষ দাবী করা, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানের হচ্ছে কিনা এই নিয়ে কুযুক্তি দিয়ে ত্যানা প্যাচানো, জামায়াতকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা, শাহবাগে রাজাকারের ফাঁসী চাওয়া ফ্যাসিবাদী আচরণ ইত্যাদি নানা আলাপে যুদ্ধাপরাধী ও তাদের উত্তরসূরীদের লাইফলাইন দিয়ে আসার জন্য আসিফ নজরুল প্রবল জনপ্রিয়। মিডিয়াও তাকে বেশ সম্মানিত একজন অধ্যাপক হিসেবেই পরিচয় করিয়ে দেয় সর্বত্র!

আর প্রাক্তন শিবির কর্মী গোলাম মাওলা রনির কাদের মোল্লার ফাঁসীর সময় তাকে নির্দোষ দাবী করে উস্তা ভাজির আবেগমথিত গল্প এখনো আমরা ভুলে যাইনি নিশ্চয়ই! সবচেয়ে জঘন্য সম্ভবত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোসাইড স্টাডিজের বিভাগীয় প্রধান আমেনা মহসিনের টক শোতে এসে ৩০ লাখ শহীদ নিয়ে সন্দেহ করা, রাজাকারদের নাকি আমরা ঢালাওভাবে দোষী বলছি এই স্টেটমেন্ট দেওয়া, বিহারীরা নাকি আমাদের উপর গণহত্যা চালায়নি, উল্টো আমরা তাদের উপর গণহত্যা চালিয়েছি এধরনের প্রমাণবিহীন জঘন্য প্রোপ্যাগান্ডা ছড়ানো। আমাদের সুশীল সমাজে আমেনা মহসিনও একজন গুরুত্বপুর্ণ বুদ্ধিজীবী। আর “জ ঙ্গীরা বোমা হামলা চালালে যদি সন্ত্রাসী হয়, তাহলে মুক্তিযোদ্ধারাও সন্ত্রাসী” এই উক্তি করা ফরহাদ মজহার বর্তমান যুগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাবিদ হিসেবে সুশীল শিক্ষিত সমাজে রীতিমত পূজনীয়। শিক্ষিত সমাজের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা করতে গিয়ে যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠীর পক্ষাবলম্বন করা ব্যাক্তিদের বুদ্ধিজীবী হিসেবে সম্মান করে, চিহ্নিত রাজাকারদের নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো ব্যাক্তিদের শ্রদ্ধা করে।

এদের মধ্যে অনেকেই গত কয়েক বছর ধরে কিছু প্রশ্ন তুলে বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডে পাকিস্তানী সেনারা ও আলবদর পিশাচরা জড়িত না এমন একটা থিউরি প্রচারের চেষ্টা করছে। এদের অনেকেই প্রশ্ন তুলছে পাকিস্তানীরা কেন বিজয়ের দুই দিন আগেই কেন হত্যা করলো, কেনই বা তার আগে করলো না? ঐ সময় তো দেশের প্রায় সব অঞ্চলই মুক্ত হয়ে গিয়েছিল তাহলে বিনা বাধায় কিভাবে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হলো? পাকিস্তানীদের তখন পরাজয়ের আশংকায় তটস্থ থাকার কথা, তারা কিভাবে পরিকল্পনা করে টার্গেটেড কিলিং করবে! কয়েক বছর আগে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর রায় চৌধুরী বুদ্ধিজীবী দিবসের এক আলোচনায় বুদ্ধিজীবীদের পাকিস্তানের দালাল বানিয়ে দিয়েছিল, আকারে ইঙ্গিতে বলতে চেয়েছিল তাদের হত্যা করে পাকিস্তানের উপর দায় চাপানো হচ্ছে, “যারা পকিস্তানের বেতন খাইল তারা হয়ে গেল মুক্তিযোদ্ধা, আর যারা পালিয়ে না খেয়ে বেড়াল তারা হয়ে গেল রাজাকার। এই বিষয়গুলো পরিষ্কার করা দরকার। কারণ এগুলো এখন ডাবল স্টান্ডার্ড হয়ে গেছে। একাত্তরে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত যারা পাকিস্তানের বেতন ভাতা খেয়েছে তারা নির্বোধের মতো মারা গেল। আর আমাদের মতো নির্বোধেরা শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে ফুল দিই। আবার না গেলে পাপ হয়। তারা যদি এতো বুদ্ধিমান হয়, তাহলে ১৪ তারিখ পর্যন্ত নিজের ঘরে থাকেন কীভাবে?”

