আপনি কি খেয়াল করেছেন— পাশে কেউ হেসে উঠলে অজান্তেই আপনার ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠে? মনে হয় হাসি যেন বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে, আর তা এক মুহূর্তেই আমাদের মনের ভেতর ঢুকে যায়। বিজ্ঞান বলছে, বিষয়টি নিছক কাকতালীয় নয়। মানুষের হাসি আসলেই একধরনের সংক্রমণ।
মনোবিজ্ঞানীরা জানান, হাসি একটি সামাজিক প্রতিক্রিয়া। যখন আমরা কারও হাসি দেখি বা শুনি, তখন মস্তিষ্কের ভেতর মিরর নিউরন সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই নিউরন আমাদের অন্যের আবেগ অনুভব করতে সাহায্য করে। ফলে কারও আনন্দ, উত্তেজনা বা হাসি আমরা নিজের ভেতরও অনুভব করি, আর অবচেতনেই হাসি চলে আসে আমাদের মুখে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, অন্যের হাসি শোনার পর মানুষের ব্রেইনে এমন একধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়, যা আমাদেরও হাসতে উৎসাহিত করে। একে বলা হয় ইমোশনাল কন্টাজন বা আবেগের সংক্রমণ। শুধু হাসি নয়, কান্না বা ভয়ের মতো আবেগও একইভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের দিক থেকেও হাসির সংক্রমণ উপকারী। হাসি শরীরে এন্ডোরফিন নামক হরমোন নিঃসরণ করে, যা আমাদের মানসিক চাপ কমায় এবং শরীরকে হালকা অনুভূতি দেয়। তাই বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় বা পরিবারে একসঙ্গে হাসাহাসি আমাদের সুস্থতার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
তবে মজার ব্যাপার হলো, সবাই সমানভাবে হাসির সংক্রমণে আক্রান্ত হন না। গবেষণা বলছে, যাদের মধ্যে সহমর্মিতা বেশি, তারা অন্যের হাসিতে সহজেই প্রভাবিত হন। অর্থাৎ, হাসি শুধু আনন্দের নয়, সম্পর্কেরও শক্তিশালী এক বন্ধন।
শেষ কথা হলো _
হাসি আসলেই সংক্রামক। তাই যখনই সুযোগ পান, খোলামনে হাসুন। আপনার এক টুকরো হাসি হয়তো আশপাশের মানুষকে আনন্দে ভরিয়ে দেবে, বদলে দেবে মুহূর্তের আবহ।