Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ক্ষমার ১০ দিন


২৯ মে ২০১৮ ১৭:৪০

।। জহির উদ্দিন বাবর ।।

পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম ১০ দিন পেরিয়ে আমরা দ্বিতীয় ১০ দিনে উপনীত। রমজানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই ১০টি দিন। এই সময়ে মুমিনের পরম কাঙ্ক্ষিত মাগফেরাত বা ক্ষমা করে দেওয়া হয়।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘এটা এমন একটি মাস যার প্রথম ১০ দিন রহমতের ঝরনা ধারায় পরিপূর্ণ; দ্বিতীয় ১০ দিন ক্ষমা ও মাফের জন্য সুনির্দিষ্ট এবং শেষ ১০ দিন জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও নিষ্কৃতি লাভের। আর যে ব্যক্তি এ মাসে নিজের অধীন লোকদের পরিশ্রম ও মেহনত কমিয়ে দেবে, আল্লাহ তায়া’লা তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করবেন।’

রমজানের প্রতি রাতে ও দিনে অগণিত লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় এবং মুমিনের দোয়া কবুল হয়। এই মাসে পারলৌকিক মুক্তি অর্জনের বিষয়টি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘মাহে রমজানের প্রতিরাতেই একজন ফেরেশতা ঘোষণা করতে থাকেন, হে পুণ্য অন্বেষণকারী, অগ্রসর হও। হে পাপাচারী, থামো, চোখ খোলো। তিনি আবার ঘোষণা করেন, ক্ষমাপ্রার্থীকে ক্ষমা করা হবে। অনুতপ্তের অনুতাপ গ্রহণ করা হবে। প্রার্থনাকারীদের প্রার্থনা কবুল করা হবে।’

যাবতীয় পাপ-পঙ্কিলতা, অন্যায়, অপরাধমূলক চিন্তাভাবনা ও অসৎ কাজকর্ম থেকে বিরত থেকে রমজান মাসে রোজাদার যখন রোজা রেখে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে সৎ পথে পরিচালিত হন, তখন প্রথম ১০ দিন তিনি আল্লাহর রহমত তথা দয়া, করুণা ও অনুগ্রহ লাভে ধন্য হন। এরপর যখন এমনিভাবে রমজান মাসের আরও ১০ দিন অতিবাহিত করেন, তখন আল্লাহ তায়ালা তার পাপগুলো ক্ষমা করে দেন। এরপরও যখন তিনি মাহে রমজানের শেষ ১০টি দিন এভাবে সিয়াম সাধনার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করেন, তখন রোজাদার জাহান্নাম থেকে নাজাত বা মুক্তির গ্যারান্টি লাভে ধন্য হন।

বিজ্ঞাপন

রাসুল (সা.) বলেন, ‘যারা রমজানের চাঁদের প্রথম তারিখ থেকে শেষ দিন পর্যন্ত রোজা রেখেছে, তারা সেদিনের মতোই নিষ্পাপ হয়ে যাবে, যেদিন তাদের মাতা তাদের নিষ্পাপরূপে জন্ম দিয়েছেন।’

বান্দাকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালা বিভিন্ন উপলক্ষ খুঁজে থাকেন। রমজান সে ধরনের একট বড় উপলক্ষ। এই মাস উপলক্ষে অগণিত পাপী-তাপী বান্দাকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আর আল্লাহর ক্ষমার সেই ভাণ্ডারটি পুরোপুরি খুলে দেন রমজানের মধ্য দশক বা মাগফেরাত পর্বে। আমাদের জীবনে পাপের কোনো শেষ নেই। একমাত্র আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ ছাড়া আমরা কেউই ক্ষমার আশা করতে পারি না। রমজান আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের বিশেষ উপলক্ষ। এই মাসে কেউ আল্লাহর কাছে প্রকৃত অর্থে ক্ষমা চাইলে তিনি ক্ষমা করে দেবেন বলে নিজেই ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহর দেওয়া এই মহা সুযোগকে হেলাফেলায় নষ্ট করা কারও জন্য উচিত নয়। এই রমজানে বেশি বেশি তওবা-ইস্তেগফারের মাধ্যমে আমরা সহজেই পারি আমাদের বিগত দিনের পাপগুলো ক্ষমা করিয়ে নিতে। আল্লাহর দেওয়া সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাগফেরাত বা ক্ষমা লাভ করতে পারলেই রমজান হবে সার্থক।

লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরাম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর