বাবা মানে নির্ভরতার আকাশ
১৬ জুন ২০২৪ ২৩:৪১
বাবা! দুই অক্ষরের এই শব্দে মিশে আছে কত শত ভালোবাসা। বাবা মানে নির্ভরতার আকাশ, বাবা মানে আশ্রয়স্থল, বাবা মানে নিরাপত্তার চাদর। বাবা শাশ্বত, বাবাই চির আপন। বটবৃক্ষ বাবা প্রখর রোদে সন্তানের শীতল ছায়া। বাবা তার সন্তানকে নিজের জীবনের চেয়ে বেশি ভালবাসেন, ভালো রাখেন। বাবারা সারাজীবন থাকেন না, সবার কপালে বাবার ভালোবাসা জুটে না। তবুও বাবার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা চিরন্তন, প্রতিদিনের, প্রতিক্ষণের।
প্রতিবছর জুন মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্বের ৫২টি দেশে বাবা দিবস পালিত হয়। এ হিসাবে এবারের বাবা দিবস পালিত হচ্ছে আজ ১৬ জুন। বাবাকে ভালোবাসতে বিশেষ দিনের প্রয়োজন হয় না। তবুও বাবা দিবস আরও একবার বাবাদের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশের এক মুহূর্ত। এবারের বাবা দিবসে বাবাকে নিয়ে তেমনই কিছু আবেগ আর ভালোবাসা প্রকাশের মুহূর্তগুলো সারাবাংলাকে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কয়েজন তরুণ শিক্ষার্থী।
সন্তানের মাথার ছায়া বাবা
কাব্য সাহা, ফার্মেসি বিভাগ, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
বাবা! খুব সহজেই বলা যায় কিন্তু এর মর্ম বুঝতে গেলে খুঁজে পাওয়া যায় এই মানুষটির প্রকৃত বাস্তবতা। হাজার অসাধ্যকে সাধন করে যে হাসিমুখে তৃপ্তির ভাব দেখান, তিনিই বাবা। বাবার মহত্ত্ব অনেক। বাবা কেবল একজন মানুষ কিংবা স্রেফ একটি সম্পর্কের নাম নয়, বাবার মাঝে জড়িয়ে আছে বিশালত্বের এক অদ্ভুত মায়াবী প্রকাশ। সন্তানের মাথায় প্রতিটি মুহূর্তে ছায়ার মতো অবস্থান বাবার। এ জন্যই তো বাবা নামটা উচ্চারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যেকোনো বয়সী সন্তানের হৃদয়ে শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা আর ভালোবাসার এক অনুভব জাগে।
বাবা কতভাবে অবদান রেখে যান, তা চুলচেরা বিশ্লেষণ করেও কেউ বের করতে পারবে না। বাবার কাঁধটা অন্য সবার চেয়ে বেশি চওড়া বলে সমাজ-সংসারের এত দায়ভার অবলীলায় বয়ে বেড়ান। বাবার ছায়া সবকিছু শক্ত করে আগলে রাখেন। পৃথিবীর ভাগ্যবান সন্তানরা যারা বাবার সঙ্গে এ বাবা দিবস কাটাচ্ছেন, প্রাণভরে বাবাকে ভালোবাসুন, বাবাদের ভালো রাখুন। কারণ পৃথিবীর সব বাবা তার সন্তানদের জন্য অগণিত ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং করে যাচ্ছেন।
ভালোবাসার আশ্রয়স্থল বাবা
নাজমুন নাহার মুনা, ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
বাবাকে স্মরণের জন্য শুধু একটি দিন নয়, বরং বছরের প্রতিটি দিনই প্রয়োজন। তবে যারা বাবা দিবস পালন করে তারা শুধু একদিনই বাবাকে স্মরণ করে বাকি সময় ভুলে থাকে, বাস্তবতা এমন নয়। একদিন বিশেষভাবে স্মরণ করার মানে কখনোই ৩৬৪ দিন ভুলে থাকা নয়। অনেক ক্ষেত্রে বাবাকে শুধু খাবার জোগানদাতা হিসেবে দেখা হয়। এ ক্ষেত্রে যে বাবারা অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল, তারা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের শিকার হয়। বর্তমান একচেটিয়া পুঁজিবাদের যুগে সব সামাজিক সম্পর্কই অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হচ্ছে। ফলে মূল্যবোধের অবক্ষয় কিংবা দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটছে। এতে দেখা যাচ্ছে বাবা বৃদ্ধ হলে সন্তানরা তাদের দেখভাল করে না, অবহেলা করে। বাবারা যেভাবে দিনরাত পরিশ্রম করে সন্তানের ভরণপোষণের চেষ্টা করছে, সেটাই শ্রদ্ধার যোগ্য। বাকি আর কিছু লাগে না।
