আজ ২৪শে আষাঢ়, বর্ষাকাল। আর বর্ষাকালে মানেই বৃস্টিময় এক অন্যরকম পরিবেশ। মনোরম আবহাওয়া, গরম থেকে স্বস্তি। তাই বর্ষাকালে খাবারের বিষয়ে একটু বেশ যত্নবান হওয়া উচিত। কারণ এই সময়ে এমন কিছু খাবার আছে যা খেলে খেলে আমাদের শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আসুন জেনে নেই, এমন কোন কোন খাবার রয়েছে যা এই সময়ে না খেয়ে এড়িয়ে চলা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো …
সবুজ শাকসবজি
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ও অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে সবুজ শাকসবজির। কিন্তু বর্ষাকালে পালং শাক এবং মেথির মতো শাকসবজি খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ শাকসবজি দ্রুত আর্দ্রতা ও ময়লা শোষণ করে। একইসঙ্গে বর্ষাকালে ব্যাকটেরিয়া এবং পোকামাকড়ের ঝুঁকি বেশি থাকে। এই পরিস্থিতিতে, যে যতই ভালোভাবে সবুজ শাকসবজি ধুয়ে ফেলুন না কেন, কিছু কণা তার উপর থেকে যায়। তা খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণ হতে পারে।
বেগুন
বেগুন দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। বর্ষাকালে বেগুনে প্রায়শই পোকামাকড় আক্রমণ করে। এই পরিস্থিতিতে না দেখে বর্ষাকালে বেগুন খেলে ফোলাভাব, পেট ব্যথা হতে পারে।
সামুদ্রিক খাবার
সামুদ্রিক খাবার বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ বর্ষাকালে এড়িয়ে চলতে পারলেই স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। বর্ষায় পানিবাহিত রোগ বেশি হয়। তাই সামুদ্রিক খাবার থেকে ইনফেকশন বা সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বর্ষাকালে চিংড়ি বা অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ খেলে পেটে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বাঁধাকপি/ফুলকপি
বর্ষাকালে ফুলকপি এবং বাঁধাকপি খাওয়া উচিত নয়। এই সবজিগুলো ওই সময় আর্দ্র থাকে। তার ভেতরে পোকামাকড় থাকার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া এতে ব্যাকটেরিয়া লুকিয়ে থাকে।
মাশরুম
মাশরুম এমনিতেই আর্দ্র পরিবেশে জন্মায়। বর্ষাকালে এগুলো দ্রুত নষ্ট হয়। বাজারে পাওয়া মাশরুম যদি সামান্য কালো বা নরম দেখায়, তা হলে সেগুলো কেনা উচিত নয়। কারণ মাশরুম যদি সামান্য নষ্ট হয় এবং তা খাওয়া হয়, তা হলে খাদ্যে বিষক্রিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
অঙ্কুরিত আলু
অনেকে শুনে অবাক হতে পারেন যে এই তালিকায় আলুও অন্তর্ভুক্ত। যদি আলুতে অঙ্কুরোদগম হয়, তা হলে বর্ষাকালে সেগুলো খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ, অঙ্কুরিত আলু সোলানিন তৈরি করে। যা এক ধরনের বিষাক্ত যৌগ, এটি খেলে স্বাস্থ্যের ওপর খারাপ প্রভাব পড়ে।
টক দই
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বলা হয় বর্ষাকালে দই না খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। বর্ষাকালে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে পারে এই উপকরণ। দই খেলে বিশেষ করে টকদই খেলে বাড়তে পারে অ্যাসিডিটি হওয়ার প্রবণতা। এছাড়াও দই খেলে বর্ষাকালে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে আপনার। তাই যদি আপনার ঠান্ডা লাগার ধাত থাকে তাহলে বর্ষার দিনে দই না খাওয়াই উত্তম।
কাঁচা শাকসবজি
বর্ষাকালে কাঁচা শাকসবজি না খাওয়াই ভালো। পেটের সমস্যায় ভুগতে পারেন আপনি। ইনফেকশন হওয়ার প্রবণতা বাড়তে পারে। অনেকে প্রতিদিন স্যালাড খান। সেক্ষেত্রে বর্ষাকালে বিশেষ করে এড়িয়ে চলুন কাঁচা সবজির ব্যবহার। উপকার পাবেন। পেটের সমস্যা হবে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্ষাকালে আর্দ্রতা ও তাপমাত্রার ওঠানামার কারণে ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক দ্রুত বৃদ্ধি পায়। যার ফলে খাবার দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এই কারণেই বর্ষায় খাদ্যে বিষক্রিয়া, ডায়রিয়া এবং পেটের নানা রোগের ঘটনা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।