নারীরা সাধারণত পুরুষদের তুলনায় বেশি আয়ু পান— এটি বৈজ্ঞানিকভাবেও প্রমাণিত। তবে শুধুমাত্র জেনেটিক কারণে নয়, বরং জীবনযাত্রার ধরনও দীর্ঘায়ুর অন্যতম চাবিকাঠি। সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন পেতে নারীরা কিছু সহজ কিন্তু কার্যকর অভ্যাস মেনে চলতে পারেন।
সুষম খাদ্যাভ্যাস _
দীর্ঘায়ুর জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারই মূল ভিত্তি। নারীদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় শাকসবজি, ফল, পূর্ণ শস্য, মাছ, ডাল এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি (যেমন অলিভ অয়েল, বাদাম) থাকা জরুরি। অতিরিক্ত চিনি, ভাজাপোড়া ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চললে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও স্থূলতার ঝুঁকি কমে।
নিয়মিত ব্যায়াম _
শরীরকে সচল রাখা দীর্ঘায়ুর জন্য অপরিহার্য। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, যোগব্যায়াম, সাইক্লিং বা হালকা অ্যারোবিক্স শরীরের পাশাপাশি মনকেও সতেজ রাখে। নিয়মিত ব্যায়াম হাড় ও পেশিকে শক্তিশালী করে, যা বয়স বাড়লেও স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে সহায়তা করে।
মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা _
দীর্ঘ জীবন মানেই কেবল শারীরিক সুস্থতা নয়, মানসিক সুস্থতাও সমান জরুরি। স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ধ্যান, প্রার্থনা, বই পড়া কিংবা প্রিয় শখে সময় কাটানো উপকারী। এছাড়া পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা নারীর মানসিক শক্তিকে বাড়ায় এবং একাকিত্ব দূর করে।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা _
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নারীদের হরমোনাল পরিবর্তন, হাড় ক্ষয় (অস্টিওপোরোসিস), স্তন ও জরায়ুর ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। তাই বছরে অন্তত একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্ক্রিনিং করা দীর্ঘমেয়াদে জীবন বাঁচাতে পারে।
পর্যাপ্ত ঘুম _
ভালো ঘুম শরীর ও মনের পুনর্জীবন ঘটায়। প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা গুণগত মানসম্পন্ন ঘুম নেওয়া উচিত। পর্যাপ্ত ঘুম হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং মানসিক স্থিতি বজায় রাখে।
ক্ষতিকর অভ্যাস পরিহার _
ধূমপান, অতিরিক্ত মদ্যপান বা অনিয়ন্ত্রিত ক্যাফেইন গ্রহণ নারীর আয়ু কমিয়ে দেয়। এসব অভ্যাস ত্যাগ করলে শুধু দীর্ঘায়ুই নয়, বরং জীবনের মানও উন্নত হয়।
ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি _
হাসিখুশি থাকা, জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞ মনোভাব রাখা এবং সমস্যার মধ্যেও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা নারীর মানসিক দৃঢ়তা বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, ইতিবাচক মানুষ সাধারণত দীর্ঘায়ু হন।
শেষকথা _
দীর্ঘায়ু কোনো যাদুকরী ব্যাপার নয়—এটি আসে প্রতিদিনের ছোট ছোট অভ্যাস থেকে। নারীরা যদি স্বাস্থ্যকর খাবার খান, নিয়মিত ব্যায়াম করেন, মানসিক শান্তি বজায় রাখেন এবং ক্ষতিকর অভ্যাস থেকে দূরে থাকেন, তবে সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন পাওয়া সম্ভব।