আশা রাখছি বাবা দিবস হয়ে উঠবে বাবার প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও বন্ধুত্ব প্রকাশ করার উপযুক্ত মাধ্যম এবং বাবাদেরকে কষ্ট দেওয়া এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদের কণ্ঠ। বাবা দিবসে বিশ্বের সব বাবার প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। পৃথিবীর সব বাবা ভালো থাকুক।
আদর্শের প্রতিচ্ছবি ‘বাবা’
রওশন জাহান সুমাইয়া, ইংরেজি বিভাগ, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি
বাবার প্রতি ভালোবাসার কথা কখনো বলে শেষ করা যাবে না। সন্তানের বিশ্বাস, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, ভরসা— সবকিছুর মধ্যে যিনি বিদ্যমান থাকেন, তিনি বাবা। অথচ তার প্রতি ভালোবাসা কখনো প্রকাশ করা হয়ে ওঠে না। প্রতিটি বাবা তার সন্তানের জন্য প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি সেকেন্ডে ভাবতে থাকেন। কিছু চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পূরণ করার চেষ্টা করেন। মাথার ওপর ছাদ হয়ে আগলে রাখেন আমাদের। নিজের সব সুখ-আরাম বিসর্জন দিয়ে আমাদের মানুষ করার চেষ্টা করেন। আমরা ভুল পথে গেলে সঠিক পথটি দেখান। একদম ছায়ার মতো সবসময় পাশে থাকেন। বাবার প্রতি ভালোবাসা এক পৃথিবী সমান লিখলেও শেষ হওয়ার নয়। অথচ আমরা বড় হলে এই মহান চালিকাশক্তির কথা ভুলে যাই।
এই বাবা দিবসে পৃথিবীর সব বাবাকে জানাই শ্রদ্ধা, ভালোবাসা। আসলে শুধু একটি বিশেষ দিনে নয়, প্রতিটি দিনেই বাবার প্রতি ভালোবাসা-শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হবে। বৃদ্ধ বয়সে তাদের আগলে রাখতে হবে। কারণ বাবা হলো আদর্শ, শ্রদ্ধা ও সম্মানের প্রতিচ্ছবি।
সফলতার বীজ রোপণকারী একজন বাবা
শিরিন সুলতানা, অ্যাকাউন্টিং বিভাগ, ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ, গাজীপুর
‘বাবা’ ছোট্ট একটি সুমধুর শব্দ। বাবা শব্দটি মস্তিষ্কে স্মরণ মাত্রই হৃদয় শীতল হয়ে যায়। বাবা যে এক নিরাপদ আশ্রয়। বাবা মানে একজন আদর্শ সৈনিক। সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে একজন ন্যায়পরায়ণ প্রতিনিধি। বাবার কাছে সন্তান হলো সমতল ভূমির মতো, যিনি নিজের জীবন বাজি রেখে শুধু উৎসর্গ করেন সন্তানের জন্য। কিছুতেই কার্পণ্য করেন না। বাবা শুধু একটি শব্দই নয়, অদম্য উচ্ছ্বাস-অনুপ্রেরণা ও অনিবর্তিত শক্তি, যে শক্তি রূপান্তরিত হয়ে সন্তানের সুন্দর জীবনমান উন্নয়নে অপরিসীম ভূমিকা পালন করছে। বাবার আদর, সোহাগ, স্নেহ, ভালোবাসা সন্তানের কাছে সমানভাবে ছড়িয়ে যায়। সর্বোপরি বাবা একজন সফলতার বীজ রোপণকারী, যিনি ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখিয়ে চলছেন। হোঁচট খেলে বুকে আগলে নিয়ে অনুপ্রেরণা উৎসাহিত করছেন। নিজের হাজার ইচ্ছা ত্যাগ করে সন্তানের ইচ্ছা পূরণ করছেন।
বাবারা সন্তানদের জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য উজ্জীবিত করেন। সন্তান যখন জীবন সংগ্রামে থমকে যায়, পেছন থেকে বাবা এসে হাল ধরেন। বাবার চোখ দিয়ে সন্তানেরা সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা খুঁজে বেড়ায়। বাবা, আপনাকে খুব ভালোবাসি, আকাশ সমান। কিন্তু বলা হয় না, অজানা এক ভয়ে। বাবা, খুব ইচ্ছা করে আপনাকে জড়িয়ে ধরে বলি, ভালোবাসি, খুব ভালোবাসি।