আর ২০০৩ সালে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হওয়া বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডে ফাঁসীর দন্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ বলেছিল, “এত বছর আগের ঘটনা সেসময় বিচার করা হয় নি কেন? আপনারা জানেন বিচারে দেরী হলে সেটা ন্যায় বিচার হয় না। তাই এত বছর ধরে যেহেতু এই বিচার হয় নি আর এখন এর ন্যায় বিচার হওয়া সম্ভব নয় তাই জামায়াতও এই দায়ভার থেকে মুক্ত। আর বুদ্ধিজীবী হত্যায় তাদের কোন দায়ও নেই। কারণ হত্যা করেছে আওয়ামীলীগ নিজেই। (সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক)”

২০০৭ সালের ২৫ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠকের পর মুজাহিদ আবারো উদ্ধত এক বক্তব্য দেয়। সে বলে, “বাংলাদেশে কোনো যুদ্ধাপরাধী নাই। এটা তাদের কল্পনাপ্রসূত। নিজেদের বানোয়াট একটা উদ্ভট চিন্তা। বাংলাদেশে কোনো যুদ্ধাপরাধী নাই। তখন থেকেই নাই। এখনো নাই”।

চলুন এবার দেখে আসা যাক কারা আসলে বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডের জন্য দায়ী ছিল! একাত্তরে জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামে প্রকাশিত আলবদরের উপকমান্ডার ও পূর্বপাকিস্তান আলবদরের প্রধান আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ২১ মে ১৯৭১ সালে আলবদরের প্রতিষ্ঠাকালীন বক্তব্যে ইসলামী ছাত্রসংঘের কর্মীদের উদ্দেশ্যে কি বলছে,

“পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘ পৃথিবীতে হিন্দুস্থানের কোন মানচিত্র স্বীকার করে না। ইসলামী ছাত্রসংঘ ও আলবদর বাহিনীর কাফেলা দিল্লীতে উপনীত না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রসংঘের একটি কর্মীও বিশ্রাম গ্রহণ করবে না।
এখন থেকে দেশের কোন পাঠাগার, গ্রন্থাগার, পুস্তক বিক্রয় কেন্দ্র বা দোকানে পাকিস্তানের আদর্শবিরোধী কোন পুস্তক রাখা চলিবে না। কোন স্থান, গ্রন্থাগার ও দোকানে পাকিস্তানের আদর্শ ও সংহতিবিরোধী পুস্তক দেখা গেলে তা আগুনে পোড়ানো হবে।”

পুরো পাকিস্তান আলবদর কমান্ডার মতিউর রহমান নিজামী, পরবর্তিতে জামায়াতের নায়েবে আমির, বলেছিল,

“যারা ইসলামকে ভালোবাসে শুধুমাত্র তারাই পাকিস্তানকে ভালোবাসে। এবারের উদ্ঘাটিত এ সত্যটি যাতে আমাদের রাজনৈতিক বুদ্ধিজীবীরা ভুলে যেতে না পারে সে জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।”

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বরেণ্য শিক্ষাবিদ আনিসুজ্জামান তার সাক্ষাৎকারে বলেছেন,

“মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর ছোট ভাই অধ্যাপক লুৎফুল হায়দার চৌধুরীর কাছে জানতে পারি একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর তাঁর বাসা থেকে মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীকে কয়েকজন যুবক ধরে নিয়ে যান। ওই যুবকদের মুখে রুমাল বাঁধা ছিল। একপর্যায়ে যুবকদের একজনের মুখের রুমাল খুলে গেলে মোফাজ্জল হায়দার তাঁকে বলেন, ‘মুঈনুদ্দীন, তুমি?’ তখন মুঈনুদ্দীন মুখে রুমাল বাঁধতে বাঁধতে বলেন, ‘জি, আপনি আমার সঙ্গে যাবেন। কোনো ভয় নেই।এই মুঈনুদ্দীন তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের ছাত্র ও ‘দৈনিক পূর্বদেশ’ পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে ১৯৬৯ সালে তাঁকে কিছুদিনের জন্য ছাত্র হিসেবে পেয়েছিলেন মোফাজ্জল হায়দার। ১৯৭২ সালের ৯ জানুয়ারি দুই শহীদ শিক্ষক মুনীর চৌধুরী ও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর পরিবারের সঙ্গে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে সাক্ষাৎ করি আমি। ওই সময় মোফাজ্জল হায়দারের স্ত্রী সৈয়দা মনোয়ারা চৌধুরী আমাকে বলেন, ‘আপনার ছাত্ররাই আপনার স্যারকে নিয়ে গেছে।”

