কমরেড মণি সিংহ: বিপ্লবের চারণ কবি
৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৫:২২
ভারতীয় উপমহাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম দিকপাল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের প্রাণপুরুষ, ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি, টঙ্ক আন্দোলনের মহানায়ক, মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা, কৃষক-শ্রমিক তথা মেহনতি মানুষের মুক্তির আন্দোলনের স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীনতা-গণতন্ত্র-জাতীয় মুক্তির লড়াইয়ে কিংবদন্তী কমরেড মণি সিংহের জন্ম ১৯০১ সালের ২৮ জুলাই কোলকাতায়। বাবা কালী কুমার সিংহ, মা সরলা দেবী । বাবার মৃত্যুর পর সাত বছরের মণি সিংহকে নিয়ে তার মা চলে আসেন নেত্রকোণার সুসঙ্গ দুর্গাপুরে এবং সেখানে ভাইদের জমিদারির অংশিদার হয়ে বসবাস শুরু করেন।
স্কুলের শিক্ষা গ্রহণ করার সময় মণি সিংহ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হন। সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ‘অনুশীলন’ দলে যোগ দিয়ে ক্রমেই বিপ্লবী কর্মকান্ডে স্থান করে নেন। ১৯২১ সালে অসহযোগ আন্দোলন ও খেলাফত আন্দোলনের বিপুল গণজাগরণ তরুণ মণি সিংহের মনে গভীর রেখাপাত করে এবং সন্ত্রাসবাদী পদ্ধতি সম্পর্কে তাঁর মনে সংশয় দেখা দেয়। ১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের আদর্শে উদ্বুদ্ধ কমরেড মণি সিংহ ১৯২৫ সালে মার্কসবাদ-লেনিনবাদকে আদর্শরূপে গ্রহণ করেন। কমরেড মণি সিংহ ১৯২৮ সাল থেকে কমিউনিস্ট পার্টির সার্বক্ষণিক কর্মী হিসেবে নিজেকে বিপ্লবী কর্মকান্ডে উৎসর্গ করেন। এ সময় তিনি কলকাতায় শ্রমিক আন্দোলনে একনিষ্ঠভাবে কাজ করতে থাকেন। ১৯৩০ সালের ৯ মে তিনি গ্রেপ্তার হন। ১৯৩৫ সালে জেল থেকে মুক্তি পেলেও নিজ গ্রাম সুসং দুর্গাপুরে তাঁকে অন্তরীণ করে রাখা হয়। এ সময় কৃষক-ক্ষেতমজুরদের পক্ষ নিলে নিজ মামাদের জমিদার পরিবারের সঙ্গে তাঁর বিরোধ তৈরি হয়। পাটের ন্যায্য মূল্য দাবি করে কৃষকদের পক্ষে ভাষণ দিলে তাঁর দেড় বছরের জেল হয়।
১৯৩৭ সালে জেল থেকে বেরিয়ে এলে পার্টির সদস্য বলে তাঁকে জানানো হয়। এরপর দুর্গাপুরে মায়ের সাথে দেখা করে কলকাতার শ্রমিক আন্দোলনে ফিরে যেতে চাইলেও, এলাকার মুসলমান কৃষক ও গারো, হাজং প্রভৃতি আদিবাসীরা মণি সিংহকে ‘টংক প্রথা’র বিরুদ্ধে আন্দোলন করার জন্য বারবার অনুরোধ করতে থাকেন। এরপর মণি সিংহ সর্বতোভাবে টংক আন্দোলনে আত্মনিয়োগ করেন এবং কালক্রমে তিনি এ আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হন। আন্দোলনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেতে থাকলে ১৯৪১ সালে মণি সিংহকে আবার গ্রেপ্তার করে ১৫ দিন আটক রাখা হয়। ছাড়া পেয়ে তিনি পরিস্থিতি বুঝে আত্মগোপনে চলে যান। ১৯৪৪ সালে মণি সিংহ সারা বাংলার কৃষাণ সভার প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালের আগে ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রাম করতে গিয়ে কমরেড মণি সিংহকে অসংখ্যবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জেল-জুলুম-নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পূর্ণ গণতন্ত্র ও শোষণমুক্ত সমাজের আদর্শকে যাঁরা সামনে নিয়ে এসেছেন, মণি সিংহ তাঁদের একজন। আর এ কাজটি করতে গিয়ে তাঁর ওপর নেমে আসে পাকিস্তান সরকারের দমন-নির্যাতন ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। পাকিস্তান হওয়ার পর থেকে প্রায় ২০ বছর তিনি আত্মগোপনে থাকতে বাধ্য হয়েছেন।
১৯৪৮ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিতীয় কংগ্রেসে তিনি পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। একই কংগ্রেসে ৬ মার্চ ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের জন্য পৃথক পার্টি গঠনের সিদ্ধান্ত হলে তিনি পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন এবং একই সাথে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ৬ মার্চ ১৯৫১ সালে কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিতীয় সম্মেলন এবং ১৯৬৫ সালে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সম্মেলনে তিনি পার্টির সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৮ সালে কমিউনিস্ট পার্টির চতুর্থ সম্মেলনে (যেটাকে পার্টির প্রথম কংগ্রেস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল) তিনি জেলে থাকাকালীন সময় কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। পাকিস্তানী আমলে কমরেড মণি সিংহ “আজাদ” ছদ্দনামে সমধিক পরিচিত ছিলেন। আর রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ও কমরেডবৃন্দ তাকে “বড় ভাই” নামে ডাকতেন।
