অনেকেই মনে করেন কোলেস্টেরল সামান্য বেশি থাকলে তেমন কোনো ক্ষতি নেই। কিন্তু বাস্তবে সময়মতো নিয়ন্ত্রণে না আনলে এই সাধারণ সমস্যাই ডেকে আনতে পারে হৃদরোগ, স্ট্রোকসহ নানা জটিল অসুখ। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে যখন উচ্চ কোলেস্টেরল যুক্ত হয়, তখন ঝুঁকির মাত্রা বহুগুণ বেড়ে যায়। তাই প্রতিদিনের খাবার-দাবার ও জীবনযাপনে সচেতনতা খুব জরুরি।
কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন _
ভাজাপোড়া খাবার
ডিপ ফ্রাইড খাবার যেমন—চপ, ফিশ ফ্রাই, শিঙাড়া, সমুচা, নাগেট ইত্যাদি শরীরে ট্রান্স ফ্যাট বাড়ায়। এটি খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) বাড়িয়ে দেয় এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) কমিয়ে দেয়। নিয়মিত খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার
চিনি, মিষ্টি, কেক, মিষ্টি পানীয় ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বাড়ায়, যা কোলেস্টেরলের ভারসাম্য নষ্ট করে। মাঝে মাঝে খাওয়া যেতে পারে, তবে প্রতিদিন নয়। এর পরিবর্তে মৌসুমি ফল বেছে নিন।
রেড মিট ও চর্বিযুক্ত মাংস
গরু, খাসি, ভেড়া জাতীয় মাংসে প্রচুর চর্বি থাকে। নিয়মিত খেলে রক্তনালিতে ফ্যাট জমে গিয়ে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি হয়। বিকল্প হিসেবে মুরগি, মাছ, ডাল ও বাদামজাতীয় প্রোটিন খাওয়া ভালো।
অ্যালকোহল
স্বল্প পরিমাণ অ্যালকোহলও শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়াতে পারে এবং লিভার ক্ষতি করতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন।
জীবনযাপনে যেসব পরিবর্তন জরুরি _
প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা বা ব্যায়াম করুন।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন (৮–১০ গ্লাস)।
পর্যাপ্ত ঘুম নিন (৬–৮ ঘণ্টা)।
ধূমপান এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি রক্তনালিকে দুর্বল করে।
বেশি করে শাকসবজি ও আঁশযুক্ত খাবার খান, যা রক্ত থেকে খারাপ ফ্যাট শোষণ কমায়।
সপ্তাহে অন্তত ২–৩ দিন ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ মাছ (যেমন ইলিশ, রুই, স্যামন, সারডিন) খেতে পারেন।
মনে রাখবেন, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা মানেই শুধু ওষুধ নয়— বরং সচেতন খাদ্যাভ্যাস আর স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। সময় থাকতে সতর্ক হলে হৃদরোগ থেকে নিজেকে ও পরিবারকে নিরাপদ রাখা সম্ভব।