Sunday 08 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভিনদেশি সংবাদমাধ্যমে একাত্তরের কথা (প্রথম পর্ব)

ফয়জুল লতিফ চৌধুরী
৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:১৮

বিদেশী আলোকচিত্রীর চোখে একাত্তর। ছবি: আলোকচিত্রী রঘু রাই

বিদেশী সংবাদপত্রে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছিল তার পর্যালোচনা একটি কৌতূহলোদ্দীপক বিষয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের কথা বাদ দিলে বিভিন্ন দেশের সংবাদপত্রে প্রকাশিত অনেক সংবাদ প্রতিবেদন প্রধানত চর্বিত চর্বণ। বেশিাংশ ক্ষেত্রে এগুলো বার্তা সংস্থা এপি বা রয়টার্সের খবরের হুবহু প্রতিলিপি অথবা নিউইয়র্ক টাইমস, লন্ডন অবজারভার, গার্ডিয়ান, ডেইলি টেলিগ্রাফ, ভারতের দ্য স্টেটসম্যান প্রভৃতি সংবাদপত্রের বিলম্বিত প্রতিধ্বনি মাত্র।

বিজ্ঞাপন

এ সত্ত্বেও ১৯৭১-এ আমরা বেশ কয়েকটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দেখি; ১০-১৫ জন সাংবাদিকের একনিষ্ঠ তত্পরতা লক্ষ করি। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে অবগত করার ব্যাপারে সাইমন ড্রিং ও অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের ভূমিকা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বিশেষভাবে লিখিত থাকবে। এছাড়া সিডনি শনবার্গ, মাইকেল লরেন্ট, লেয়ার লেভিন, জ্যাক এন্ডারসন, পিটার ডান, ড্যান কোগিন, নিকোলাস টোমালিন, ক্লেয়ার হোলিংওয়ার্থ, মার্টিন ওলাকট, জন পিলজার, ডেভিড লোশাক, পিটার হ্যাজেলহাস্ট, আর্নড ডি বর্চগ্রেইভ প্রমুখের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এরা বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে অনুপূর্ব আগ্রহী ছিলেন এবং ধারাবাহিকভাবে বিশ্ববাসীকে পাকিস্তানিদের নিপীড়ন ও বাঙালিদের দুর্দশার কথা অবগত করে গেছেন। সর্বোপরি লন্ডন থেকে প্রচারিত বিবিসি রেডিওর অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ব্রিটিশ সাংবাদিক মার্ক ট্যালির সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ ঘনিষ্ঠ। তিনি প্রতিদিন সীমান্ত, শরণার্থী শিবির ও যুদ্ধক্ষেত্র ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করেছেন; যা বিবিসি রেডিওতে অবিলম্বে প্রচারিত হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদনগুলো শ্রুতলিখনপূর্বক গ্রন্থাকারে প্রকাশের উদ্যোগ কারও নেয়া দরকার।

বিজ্ঞাপন

লন্ডনবাসী ব্রিটিশ নাগরিক শাহাবুদ্দিন চৌধুরী ১৯৭১ সালে ব্রিটেন থেকে প্রকাশিত অনেক পত্রিকার শত শত কর্তিকা সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু তা তিনি আদৌ ব্যবহার করেননি বা কাউকে দিয়ে যাননি। ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর অনেক সংবাদ প্রতিবেদনের ডিজিটাল অভিলেখাগার গড়ে তুলেছে। তবে ইন্টারনেটেও সহস্রাধিক প্রতিবেদনের প্রতিলিপি পাওয়া যায়। লভ্য তথ্যাবলি বিশ্লেষণ করে প্রতীয়মান হয়, ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধের নিম্নোক্ত আট শ্রেণীর খবরাখবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রাধান্য লাভ করেছিল:

