ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাল রোম দূতাবাস
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:৪৯
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর মাধ্যমে শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে ইতালির রোমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।
একুশের প্রথম প্রহরে দূতাবাস ভবনের প্রাঙ্গণে স্থাপিত অস্থায়ী শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রদূত। এরপর প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাসহ সব স্তরের মানুষ ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
রোম দূতাবাস থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, রাতের শীত উপেক্ষা করে ৫০টির বেশি সংগঠন অংশ নেয় এই আয়োজনে।
এর আগে, ২০ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় রাত ১১টায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এসময় দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় শিল্পীরা একুশের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি’ পরিবেশন করেন। এছাড়া স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত দেশাত্মবোধক গানও পরিবেশন করা হয়। এরপর দূতাবাসের কর্মকর্তারা একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া বাণীগুলো পাঠ করেন।
পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভাষা আন্দোলনে শহিদদের স্মরণ করে বক্তব্য শুরু করেন রাষ্ট্রদূত। এরপর ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরেন তিনি। বলেন, বাঙালি জাতির ও বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় বঙ্গবন্ধু অনবদ্য অবদান রেখেছিলেন। তার নেতৃত্বে ১৯৪৮ সালে প্রথম মাতৃভাষার দাবিতে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়। এ আন্দোলনের জন্য তাকে কারাভোগ করতে হয়েছে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষার সে আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। সেদিন সালাম, রবকত, রফিক, জব্বার, শফিকসহ নাম না জানা অনেকে শহিদ হন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘের ২৯তম সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় বক্তৃতা দিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাভাষাকে বিশ্বদরবারে পরিচয় করিয়ে দেন।
ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ভাষা আন্দোলনই ছিল বাঙালির রাজনৈতিক মুক্তি আন্দোলনের সূতিকাগার। একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা স্বাধিকার ও তা থেকে স্বাধীনতার আন্দোলন শুরু করি। পরে জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এ বছর আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় দেশে ও বিদেশে উদযাপন করছি। বিদেশের মাটিতে বাংলা ভাষার চর্চা ও লালন করার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধন্যবাদ জানিয়ে মুজিববর্ষের সব কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে জাতির পিতার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশ গড়ার কাজে অবদান রাখার আহ্বান জানান তিনি।