১৯৬৯ সালের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের চাপে অন্যান্য রাজবন্দীর সাথে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন। এ বছর ২৫ মার্চ পুনরায় সামরিক আইন জারি হলে তিনি জুলাই মাসে আবার গ্রেপ্তার হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বন্দীরা রাজশাহীর জেল ভেঙ্গে তাকে মুক্ত করেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমাজতান্ত্রিক শিবিরের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থন-সাহায্য-সহযোগিতা আদায়ে কমরেড মণি সিংহের অবদান ছিল অবিসংবাদিত। তিনি ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি, ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা বাহিনী গড়ে তুলে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর সাথে ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি, ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা বাহিনী গঠন বিষয়ে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধি দলের আলোচনা হয়। সে সভায় ভারত সরকারের পক্ষে ইন্দিরা গান্ধি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব পি এন হাসকার, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ডি পি ধর, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ও সাংসদ কমরেড ভূপেশ গুপ্ত আর সিপিবির পক্ষে কমরেড মণি সিংহ, পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক কমরেড বারীণ দত্ত (আব্দুস সালাম), কমরেড অনিল মুখার্জী, কমরেড খোকা রায় ও কমরেড মোহাম্মদ ফরহাদ উপস্থিত ছিলেন।
স্বাধীনতার পর কমরেড মণি সিংহ পূর্ণ গণতান্ত্রিক এবং শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে সোচ্চার হন। ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত সিপিবির দ্বিতীয় কংগ্রেস এবং ১৯৮০ সালে অনুষ্ঠিত তৃতীয় কংগ্রেসে কমরেড মণি সিংহ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর কমিউনিস্ট পার্টি আবার বেআইনি ঘোষিত হয়। জেনারেল জিয়ার সামরিক শাসন চলাকালে ১৯৭৭ সালে মাঝামাঝিতে ৭৭ বছর বয়সী মণি সিংহ আবার গ্রেপ্তার হন। জিয়ার শাসনামলে তাকে ৬ মাস কারাগারে অন্তরীণ থাকতে হয়।
কমরেড মণি সিংহের আত্মজীবনী “জীবন সংগ্রাম” এ তার পারিবারিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিবরণী ছাড়াও বিংশ শতাব্দিতে ভারতবর্ষের প্রায় একশ বছরের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আন্দোলন ও গ্রাম-বাংলার সমাজচিত্র অত্যন্ত সহজভাবে ফুঁটে উঠেছে। “জীবন সংগ্রাম” বইতে কমরেড মণি সিংহের বৈচিত্রময় ও সংগ্রামী জীবনের নানা কথা উঠে এসেছে।
১৯৪৫ সালের ৪ ও ৫ আগস্ট নেত্রকোণায় সারা ভারত কৃষাণ সভার নবম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সম্মেলনে অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি ছিলেন কমরেড মণি সিংহ। সারা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রখ্যাত কৃষক নেতৃবৃন্দ ঐ সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন কমরেড মোজাফ্ফর আহমেদ, পি সি যোশী, ভবানী সেন, বঙ্কিম মুখার্জী, হরকিষাণ সিং সুরজিৎ, নাম্বুদ্রিপাদ, কল্পনা যোশী প্রমুখ। নেত্রকোণার নাগরা মাঠে ঐ সম্মেলন সফল করার জন্য হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করেছিলেন। সম্মেলনে প্রায় এক লক্ষ জন নারী-পুরুষ, কৃষক, মধ্যবিত্ত, আদিবাসী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন।
সম্মেলনের প্রচারের জন্য গানের দল গঠন করা হয়েছিল। তারা বৃহত্তর ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে টঙ্ক আন্দোলন, তেভাগা আন্দোলন ও কমরেড মণি সিংহ নিয়ে রচনাকৃত গান পরিবেশন করেন এবং নেত্রকোণায় কৃষক সম্মেলনে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানান। ১৯৮৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমি প্রকাশিত “নিরারণ পণ্ডিতের গাণ” সংকলনে তার কিছু নজির পাওয়া যায়। গানগুলোর স্বরলিপিকার প্রখ্যাত শিল্পী কঙ্কন ভট্টাচার্য।
সে সব গানের মধ্যে রয়েছে:
“হারে ও কৃষক ভাই
মোদের কি আর বাঁচবার উপায় নাই।
হায় হায়রে-
থালা বাসন হাঁড়িকুরি গৃহস্থের বেসার
ক্রম ক্রমে বিক্রী করে চলিছে সংসার
অভাবগ্রস্ত পায় সমস্ত গৃহস্থ বেকার
অস্থি চর্মসার হইয়াছে থাকি অনাহার।———”
আবার,
“একসাথে চল গড়বো মোরা রাঙ্গা দুনিয়া
সবে মিলে থাকবো সেথা বিভেদ ভুলিয়া।
ভাবি সমাজ গড়বো মোরা দুঃখ করবো দূর
হাটে মাঠে তুলবো রে ভাই আনন্দেরই সুর।——–”
কমরেড মণি সিংহের সংগ্রাম ও কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে রচনা করা হয় এ রকম গান-
“শুনেন যত দেশবাসী শুনেন ভাই গরীব চাষী শুনেন সর্বজন
কৃষক দরদী মণি সিংহের বিবরণ
সংক্ষেপেতে দুই এক কথা হে করিব বর্ণন——–”
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুদানে সুসং দুর্গাপুরে টঙ্ক শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের পাশে কমরেড মণি সিংহ স্মৃতি জাদুঘর নির্মিত হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ যৌথভাবে জাদুঘর উদ্বোধন করেন ঐতিহাসিক টঙ্ক আন্দোলনের প্রত্যক্ষদর্শী মহীয়সী নারী শ্রীমতি কুমুদিনী হাজং ও শ্রী দূর্গাপ্রসাদ তেওয়ারী, প্রবীণ কমিউনস্ট নেতা কমরেড সহিদুল্লাহ চৌধুরী ও কমরেড মনজুরুল আহসান খান।
কমরেড মণি সিংহ ট্রাস্ট এই জাদুঘর পরিচালনা করছে। জাদুঘরের গ্যালারিগুলোতে মণি সিংহের সংগ্রামী জীবন, তার সহযোদ্ধা, ব্যক্তিগত ব্যবহার্য সামগ্রী, নানা লড়াই-সংগ্রামের স্মৃতিচিহ্ন শোভা পাচ্ছে। প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে তার আদর্শের অনুসারী ও সাধারণ মানুষ এই জাদুঘর পরিদর্শনে যাচ্ছেন। এখানে একটি পাঠাগারও রয়েছে।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন এবং পাকিস্তানী ঔপনিবেশিক শাসন আমলে ১৯২৮ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত ৪২ বছরের মধ্যে কিমরেড মণি সিংহ প্রায় ৩৭-৩৮ বছর হয় জেলে না হয় আত্মগোপনে ছিলেন। কমরেড মণি সিংহ ১৯৫৫ সালে প্রখ্যাত কৃষক নেতা কমরেড অণিমা সিংহের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
১৯৯০ সালের ৩১শে ডিসেম্বর কমরেড মণি সিংহ মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর স্মরণে প্রতি বছর নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুরে টঙ্ক স্মৃতি স্তম্ভ প্রাঙ্গণে সাতদিন ব্যাপী কমরেড মণি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এই মেলায় কমরেড মণি সিংহের জীবন ও কর্ম, বাংলাদেশে কমিউনিস্ট আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, জনমানুষের অধিকার, বাঙালী সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা, কর্মশালার পাশাপাশি লোকজ মেলার সকল উপাদান থাকে। জাতীয় বরেণ্য রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতিসেবীসহ সকল শ্রেণি-পেশার নারী ও পুরুষের মিলনমেলায় পরিনত হয় এই মেলা। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় গান, নাচ, আবৃতি, ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কমরেড মণি সিংহকে ২০০৪ সালে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করেন।
শান্তি, গণতন্ত্র ও সমাজপ্রগতির সংগ্রাম এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন ও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে মৈত্রী সুদৃঢ়করণে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রসমূহের ইউনিয়নের (ইউএসএসআর) সুপ্রিম সোভিয়েত ১৯৮০ সালের ২৮ জুলাই আশিতম জন্মদিনে কমরেড মণি সিংহকে “দ্য অর্ডার অব ফ্রেন্ডশীপ অব পিপলস” এ ভূষিত করেন।
এছাড়াও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সমাজতান্ত্রিক বুলগেরিয়া সরকার তাঁকে “ডিমিট্রভ পদক” এবং চেকোশ্লোভাকিয়া সরকার সম্মাননা পদক প্রদান করেন।
শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে কমরেড মণি সিংহ আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবেন। কবি শামসুর রাহমান তাকে উদ্দেশ্য করে “ভাষ্বর পুরুষ” কবিতায় যথার্থই লিখেছেন “—-ভাস্বর পুরুষ, সংগ্রামকে জীবনের সানসত্য জেনে তুমি নিয়ত হেঁটেছো পথে। যেখানে তোমার পদচ্ছাপ পড়েছে প্রগাঢ় হয়ে, সেখানেই সাম্যবাদ চোখ মেলবার অভিলাষ করেছে প্রকাশ। কী ব্যাপক মমতায় তাকিয়েছো বার বার ভবিষ্যতের দিকে। প্রগতির প্রসিদ্ধ চারণ জাগো, জেগে ওঠে, চেয়ে দ্যাখো- করোনি শাসন কোনোদিন তবু বাংলাদেশ আজ তোমাকেই গার্ড অব অনার জানায়।”
লাল সালাম কমরেড মণি সিংহ!
লেখক: সদস্য, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সূত্রাপুর থানা কমিটি, সাবেক সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদ
সারাবাংলা/এসবিডিই