ভালো থাকুক পৃথিবীর প্রতিটি বাবা
ফজলে এলাহী ফুয়াদ, ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
বাবা! খুব ছোট একটি শব্দ, কিন্তু এর ব্যাপ্তি বিশাল। সন্তানের কাছে বাবারা হলো বটবৃক্ষের ছায়ার মতো। কখনো শাসন, কখনো আবার আদর, কখনো না প্রকাশ করা গভীর ভালোবাসায় যিনি নিজেকে উজাড় করে দেন তিনি। সম্পর্কে বাবা হলেও তার মহত্ত্ব কখনো পরিমাপযোগ্য নয়। বাবাদের ভালোবাসা, শ্রম, ঘাম আর চিন্তার গভীরতা লুকিয়ে থাকে সচরাচর সেটা আমরা দেখি না। তাই তো এই মানুষটির আড়ালে খুঁজে পাওয়া যায় একজন সত্যিকারের নায়কের প্রতিচ্ছবি।
বাবা সবসময় সবার সঙ্গে খুব কথা কম বলেন, কখনো কখনো অভিমান করেন অনেক বিষয়েই। কিন্তু বাবার দায়িত্ববোধ, আগলে রাখা, খেয়াল রাখার বিষয়টি আমরা অনেকেই ভুলেই যাই। বাবা অনেক সময় সন্তানদের রাগ-অভিমানে পরিণত হন। কিন্তু সত্যি বলতে বাবার ভালোবাসার ঋণ কখনো শোধ হওয়ায় নয়। বাবা তার সন্তানদের কতটা ভালোবাসেন, তা পরিমাপযোগ্য নয়। সন্তানরা সারাজীবন তার বাবার স্নেহের পরশে থাকতে চায়। প্রতিবার বাবাকে সঙ্গে নিয়েই বাবা দিবস পালন করতে চাই। ভালো থাকুক পৃথিবীর প্রতিটি বাবা।
পরম পূজনীয় বাবা
মিথিলা দেবনাথ ঝিলিক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
বাবা! দুই অক্ষরের এই শব্দটির তাৎপর্য দুই কোটি শব্দ দিয়েও ব্যাখ্যা করা সম্ভব না। বাবা মানে আস্থার সাগর, ঝড়-ঝঞ্ঝাটে নির্ভরতা, শক্ত খুঁটির ভর। শরীরের রক্ত পানি বানিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, নিজের শারীরিক সুস্থতার তোয়াক্কা না করে সন্তানের মুখে হাসি ফোটানো, সন্তানের সব চাহিদা পূরণ করার মানুষটি হচ্ছেন বাবা। বাবার স্নেহ অবারিত ধারায় শুধুই সন্তানের জন্য। বাবার প্রতি সন্তানের চিরন্তন ভালোবাসার প্রকাশ প্রতিদিনই ঘটে। তারপরও বাবার জন্য বিশেষ দিন হিসেবে প্রতি বছর বাবা দিবস পালন করা হয়। পৃথিবীর সব বাবার প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের ইচ্ছা থেকেই শুরু এই দিবসের। কিন্তু পৃথিবীর প্রতিটি বাবাই যেন এক একজন সুপার হিরো। আর এই সুপার হিরোদের জন্য কেবল একটি দিন নির্দিষ্টভাবে পালনের যথাযথ কারণ খুঁজে পাওয়া মুশকিল।
বাবাকে ভালোবাসে না এমন সন্তান খুঁজে পাওয়া ভার! বাবা সব সন্তানের কাছেই পরম পূজনীয়। সন্তানের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় বাবা সবসময় ভালো থাকুক। পৃথিবীর সব বাবাকে জানাই বাবা দিবসের শুভেচ্ছা।
বাবা ছাড়া জীবন অপূর্ণ
জুবায়েদুল হক রবিন, ইংরেজি বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
বাবা হলেন স্রষ্টার জলজ্যান্ত রূপ, যিনি আমাদের সব বাধা-বিঘ্ন থেকে রক্ষা করেন। সন্তানের কাছে বাবা হলো আদর্শ। বাবা ছাড়া একটি দিনও কল্পনাই করা যায় না। প্রত্যেকের জীবনে বাবাই সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে তিনি সন্তানের পাশে থাকেন। সন্তান সবসময় ভালো কিছু করার অনুপ্রেরণা বাবার কাছ থেকেই পায়। সব পরিস্থিতিতে ত্যাগ করা, সততার সঙ্গে জীবন পরিচালনা করা শেখায় বাবা নামক শব্দটি। পড়ালেখার বাইরেও যেন তার সন্তান মানুষের মতো মানুষ হতে পারে, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে, সেই পরামর্শই বাবা সবসময় দিয়ে থাকেন। বাবা পাশে থাকলে প্রতিটি মুহূর্তের পরিপূর্ণতা খুঁজে পাওয়া যায়। বাবাদের পরিশ্রম ও ত্যাগেই পরিবারের সমৃদ্ধি। তাই সন্তানদের উচিত বাবাদের যথার্থ সম্মানের মাধ্যমে প্রতিটি দিনকে বাবা দিবসের সমতুল্য গণ্য করা।
বাবারা ছোট-বড় যে কাজই করুক না কেন, তারা তাদের সন্তানের দায়িত্ব ও কতর্ব্য পালনে কখনও অবহেলা করেন না। কিন্তু বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপটে দেখা যায় সন্তানদের তাদের বাবাদের প্রতি অবহেলা ও অনাদরের ছবি, যা কখনই কাম্য নয়। বাবা হলো আদর্শের, শ্রদ্ধার ও সম্মানের প্রতিচ্ছবি।
বৃদ্ধ বয়সে সন্তানদের কোলে হোক বাবাদের আশ্রয়স্থল
শাহরিয়ার কবির রিমন, আইন বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
বাবা তার ভালোবাসা প্রকাশে কখনও কমতি রাখেননি, যদিও বাবাদের ভালোবাসা প্রকাশের পদ্ধতি আলাদা। তারা মুখে ভালোবাসি না বললেও ছেলেমেয়েদের জন্য নিঃস্বার্থভাবে ত্যাগ করতে দ্বিধা বোধ করেন না। একজন বাবা তার সবটুকু দিয়ে আগলে রাখেন পরিবারকে, নিঃস্বার্থভাবে পরিবারের সবার চাহিদা পূরণ করেন। তার জীবনের সব সুখ সন্তানের খুশির মধ্যে সমর্পণ করেন। যত কষ্টই হোক না কেন, সন্তানের চাহিদা পূরণের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যান সবসময়। বাবারা সন্তানের মুখের হাসির জন্য নিঃশব্দে কাজ করে যান। এত কিছুর পরও বাবাকে যেন ঠিক ধন্যবাদ জানানো কিংবা বাবার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ হয়ে ওঠে না। বাবা দিবসে সন্তানদের সামনে সুযোগ করে দেয় বাবাকে ধন্যবাদ জানানোর।
অনেক সন্তানই আছে যারা পিতামাতার দেখাশোনার প্রতি খুব একটা মনোযোগী নয়। এ কারণে অনেক মা-বাবা বৃদ্ধ বয়সে নিঃসঙ্গ থাকেন। দুঃখজনক হলেও সত্য, এই নিঃস্বার্থ মা-বাবার অনেক সময়ে শেষ ঠিকানা হয় বৃদ্ধাশ্রম। বাবা দিবস এলেই সন্তানদের চোখের সামনের পর্দাটি খুলে ফেলে তাদের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
বাবার জন্য আলাদা দিবসের প্রয়োজন নেই
পাপড়ি রাণী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
বাবার জন্য আলাদা কোনো দিবসের প্রয়োজন নেই। তবু আনুষ্ঠানিকভাবে যদি বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ থাকে, মন্দ কী! এ চিন্তা থেকেই বিশ্ব মা দিবসের আদলে পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব বাবা দিবস। মায়ের পাশাপাশি বাবাও যে সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল, এটা বোঝানোর জন্যই এ দিবস পালনের শুরু। বাবার চোখে সব সন্তানই সমান। কিন্তু মেয়ে সন্তানরা বোধহয় একটু বেশিই আদর পেয়ে থাকে। ফলে মেয়ের বিয়ের সময় সবচেয়ে বেশি কষ্ট পান বাবাই। হিন্দুরীতির বিয়েতে যখন বাবা ‘কন্যাদান’ করেন, তখন তার কান্নায় আর্দ্র হয়ে ওঠেন উপস্থিত সবাই। বাবার প্রতি মেয়েরও রয়েছে গভীর অনুভূতি। সব মেয়েই প্রথম যে পুরুষের ব্যক্তিত্বে আকৃষ্ট হয়, তিনি হলেন বাবা। আর সে জন্যই বিদায় বেলায় নিঃশব্দ অশ্রু গেয়ে ওঠে। ছেলেদের কাছেও বাবা অতুলনীয়। শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার সঙ্গে ভয়ের এক অম্ল-মধুর সম্পর্ক বাবা আর ছেলের।
বাবার ভয়ে মায়ের আঁচলে মুখ লুকানোর পর মুহূর্তে বাবার কাছে গিয়ে আবারও আবদার করা, একটু বড় হয়ে বাবার সঙ্গে সংসারের নানা বিষয়ে আলোচনা করা— এসব মুহূর্তও মধুর। বয়স হলে বাবার দায়িত্বও কাঁধে তুলে নেয় ছেলেই। বাবাকে একটু আনন্দে রাখতে ছেলেরাও বিসর্জন দেয় নিজের সুখ শান্তি। সব মিলিয়ে বিশ্ব বাবা দিবসের জন্য অকৃত্রিম ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে সবাইকে।
সারাবাংলা/টিআর