মুসল্লাম—এই নামটি উচ্চারণেই যেন এক ধ্বনিত হয় মুঘল দরবারের সুবাস, জমকালো উৎসব, আর ঐতিহ্যের সোনালি রেখা। এর উৎপত্তি আরবি শব্দ ‘মুসাল্লাম’ থেকে, যার অর্থ ‘অখণ্ড’ বা ‘সম্পূর্ণ’। ভারতীয় উপমহাদেশে এই পদটি আসে মুঘল শাসনামলে, যখন রাজকীয় ভোজে আস্ত গোশতের দৃষ্টিনন্দন ও সুগন্ধযুক্ত রূপ ছিল এক বিশেষ আকর্ষণ। আর বাংলা সংস্কৃতিতে মুসল্লাম ঢুকে পড়ে নবাবী ঢাকার সুবাসে, জমিদার বাড়ির উৎসব-পার্বণে, এবং ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে ঘরোয়া বিলাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
এটা নিয়ে সারাবাংলার পাঠকদের জন্য আজ রেসিপি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী ইসরাত জাহান…
খাসির আস্ত রানের মুসল্লাম রেসিপি
উপকরণ _
খাসির আস্ত রান – ১টি (১.৫-২ কেজি)
টক দই – ১ কাপ
আদা বাটা – ২ টেবিল চামচ
রসুন বাটা – ১ টেবিল চামচ
পেঁয়াজ বাটা – ১ কাপ
পেঁয়াজ বেরেস্তা – ১ কাপ
লবণ – স্বাদমতো
লাল মরিচ গুঁড়ো – ১ চা চামচ
হলুদ গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
ধনে গুঁড়ো – ১ চা চামচ
গরম মসলা গুঁড়ো – ১ চা চামচ
জায়ফল-জয়ত্রী গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
কাজু বাটা – ২ টেবিল চামচ
কিসমিস বাটা – ১ টেবিল চামচ
ঘি – ১/২ কাপ
তেল – ১/২ কাপ
কেওড়া জল – ১ টেবিল চামচ
দারচিনি, এলাচ, লবঙ্গ – সামান্য (সাজাতে বা রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন)
বাদাম কুচি ও পেঁয়াজ বেরেস্তা – গার্নিশ করার জন্য

মুসল্লাম—এই নামটি উচ্চারণেই যেন এক ধ্বনিত হয় মুঘল দরবারের সুবাস, জমকালো উৎসব, আর ঐতিহ্যের সোনালি রেখা
প্রস্তুত প্রণালী _
১. রান পরিষ্কার করা
রানটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে, একটি ছুরি দিয়ে হালকা করে কেটে নিন যাতে মসলা ঢুকে যেতে পারে।
২. মেরিনেশন
রানটিকে দই, আদা-রসুন-পেঁয়াজ বাটা, লবণ, লাল মরিচ, হলুদ, ধনে গুঁড়ো, গরম মসলা, কাজু ও কিসমিস বাটা দিয়ে মেখে ৪-৫ ঘণ্টা রেখে নরমাল ফ্রিজে সারা রাত মেরিনেট করে রাখুন।
৩. রান্না
একটি বড় পাতিলে তেল ও ঘি গরম করে দারচিনি, এলাচ, লবঙ্গ ফোড়ন দিন।
মেরিনেট করা রানটি দিয়ে দিন এবং ঢেকে অল্প আঁচে রান্না করুন। মাঝে মাঝে উল্টে-পাল্টে দিন যাতে সমানভাবে রান্না হয়।
পানি ছাড়লে ঢেকে দিন এবং রানটা নরম না হওয়া পর্যন্ত ধীরে ধীরে রান্না করুন (২-৩ ঘণ্টা পর্যন্ত লাগতে পারে)।
৪. শেষ ধাপ
রানটা সেদ্ধ হলে ওপরে কেওড়া জল, গরম মসলা ও বেরেস্তা ছিটিয়ে দিন।
চুলা থেকে নামিয়ে বাদাম ও ভাজা পেঁয়াজ দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন পোলাও, নান রুটি অথবা পরোটার সঙ্গে।