আজকের জীবনে আমরা সবাই যেন এক দৌড়ের মধ্যে আছি— অফিস, পরিবার, সন্তান, সোশ্যাল মিডিয়া— সবকিছুর পেছনে ছুটতে ছুটতে কোথাও যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি। সারাদিনের কাজের শেষে যখন এক মুহূর্ত নিশ্বাস নিতে চাই, তখনই মনে হয়—নিজের জন্য সময় কোথায়?
তবু আশার কথা হলো, মানসিক শান্তি পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগে না। প্রতিদিন মাত্র ১০ মিনিটও যদি নিজের জন্য রেখে দেওয়া যায়, সেটাই হতে পারে নতুন শুরুর পথ।
সকালের শুরুটা হতে পারে এই দশ মিনিট দিয়ে
চা হাতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে নীরবে আকাশ দেখা, গাছের দিকে তাকিয়ে গভীর শ্বাস নেওয়া, কিংবা শুধু নিজের সঙ্গে কথা বলা—এসব ছোট মুহূর্তই মনকে হালকা করে। কেউ চাইলে এই সময়টায় মোবাইল বন্ধ রেখে মেডিটেশন বা প্রার্থনায় মন দিতে পারেন। এর ফলে মনোযোগ বাড়ে, চিন্তা-উদ্বেগ কমে।
দিনের শেষে এই সময়টা আরও প্রয়োজন। সারাদিনের ক্লান্তি আর চাপের পর নিজের ভেতরটা শুনে নেওয়া জরুরি। অনেকেই বলেন, রাতে ঘুমানোর আগে ১০ মিনিট জার্নাল লেখা বা নিজের অনুভূতি লিখে রাখলে মন পরিষ্কার হয়। কারও কাছে গান শোনা বা বইয়ের দু’পাতা পড়াও হতে পারে সেই প্রশান্তির মুহূর্ত।
মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, আমরা যখন নিজের প্রতি সামান্য সময় দিই, তখনই মস্তিষ্কে ‘হ্যাপিনেস হরমোন’ ডোপামিন নিঃসৃত হয়। এতে শরীরের ক্লান্তি দূর হয়, ঘুম ভালো হয়, আর মানসিক ভারসাম্য ফিরে আসে।
এই ১০ মিনিট যেন কখনও কারও কাছে ‘অলস সময়’ না হয়। বরং এটা হোক নিজের সঙ্গে সংযোগের সময়— যখন কেউ আপনাকে টেনে ধরবে না, ফোন বাজবে না, শুধু আপনি আর আপনার নিস্তব্ধতা।
হয়তো এত ব্যস্ত জীবনে দশ মিনিট অনেক ছোট সময়, কিন্তু সেই দশ মিনিটই আপনাকে মনে করিয়ে দেবে— আপনি শুধু দায়িত্ব নয়, আপনি এক সম্পূর্ণ মানুষ।