শহীদ মুনীর চৌধুরীর ছোট ভাই শমসের চৌধুরী তার সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “ওরা ভেতরে ঢুকে বেশ সমীহের সঙ্গেই ভাইকে বলল যে আপনাকে আমাদের সঙ্গে একটু ধানমন্ডি থানায় যেতে হবে। বড় ভাই একটু পেছনে হটে বলল, তোমাদের কথায় তো আমি যেতে পারি না। এ সময় একটি ছেলে ঘুরে এসে বন্দুকটা ওনার পিঠে ধরল। বলল, স্যার চলুন। বড় গেটের সঙ্গে একটা আয়রন গেট খোলা থাকে। সে গেট দিয়ে ভাই চলে যাচ্ছে। সে দৃশ্যটা আমার আজো মনে আছে। যাওয়ার সময় বলল, যাইরে ভাই। আমি বললাম, যা। এই তো। আজো গেল। তার দেহ পাওয়া যায়নি। সে কোথায় আছে, কেমন আছে আমার ভাই, জানি না…”

মুনীর চৌধুরীর ছেলে আসিফ মুনীর চৌধুরী তন্ময় বাবার হত্যাকারী সম্পর্কে জানিয়েছিলেন, “…১৯৭২ সালে সে সময়ের পত্রিকা পূর্বদেশ দেখে আমার চাচা, মা, ভাই নিশ্চিত হন আল-বদর বাহিনীর অপরেশন-ইন-চার্জ চৌধুরী মুঈনউদ্দীন এবং চিফ এক্সিকিউটর আশরাফুজ্জামান আমার বাবাসহ অন্যান্য বুদ্ধিজীবীদের অপহরণ, গুম এবং পরবর্তীতে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলো। পত্রিকায় ছবি দেখে আমার রুশো কাকা চিনতে পারেন যে, ৩/৪ তরুণের মধ্যে এই দুইজন আমার বাবাকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল…”

শহীদুল্লাহ কায়সারের স্ত্রী পান্না কায়সার সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “…যখন ওকে (শহীদুল্লাহ কায়সার) অন্ধকার ঘর থেকে টান দিয়ে আমার সঙ্গে বারান্দায় নিয়ে এলো, পেছন থেকে ওর হাতটা ধরে আমিও বারান্দায় গেলাম। গিয়ে তাড়াতাড়ি সুইচটা অন করে দিলাম। সব আলো হয়ে গেল। সবার মুখে মুখোশ। আমার ননদ পাশ থেকে দৌড়ে এলো। ও তখন সন্তানসম্ভবা। উপায়ান্তর না পেয়ে একজনের মুখের কাপড়টা টান দিয়ে খুলে ফেলল। সে-ই ছিল খালেক মজুমদার (এ বি এম খালেক মজুমদার…”

“…একদিন উপর থেকে শুনতে পেলাম নীচে অনেক হইচই। বাড়িতে তখন কি হচ্ছে তা খেয়াল করার মতো মানসিকতা আমার নেই। ১৪ ডিসেম্বরের পর নীচেও যাইনি। কেমন করে আমি সিঁড়ি ভেঙ্গে নীচে যাবো? যে সিঁড়ি ভেঙ্গে শহীদুল্লাহ্ আমাকে একা রেখে চলে গেল। তাই নীচ থেকে ভেসে আসা হৈ চৈ আমার মধ্যে কোন কৌতূহল সৃষ্টি করেনি। হঠাৎ মেজদা (জহির রায়হান) উপরে উঠে এসে হাতটা ধরে বললো , “চলুন নীচে”। আমি বললাম , নীচে কি? সে বললো চলুন আগে। টেনে নিয়ে গেল আমাকে। আমি তখনও জানিনা কি আমি দেখতে যাচ্ছি। আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো খাবার ঘরে। লোকে লোকারণ্য সেই ঘর। ভিড় ঠেলে মেজদা নিয়ে গেল মাঝখানে। দেখলাম একটা লোক দাড়িয়ে আছে। ইতোমধ্যে খোঁচা খোঁচা দাড়ি উঠে গেছে। চোখ দুটোর মধ্যে তখন নৃশংস দৃষ্টি। স্থির, অচঞ্চল। লোকটাকে দেখেই আমি ঝাঁপিয়ে পড়েছি বোধহয় তার উপর। লোকটার গায়ের শার্ট ধরে পাগলের মতো চিৎকার করে বললাম, “হ্যাঁ, এই পিশাচটাই সেদিন ওকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। চিনতে আমার একটুও ভুল হয়নি। তার পর আমি মাটিতে পড়ে গেলাম। আর কিছু বলতে পারবো না। এই লোকটা খালেক মজুমদার। শহীদুল্লাহ্ কায়সারের হত্যাকারী। যার মুখের কালো কাপড় টেলে খুলে ফেলেছিল শাহানা। যার সাথে শাহানার ধস্তাধস্তি হয়েছিল। চিহ্নিত হত্যাকারী খালেক মজুমদার…”

খালেক মজুমদারকে বিচারের সম্মুখীন করা হয়েছিল। আদালতে আবারো শহীদুল্লাহ কায়সারের স্ত্রী, বোন, ভাইয়েরা তাকে শনাক্ত করেন। কিন্তু বিচারক তাঁকে সশ্রম কারাদন্ডে দেন। তার পুরো নাম ঠিকানা হচ্ছে, এ বি এম খালেক মজুমদার, পিতা-আব্দুল মজিদ মজুমদার, গ্রাম-দোহাটা, হাজিগঞ্জ, কুমিল্লা। এই নরপিশাচের বাসায় বিজয়ের পর অভিযান চালিয়ে বুদ্ধিজীবিদের নামের তালিকা সম্বলিত একটা ডাইরি খুঁজে পান মুক্তিযোদ্ধারা, যার অনেকগুলা নামের পাশে লাল কালিতে ক্রস চিহ্ন দেয়া ছিল। তারা আর কখনো ফিরে আসেননি। এতো প্রমাণ, চাক্ষুষ সাক্ষ্মী থাকার পরেও খালেক মজুমদারকে শহীদুল্লাহ কায়সারকে অপহরণ করার দায়ে ১০ মতান্তরে ৭ বছরের (তার নিজের আত্মজীবনীতে ৭ বছরের কথা উল্লেখ করেছে সে) সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। তারপরেই শুরু হয় ঘৃণিত এক কালো অধ্যায়। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে ক্ষমতায় এসে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবতর্ন হিসেবে আজকাল বেশ বিখ্যাত জিয়াউর রহমান খালেক মজুমদারসহ বিচারের অপেক্ষায় থাকা এগারো হাজার চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী রাজাকার আলবদর আল শামস খুনীদের সসস্মানে মুক্ত করার ব্যবস্থা করেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ এপ্রিল হাইকোর্টের এক রায়ে খালেক মজুমদারকে ‘শহীদুল্লাহ কায়সারের অপহরণ মামলার অভিযোগ’ থেকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। ১৯৮১ সালে তার কারাগারের দিনগুলো নিয়ে একটি বই প্রকাশ করে খালেক মজুমদার “শেকল পরার দিনগুলি” নামে। আজ পর্যন্ত স্বাধীন বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধী নরপিশাচ খালেদ মজুমদারের আত্মজীবনী বিক্রি হয়, আপনি চাইলে এক্ষুণি রকমারী ডট কমে সার্চ দিয়ে আত্মস্বীকৃত কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী খালেদ মজুমদারের আত্মজীবনী কিনতে পারবেন। ২৫ জুলাই ২০১৪ সালে এই ঘাতক স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করে।

লেখাটি শেষ করবো একটি প্রতিবেদনের অংশবিশেষ দিয়ে। রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে নিখোঁজ বুদ্ধিজীবীদের সন্ধানে গিয়ে দেখা চাক্ষুষ অভিজ্ঞতা। ১৯৭২ সালের ২ জানুয়ারি ভাষা সৈনিক অধ্যাপিকা হামিদা রহমানের দৈনিক আজাদ পত্রিকায় প্রকাশিত “কাটাসুরের বধ্যভূমি” শীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছিলেন। কী অকল্পনীয় দৃশ্য দেখেছিলেন তিনি, তার কিছু অংশ জেনে নেওয়া যাক—

