আমাদের চারপাশে সবসময়ই কিছু মানুষ থাকে যারা ইচ্ছে করে বা না করেই অন্যকে কথার খোঁচা দিয়ে আঘাত করে। তাদের স্বভাবই হলো অন্যের দোষ খুঁজে বের করা, ছোট করা কিংবা নিরুৎসাহিত করা। এরা আমাদের মানসিক শান্তি নষ্ট করে দেয়। বিশেষ করে যারা একটু সংবেদনশীল বা নরম স্বভাবের, তারা এসব আচরণে সহজেই কষ্ট পেয়ে বসে। ফলে মন খারাপের কারণে নিজের কাজ, ক্যারিয়ার কিংবা ব্যক্তিগত জীবনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সমস্যার চিত্র _
টক্সিক বা নেতিবাচক মানুষের কথার প্রভাব অনেক সময় চোখে দেখা যায় না, তবে ভিতরে ভিতরে মনকে ভেঙে দেয়। এমন মানুষরা প্রায়ই—
অন্যের সাফল্যে ঈর্ষা করে।
প্রতিটি কাজের মধ্যে ভুল খুঁজে বের করে।
গুজব বা সমালোচনার মাধ্যমে আঘাত করতে চায়।
ইতিবাচক পরিবেশকে নেতিবাচক করে তোলে।
ফলাফল হলো, যাদের তারা টার্গেট করে তারা ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে।
মনোবিজ্ঞান কী বলে _
মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, টক্সিক মানুষদের কথায় আঘাত পাওয়া স্বাভাবিক। তবে সেই আঘাতকে নিজের ভেতরে জায়গা দিলে তা দীর্ঘমেয়াদে মানসিক চাপ ও ডিপ্রেশনের দিকে ঠেলে দিতে পারে। এ কারণেই দরকার সচেতনতা এবং নিজেকে মানসিকভাবে শক্ত রাখা।
কীভাবে সামলাবেন _
১. নিজেকে বিশ্বাস করুন: মনে রাখুন, তাদের কথার মানে এই নয় যে আপনি সত্যিই খারাপ। তাদের কথার প্রতিফলন তাদের মানসিকতার, আপনার নয়।
২. সীমা তৈরি করুন: বারবার আঘাতকারী মানুষের সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় আলাপ এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে দূরত্ব বজায় রাখুন।
৩. ইতিবাচক মানুষদের সাথে সময় কাটান: যারা আপনাকে উৎসাহ দেয়, সমর্থন করে এবং আপনার সাফল্যে খুশি হয়— তাদের সঙ্গেই থাকুন।
৪. মনোযোগ কাজে দিন: নেতিবাচক কথার কারণে মন খারাপ না করে বরং আপনার কাজ দিয়ে প্রমাণ করুন আপনি কী করতে সক্ষম।
৫. সেলফ-কেয়ার চর্চা করুন: বই পড়া, প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানো, প্রার্থনা বা মেডিটেশন—এসব মানসিকভাবে আপনাকে শক্ত রাখবে।
টক্সিক মানুষেরা সবসময় ছিল, এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। কিন্তু আপনার জীবন আপনার হাতে। অন্যের কথার আঘাতকে নিজের ভেতরে স্থান দিলে আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই এসব মানুষকে এড়িয়ে গিয়ে নিজের আত্মবিশ্বাস, কর্মক্ষমতা ও ইতিবাচক শক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যান। মনে রাখবেন—
‘অন্যের কথায় ভেঙে পড়া নয়, নিজের শক্তিতেই গড়ে উঠবে আপনার পথচলা।’