প্রকৃতির সাথে মানুষের মনের এক অদ্ভুত মিল রয়েছে। আবহাওয়ার পরিবর্তন শুধু পরিবেশকেই নয়, প্রভাব ফেলে মানুষের আবেগ ও মেজাজের ওপরও। বৈজ্ঞানিকভাবেও প্রমাণিত যে প্রকৃতির আবহাওয়া, আলো কিংবা তাপমাত্রার পরিবর্তন সরাসরি আমাদের মস্তিষ্কের হরমোন ও মানসিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে।
বৃষ্টি নামলেই মন খারাপ
বৃষ্টি নামলেই অনেকে একধরনের বিষণ্নতায় ভোগেন। মেঘলা আকাশ, অল্প আলো ও একঘেয়ে পরিবেশে মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নামের হরমোনের কার্যকারিতা কমে যায়। ফলে অনেকের মন খারাপ হয়, একাকিত্ব বাড়ে, আবার কারও মনে স্মৃতিরা নাড়া দেয়। যদিও অন্যদিকে, কিছু মানুষ বৃষ্টির শব্দে খুঁজে পান প্রশান্তি ও রোমান্টিক আবহ।
রোদের কড়া তাপে খিটখিটে মেজাজ
অপরদিকে, যখন প্রচণ্ড রোদ ওঠে, গরমে শরীরের পানিশূন্যতা ও অস্বস্তি তৈরি হয়। এতে শরীরে কর্টিসল নামের স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যায়। এর প্রভাব পড়ে মেজাজে—অনেকেই হয়ে ওঠেন খিটখিটে, সহজেই রেগে যান। গবেষকরা বলছেন, তাপমাত্রা যত বাড়ে, মানুষের সহনশীলতা তত কমতে থাকে।
শীতল হাওয়া আর মন ভালো
আবার হালকা শীতল আবহাওয়া ও শীতল বাতাসে অনেকে পান স্বস্তি ও আনন্দ। প্রকৃতির সবুজ, হাওয়ার শীতল স্পর্শ বা বিকেলের রোদ মানুষের মনে তৈরি করে প্রশান্তি। এমন আবহাওয়া অনেক সময় কর্মউদ্যমও বাড়িয়ে দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মত
মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, আবহাওয়া ও আবেগের এ সম্পর্ক আসলে মানুষের শরীরের রাসায়নিক পরিবর্তনের ফল। সূর্যের আলো থেকে শরীর ভিটামিন-ডি পায়, যা সেরোটোনিন হরমোন সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। তাই উজ্জ্বল দিনে অনেকের মন ভালো থাকে। অন্যদিকে, আলো কমে গেলে বিষণ্নতার ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
শেষ কথা হলো
প্রকৃতি ও মানুষের মন যেন একই সুরে বাঁধা। কখনও মেঘলা আকাশ আমাদের মন ভারী করে দেয়, আবার কখনও সকালের রোদ আমাদের মনে জাগায় নতুন আশার আলো। আবহাওয়া আমাদের নিয়ন্ত্রণে নয়, তবে মনের যত্ন নেওয়া আমাদের হাতেই। তাই প্রকৃতির সাথে মিল খুঁজে নিয়ে ইতিবাচকভাবে মানিয়ে নেওয়াই হতে পারে জীবনের অন্যতম কৌশল।