“কার্ডিওলজিস্ট ডা. ফজলে রাব্বীর লাশটা তখনও তাজা, জল্লাদবাহিনী বুকের ভেতর থেকে কলিজাটা তুলে নিয়েছে। তারা জানত যে, তিনি চিকিৎসক ছিলেন। তাই তার হৃদপিণ্ডটা ছিঁড়ে ফেলেছে। চোখ বাঁধা অবস্থায় কাত হয়ে দেহটা পড়ে আছে। পাড় থেকে ধাক্কা দিয়ে গর্তের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে। রাব্বী সাহেবের পা দুখানা তখনও জ্বলজ্বল করে তাজা মানুষের সাক্ষ্য দিচ্ছে। নাক, মুখ কিছুই অক্ষত ছিল না। দস্যু হায়েনার নখের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত…।

সামনে চেয়ে দেখি, নিচু জলাভূমির ভিতর এক ভয়াবহ বীভৎস দৃশ্য। চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. আবদুল আলীম চৌধুরীর চোখ দুটো উপড়ানো, শূন্য কোটরে জমে আছে চাপ চাপ কালচে রক্ত। নিষ্প্রাণ পড়ে আছে দেহটা। সেখানে এক নয়, দুই নয়— একেবারে বারো/তেরোজন সুস্থ সবল মানুষ। একের পর এক শুয়ে আছে, প্রত্যেকের দেহটা মোরব্বার মতো কেঁচে ফেলা হয়েছে বেয়নেট দিয়ে…।

এরপর আরও একটু এগিয়ে যেতেই সামনে বড় বড় দুটো মস্ত মানুষ, নাক কাটা, কান কাটা, মুখের কাছ থেকে কে যেন খামচিয়ে মাংস তুলে নিয়েছে হাত-পা বাঁধা…।

আর একটু এগিয়ে যেতেই বাম হাতের যে মাটির ঢিবিটা ছিল তারই পাদদেশে একটি মেয়ের লাশ। মেয়েটির চোখ বাঁধা। মুখ ও নাকের কোনো আকৃতি নেই— কে যেন অস্ত্র দিয়ে তা কেটে খামচিয়ে তুলে নিয়েছে। স্তনের একটি অংশ কাটা.. মেয়েটি সেলিনা পারভীন, সাংবাদিক, শিলালিপির এডিটর…।”

পড়তে পড়তে চোখে ভাসে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে দেখা শহীদ মুনীর চৌধুরীর ক্ষতবিক্ষত চোখ উপড়ে ফেলা লাশের ছবি। তারা কি কখনো ভেবেছিলেন যে তাদের প্রাণের বিনিময়ে যে বাংলাদেশ দিয়ে যাচ্ছেন সেখানে একদিন ৯৯১ জন শিক্ষাবিদ, ১৩ সাংবাদিক, ৪৯ চিকিৎসক, ৪২ আইনজীবী এবং ১৬ শিল্পী, সাহিত্যিক ও প্রকৌশলীর এই শহীদ বুদ্ধিজীবীরা স্রেফ প্রতি বছরে একদিন উচ্চারণ করা গৎবাঁধা বুলির মত কয়েকটা সংখ্যায় পরিণত হবেন? আর সারা বছর রাজত্ব করবে, বুদ্ধিজীবী সেজে বড় বড় বুলি দেবে তাদের হত্যাকারী আলবদরদের উত্তরসূরি ও অনুসারীরা! কি বিচিত্র বিস্ময়কর হিসেব, তাই না?

তথ্যসূত্রঃ

১। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ দেওয়া পান্না কায়সারের জবানবন্দী
২। মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরে/ পান্না কায়সার
৩। বিপ্লবীদের কথা (মাসিক পত্রিকা), শেখ রফিক
৪। ৭১-এর দলিল: বুদ্ধিজীবিদের নিধন চলেছিলো সারা বছর ধরেই/অমি রহমান পিয়াল
৫। জামাতে মওদুদীর খালেক মজুমদার: এ ঘাতক কে চিনে রাখুন

সারাবাংলা/এসবিডিই

ফিচার মুক্তিযুদ্ধ রহমান রা'আদ শহীদ বুদ্ধিজীবীরা কি কেবলই কিছু সংখ্যা মাত্র?

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর