ভাই — ছোট একটি শব্দ, অথচ এর গভীরতা যেন এক সমুদ্র ভালবাসা, নির্ভরতা আর স্মৃতির মিশেল। আমাদের জীবনের চলার পথে কিছু সম্পর্ক জন্মসূত্রে তৈরি হয়—ভাই সেই সম্পর্কগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিশুদ্ধ, সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য একটি।
শৈশবের খেলাধুলা, মা-বাবার চোখ ফাঁকি দিয়ে টিভি দেখা, পরীক্ষার আগের রাতে একইসাথে উদ্বিগ্ন হওয়া, কিংবা নিঃশব্দে একে অপরের পাশে থাকা—ভাইয়ের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া এসব মুহূর্ত আমাদের জীবনের এক অমূল্য সম্পদ।
ভাই কেবল রক্তের বন্ধনই নয়, সে একজন গোপন অভিভাবক, এক অসমাপ্ত সাহস। কখনো বন্ধু, কখনো অভিভাবক, আবার কখনো প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে, কিন্তু দিন শেষে তার হৃদয়ে থাকে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। আপনি যখন জীবনে ক্লান্ত হয়ে পড়েন, সে হয়ত কিছু না বলেই পাশে বসে থাকবে—এই নিঃশব্দ উপস্থিতি অনেক বড় শান্তি।
বয়স যতই বাড়ুক, জীবন যতই ব্যস্ত হয়ে উঠুক, ভাইয়ের সঙ্গে কাটানো সোনালি দিনের স্মৃতি সব সময় হৃদয়ে একটা কোমল আলো জ্বেলে রাখে।
প্রতিবছর ২৪ মে পালন করা হয় ভাই দিবস (Brother’s Day)। এই দিনটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হলেও এখন অনেক দেশেই ভাই-বোনদের মধ্যে ভালোবাসা, বন্ধন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি উপলক্ষ হিসেবে পালিত হয়। এটি কোনো ধর্মীয় বা সরকারি দিবস নয়, বরং একটি আবেগঘন সম্পর্ক উদযাপনের দিন।
আজ ভাই দিবসে, চলুন একটু থেমে সেই মানুষটিকে মনে করি—যে আমাদের জীবনের ছায়াসঙ্গী, আমাদের প্রথম খেলনা সঙ্গী, এবং আজও অনেক দুঃসময়ের অবলম্বন। তাকে বলি—‘ধন্যবাদ ভাই, সবসময় পাশে থাকার জন্য’।
ভাই মানে শুধু একটি সম্পর্ক নয়, এটা হলো একটি অনুভব, একটি নির্ভরতা। তাকে ভালোবাসা জানানোর জন্য আলাদা দিবসের দরকার পড়ে না, তবে এই দিনটা হোক সেই অনুভবটাকে আরও গভীর করে তোলার উপলক্ষ।
সময় চলে যায়, জীবন বদলে যায়, কিন্তু ভাইয়ের প্রতি মমতা, স্মৃতি আর সেই নির্ভরতা থেকে যায় একইরকম। কখনো মুখে বলা হয় না, কিন্তু হৃদয়ে লেখা থাকে—‘তুই আছিস বলেই তো এত সাহস করে হাঁটতে পারি জীবনপথে।’
লেখক: স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, সারাবাংলা ডটনেট