ক. পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ
খ. ভারতে আশ্রয়গ্রহণকারী লাখ লাখ মানুষের দুরবস্থা ও ত্রাণ কার্যক্রম
গ. পূর্ব পাকিস্তানের নির্যাতিত মানুষদের ব্যাপারে অন্যান্য দেশের জনগণ, সরকার ও প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা
ঘ. পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত ঘটনাবলি সম্পর্কে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের বক্তব্য
ঙ. পাকিস্তানের কর্মকাণ্ডে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও চীনের সমর্থন ও সহায়তা
চ. পাকিস্তানের কারাগারে আটক বাঙালিদের শীর্ষ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার প্রক্রিয়া
ছ. ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ
জ. ১৬ ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বিজয় ও বিজয়-পরবর্তী পরিস্থিতি

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর মধ্য দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানে ক্ষমতার পালাবদলের ঐতিহাসিক পর্বটির সূচনা হয়েছিল। এ পালাবদলের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর মানচিত্রে পূর্ব পাকিস্তান ‘বাংলাদেশ’ নামে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে- এ রকম ধারণা কারও ছিল না। তাই পূর্ব পাকিস্তানের জায়মান ঘটনাবলিকে কীভাবে বিবেচনা করা হবে এবং কীভাবে উপস্থাপন করা হবে, সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক মহলে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন বিশ্লেষণ ছিল নগণ্য। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনাবলিকে যেভাবে উপস্থাপন করেছে, তা বহুলাংশে খণ্ডিত ও ধারাবাহিকতাবিহীন। বেশিন্তু, সামগ্রিক ঘটনাবলিকে একটি জনযুদ্ধের পরিবর্তে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সমস্যা হিসেবেই দেখার প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়।

পর্যালোচনা করে প্রতীয়মান হয়, যে কয়েকটি ‘ক্রিটিক্যাল’ কর্মকাণ্ড ও তত্পরতা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গতি-প্রকৃতি ও পরিণতি নির্ধারণ করছে তা বহুলাংশে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি এড়িয়ে গিয়েছিল। এ কারণে নভেম্বরের শেষ ভাগে—যত দিনে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ঘণ্টাধ্বনি বাজতে শুরু করেছে, তখনো—ঘটনাবলিকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করার এবং একটি রাজনৈতিক সমাধান অনুসন্ধানের কথা নির্দ্বলে বলা হয়েছে। বিদেশী সংবাদপত্রের ব্যর্থতার নয়টি ক্ষেত্র নিয়ে উদাহরণমূলক আলোচনা করা যেতে পারে।

ক. ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর নামে গণহত্যা শুরু করেছিল। ইউরোপে ২৭ মার্চের পত্রিকায় সংঘাতময় পরিস্থিতির খবর প্রথম ছাপা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার কয়েকটি পত্রিকা ২৭ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত যে প্রতিবেদনগুলো ছেপেছে সেগুলোর কয়েকটির শিরোনাম এ রকম:

পূর্ব পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত (২৭ মার্চ ১৯৭১ ডেইলি টেলিগ্রাফ),
পূর্ব পাকিস্তান বিচ্ছিন্ন: গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত (২৭ মার্চ ১৯৭১: দ্য বস্টন গ্লোব),
পূর্ব পাকিস্তানে বিদ্রোহীদের নেতা গ্রেফতার (২৭ মার্চ ১৯৭১: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস),
পূর্ব পাকিস্তানে হয়তো ১০ হাজার মানুষ নিহত (২৭ মার্চ ১৯৭১: ইভনিং এক্সপ্রেস),
পাকিস্তান সিভিল ওয়ারের প্রান্তে (২৭ মার্চ ১৯৭১: ব্যাংকক পোস্ট),
রাত্রির পর ঢাকা শহর সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে, বিদ্রোহী শহরে পাকিস্তানের বোমাবর্ষণ (চট্টগ্রামকে বোঝানো হয়েছে) এবং পূর্ব পাকিস্তানে কারা মার খাচ্ছে? (২৮ মার্চ ১৯৭১: সানডে টেলিগ্রাফ),
সেনাবাহিনী ৩৫ জন বিদেশী সাংবাদিককে পাকিস্তান থেকে বহিষ্কার করেছে, পূর্ব পাকিস্তানে মানুষের ওপর সাঁজোয়া বাহিনী ব্যবহার করা হয়েছে এবং পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর অভিযানে নিহত মানুষের প্রকৃত সংখ্যা ধারণার তুলনায় অনেক বেশি (২৮ মার্চ ১৯৭১: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস),
সেনাবাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে পূর্ব পাকিস্তান, পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞে হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি হবে, পূর্ব পাকিস্তানের সংঘাতে মায়া-দয়া বলে কিছু নেই, পূর্ব পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক যাতায়াতের সব পথ বন্ধ, পাকিস্তান: ভেঙে দাও অথবা শাসন করো (২৯ মার্চ ১৯৭১: ডেইলি টেলিগ্রাফ),
ট্যাংকের বিরুদ্ধে কেবল লাঠি আর বল্লম (২৯ মার্চ ১৯৭১: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস),
পূর্ব পাকিস্তানে চরম অরাজকতা (২৯ মার্চ ১৯৭১: দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ড),
বিভক্ত জাতি শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে লিপ্ত হলো, পাকিস্তানের দুঃখজনক পরিণতি এবং আলোচনা স্থগিত করে যখন ট্যাংক নামানো হলো (২৯ মার্চ ১৯৭১: দি এইজ (অস্ট্রেলিয়া),
ট্যাংক চালিয়ে পাকিস্তানে বিদ্রোহ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সেনাবাহিনীর জাল থেকে বেরিয়ে গেল পত্রিকার রিপোর্টার (সাইমন ড্রিংয়ের কথা বলা হয়েছে), (৩০ মার্চ ১৯৭১: ডেইলি টেলিগ্রাফ),
জানা গেছে পূর্ব পাকিস্তানে অনেক মানুষ হত্যা করা হয়েছে (৩০ মার্চ ১৯৭১: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস),
চট্টগ্রামে তুমুল সংঘাত, আগুন জ্বলছে (৩১ মার্চ ১৯৭১: দ্য গার্ডিয়ান),
পাকিস্তান রক্ষার নামে যা হচ্ছে (৩১ মার্চ ১৯৭১: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস)

এ সংবাদ প্রতিবেদনগুলোয় পূর্ব পাকিস্তানের রক্তাক্ত অবস্থার অসহায় চিত্র ফুটে উঠেছে। অন্যদিকে কোনও কোনও প্রতিবেদন ছিল খুবই তাত্পর্যপূর্ণ যেমন ২৮ মার্চ ডেইলি টেলিগ্রাফে প্রকাশিত ‘জিন্নাহ’র ঐক্যের স্বপ্ন রক্তে ডুবে গেল এবং ২৯ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার দি এজ পত্রিকায় প্রকাশিত ‘ঢাকা আর পাকিস্তানের অংশ হিসেবে থাকবে না’ শিরোনামের দুটি প্রতিবেদন। তারা পাকিস্তানের মরণদশার ঘণ্টাধ্বনি শুনতে পেয়েছিল; তারা বাঙালিদের স্বাধীনতার সূর্যোদয়ের ইশারা উপলব্ধি করতে পেরেছিল।

বোঝা যায় কিছু সাংবাদিক পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক অবস্থার গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে পূর্বাপর অবগত ছিলেন। তাদের পক্ষে ২৫-২৭ মার্চের ঘটনাবলি অনুধাবন ও যথাযথ প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করা সম্ভব হয়েছিল। সাংবাদিকের জন্য তথ্যের সঙ্গে কনটেক্সট জানাও জরুরি। কনটেক্সট সম্পর্কে অনবহিতি বা সচেতনতার অভাবে সংবাদ অন্তর্নিহিত তাত্পর্য হারিয়ে ফেলে।

পূর্ব পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযানকে ‘গণহত্যা’ অভিহিত করে একটি প্রতিবেদন লেখেন অ্যান্থনি মাসকারেনহাস। তিনি একজন পাকিস্তানি সাংবাদিক। এ প্রতিবেদন প্রকাশের উদ্দেশ্যে তিনি সপরিবারে পাকিস্তান ছেড়ে গিয়েছিলেন। কোনও সংবাদমাধ্যমে এই প্রথম ‘গণহত্যা’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছিল। ১৯৭১-এর জুনের ১৩ তারিখের সানডে টাইমস পত্রিকায় তা মুদ্রিত হয়েছিল। এর আগে পূর্ব পাকিস্তানের মাটিতে বাঙালিদের ওপর পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর আগ্রাসনকে গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করা হয়নি।

খ. ১৯৭১-এর ২৭ মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করার প্রচারের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছিল সীমিতভাবে। ডেট্রয়েট ফ্রি প্রেস পত্রিকার ২৯ মার্চ ১৯৭১ সংখ্যায় মুদ্রিত সংবাদের শিরোনাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে এবং বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর প্রতি স্বীকৃতি ও সহায়তার আবেদন জানিয়েছে’—একটি শিরোনামে এ রকম স্পষ্টভাবে পূর্ব পাকিস্তানের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরার চমত্কার উদাহরণ দুর্লভ। কালুরঘাটের বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা ছিল খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যার তাত্পর্য বিশ্বের গণমাধ্যম অনুধাবন করতে সক্ষম হয়নি। আমাদের মনে হয়, ১৯৬০-এর দশকের পূর্ব পাকিস্তানের যে স্বাধিকার আন্দোলন ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছিল এবং ১৯৭০-এ পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেজরিটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিজয় অর্জন করেছিল, সেটির তাত্পর্য সম্পর্কে বৈদেশিক সংবাদমাধ্যমের সচেতনতার অভাব ছিল। সংবাদমাধ্যমের অনেকেই বুঝতে সক্ষম ছিলেন না, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ কেবল পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকে প্রতিরোধের সংগ্রাম ছিল না, এটি ছিল বাঙালির স্বাধীনতার শেষ সংগ্রাম।

গ. ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ মধ্যরাতের পরে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পাকিস্তানের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার ও পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা সাংবাদিকদের যথেষ্ট মনোযোগ আকর্ষণ করেনি। হতে পারে তারা প্রকৃত সংবাদ সংগ্রহে সফল হননি। ভারত পাশের দেশ কিন্তু তাদের সংবাদমাধ্যমও খুব বস্তুনিষ্ঠ হতে পারেনি। যেমন ২৫ মার্চ মধ্যরাতে শেখ মুজিবকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আটক করলেও ২৭ মার্চ ১৯৭১ ‘অমৃত বাজার পত্রিকা’য় লেখা হয়, ‘আত্মগোপন করেছেন শেখ মুজিব’। এছাড়া কলকাতার ‘যুগান্তর’ পত্রিকা ২৮ মার্চ সংখ্যার প্রথম পাতায় আট কলাম জোড়া শিরোনাম করে ‘ঢাকায় পাক সামরিক শাসক নিহত’। একই সঙ্গে আরও লেখা হয় ‘সৈন্য পরিচালনাকালেটিক্কা খানের প্রতি গুলিবর্ষণ’। বেশিন্তু, শেখ মুজিবের বরাত দিয়ে লেখা হয়, ‘দু’একদিনের মধ্যেই জয় অনিবার্য’। ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে আটক ছিলেন—তার পক্ষে এ রকম কোনও বিবৃতি দেওয়ার অবকাশ ছিল না।

(চলবে)

লেখক: অর্থনীতিবিদ ও সাহিত্যিক

সারাবাংলা/এসবিডিই

ভিনদেশি সংবাদমাধ্যমে একাত্তরের কথা (প্রথম পর্ব) সংবাদমাধ্যমে একাত্তর

বিজ্ঞাপন

রাজশাহী ওয়াসার ‘ডন’ গ্রেফতার
৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

১ কেজি সোনাসহ চোরাকারবারী আটক
৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:২৭

আরো

সম্পর্কিত খবর