জুতা আমাদের প্রতিদিনের সঙ্গী। অফিস, পড়াশোনা, ভ্রমণ কিংবা দৈনন্দিন কাজে জুতা ছাড়া চলেই না। তবে দীর্ঘ সময় পরে থাকলে বা সঠিক যত্ন না নিলে জুতায় দুর্গন্ধ তৈরি হয়। এটি যেমন অস্বস্তিকর, তেমনি বিব্রতকর পরিস্থিতিও তৈরি করে। তবে কিছু সহজ ঘরোয়া উপায় মেনে চললে জুতার গন্ধ সহজেই দূর করা যায়।
নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন
জুতায় দুর্গন্ধের প্রধান কারণ হলো ঘাম ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ। তাই জুতাকে সবসময় পরিষ্কার রাখার অভ্যাস করতে হবে। ক্যানভাস বা স্পোর্টস জুতা ব্যবহার করলে সপ্তাহে অন্তত একবার হালকা সাবান ও পানি দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। চামড়ার জুতার ক্ষেত্রে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিলেই হবে।
মোজা ব্যবহারে সতর্কতা
অনেকেই মোজা না পরে জুতা ব্যবহার করেন, যা গন্ধের অন্যতম কারণ। মোজা ঘাম শোষণ করে এবং ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমায়। তাই সবসময় পরিষ্কার কটন বা শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারে এমন কাপড়ের মোজা পরুন। প্রতিদিন নতুন মোজা ব্যবহার করার অভ্যাস করুন।
বেকিং সোডার ব্যবহার
বেকিং সোডা প্রাকৃতিক ডিওডোরাইজার হিসেবে কাজ করে। রাতে জুতার ভেতরে সামান্য বেকিং সোডা ছিটিয়ে রেখে দিন। সকালে গুঁড়ো ঝেড়ে ফেললে গন্ধ কমে যাবে। এটি জুতার ভেতরের আর্দ্রতাও শোষণ করে।
চায়ের পাতা বা কফির গুঁড়ো
ব্যবহৃত শুকনো চায়ের পাতা বা কফির গুঁড়ো ছোট একটি কাগজের ব্যাগে ভরে জুতার ভেতরে রাখলে দুর্গন্ধ দূর হয়। এগুলো প্রাকৃতিকভাবে গন্ধ শোষণ করে এবং হালকা সুবাস রেখে যায়।
সূর্যের আলোতে শুকানো
জুতাকে দীর্ঘক্ষণ আর্দ্র পরিবেশে রাখলে দুর্গন্ধ বাড়ে। সপ্তাহে একদিন হলেও জুতাকে রোদে শুকিয়ে নিন। সূর্যের আলো ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস ধ্বংস করে জুতাকে সতেজ রাখে।
লবণের ব্যবহার
জুতার ভেতরে সামান্য লবণ ছিটিয়ে রাতে রেখে দিলে আর্দ্রতা কমে যায়। লবণ ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঠেকায়, ফলে গন্ধও হ্রাস পায়।
শু স্প্রে বা ফ্রেশনার
বাজারে বিভিন্ন ধরনের শু স্প্রে বা ফ্রেশনার পাওয়া যায়। এগুলো ব্যবহার করলে তাৎক্ষণিকভাবে জুতার ভেতর সতেজ সুবাস পাওয়া যায়। তবে এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিকল্প নয়।
আলাদা জুতা ব্যবহার
প্রতিদিন একই জুতা না পরে দুই-তিন জোড়া জুতা পালা করে ব্যবহার করুন। এতে একটি জুতা ব্যবহারের পর যথেষ্ট সময় শুকানোর সুযোগ পাবে।
শেষকথা
জুতার গন্ধ দূর করতে নিয়মিত যত্ন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সবচেয়ে জরুরি। ঘরোয়া উপায় যেমন বেকিং সোডা, লবণ, কফি বা চায়ের পাতা ব্যবহার করলে সহজেই সমস্যার সমাধান হবে। একইসঙ্গে প্রতিদিন নতুন মোজা ব্যবহার এবং জুতা পালা করে পরার অভ্যাস করলে আর বিরক্তিকর দুর্গন্ধ নিয়ে ভাবতে হবে না।