Tuesday 03 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তুষার ঢাকা ধূসর সুইডেনেও প্রাণবন্ত একুশ উদযাপন


২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২০:৫৯

সায়মা রাজ্জাকী, সুইডেন থেকে

সুইডেনের তীব্র শীত, তুষারে ঢেকে আছে পথ প্রান্তর। তার মধ্যেও বিকেলে সেখানে থাকা বাংলাদেশিরা জড়ো হয়েছেন স্টকহোমে বাংলাদেশ দূতাবাসে। উদ্দেশ্য, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০১৮ উদযাপন করবেন নিজের দেশের মানুষদের সঙ্গে।

বুধবার ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিত রেখে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। বিকালে আসেন বাংলাদেশের মানুষেরা। ভিনদেশে এই দূতাবাসই তাদের শিকড়।

পবিত্র কুরআন হতে তিলাওয়াত ও সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর দিবসটি উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনানো হয়।
ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে আগত সকল অতিথি মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব মোঃ নাজমুল ইসলাম-এর নেতৃত্বে দূতাবাস প্রাঙ্গণে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ৫২’র ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বাজে আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি গানটি।

এই সব নয়, অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহিঃ প্রচার অনুবিভাগ একটি সৃজনশীল, মনোমুগ্ধকর অডিও ভিজুয়াল প্রদর্শন করেন, সেখানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মূল সুরটি অনুরণিত হয় যথার্থভাবে। প্রদর্শিত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রচিত গ্রীক শিল্পীর পরিবেশিত একটি ইংরেজি গান। গানটির রচয়িতা বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক তরুণ কর্মকর্তা।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায়ে মুক্ত আলোচনা পর্বে স্থানীয় কমিউনিটির উপস্থিত বক্তাগণ মহান শহীদ দিবসের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, ভাষার জন্য বাঙালিদের আত্মত্যাগের অনন্য দৃষ্টান্ত, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কর্তৃক দিবসটির স্বীকৃতি এবং বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলন ও সর্বোপরি স্বাধীনতা অর্জনে অমর একুশের সুদূরপ্রসারী প্রভাবের দিকসমূহ নিয়ে আলোচনা করেন।

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রদূত জনাব মোঃ নাজমুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে গভীর শ্রদ্ধার সাথে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় ভাষা শহীদদের অমূল্য অবদান, ভাষা আন্দোলন ও তারপরের সব আন্দোলনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর অবদান কৃতজ্ঞতাসহ স্মরণ করেন। কৃতজ্ঞতার সাথে তিনি স্মরণ করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও অসামান্য প্রচেষ্টার, যার ফলে একুশে ফেব্রুয়ারি ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি লাভ করে।

এই গৌরবময় সাফল্য অর্জনের সাথে সম্পৃক্ত অন্যান্যদেরকেও তিনি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন উপস্থিতরা। সুইডেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে সুইডেনের মাটিতে স্থায়ীভাবে একটি শহীদ মিনার স্থাপনে দূতাবাসের ঐকান্তিক ইচ্ছের কথা জানান। তিনি বলেন শীঘ্রই সুইডেন থাকা বাংলাদেশিরা পাবে নিজেদের একটি শহীদ মিনার।

সবশেষে স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশি এবং দূতাবাসের কর্মকর্তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। শিল্পীরা প্রাণ খুলে গান দেশাত্মবোধক গান, পরিবেশন করেন কবিতা। অনুষ্ঠান শেষে রাষ্ট্রদূত শিল্পী ও কলাকুশলীদের শুভেচ্ছা উপহার প্রদান করেন। সবশেষে ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার পরিবেশনের মাধ্যমে শেষ হয় অনুষ্ঠানটি।

সারাবাংলা/এমএ

সুইডেন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর