Saturday 01 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুন্দর ও কার্যকরী রান্নাঘরের জন্য কেবিনেট বাছাইয়ের টিপস

ফারহানা নীলা
১ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:১৫

রান্নাঘর শুধু খাবার রান্নার জায়গা নয়, এটি পরিবারের প্রাণকেন্দ্রও বটে। প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে এক কাপ চা থেকে শুরু করে অতিথি আপ্যায়ন— সবকিছুতেই রান্নাঘর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই রান্নাঘরকে সুশৃঙ্খল ও সুন্দর রাখতে কেবিনেটের ভূমিকা অপরিসীম। বাজারে নানা ডিজাইন, উপাদান ও দামের কেবিনেট পাওয়া যায়। তবে কেনার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখলে আপনার রান্নাঘর হবে কার্যকরী, আড়ম্বরপূর্ণ এবং টেকসই।

জায়গা মেপে নিন আগে

রান্নাঘরে যতই সুন্দর কেবিনেট কেনেন না কেন, যদি মাপসই না হয় তাহলে পুরো সেটআপ নষ্ট হয়ে যাবে। তাই প্রথমেই রান্নাঘরের মাপ নিন। দেয়ালের উচ্চতা, জানালা ও দরজার অবস্থান, গ্যাস বা সিঙ্কের জায়গা বিবেচনায় রেখে কেবিনেটের ডিজাইন ও আকার ঠিক করুন। প্রয়োজনে একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার বা কারিগরের পরামর্শ নিতে পারেন।

বিজ্ঞাপন

উপাদান বাছাইয়ে সতর্ক হোন

কেবিনেট মূলত কাঠ, প্লাইউড, ল্যামিনেট, এমডিএফ বোর্ড বা স্টিল দিয়ে তৈরি হয়।

সলিড উড (কাঠ): দেখতে আকর্ষণীয়, তবে দামী এবং আর্দ্রতায় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

প্লাইউড/ল্যামিনেট: টেকসই এবং বাজেট-বান্ধব।

স্টেইনলেস স্টিল: আধুনিক ও দীর্ঘস্থায়ী, তবে খরচ বেশি।

যদি রান্নাঘরে আর্দ্রতা বেশি থাকে, তবে কাঠের পরিবর্তে ল্যামিনেট বা স্টিল ভালো বিকল্প হতে পারে।

স্টোরেজের পরিকল্পনা

কেবিনেটের প্রধান উদ্দেশ্য হলো স্টোরেজ। তাই দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিস, রান্নার সরঞ্জাম, মসলা বা শুকনো খাবার কোথায় রাখবেন তা ভেবে নিন।

উপরের কেবিনেটে হালকা জিনিস রাখুন।

নিচের কেবিনেটে ভারী হাঁড়ি-পাতিল রাখার ব্যবস্থা করুন।

মশলা বা রান্নার ছোট সরঞ্জামের জন্য ড্রয়ার ব্যবহার করলে সুবিধা হয়।

ডিজাইন ও রঙের নির্বাচন

কেবিনেটের ডিজাইন রান্নাঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। সোজাসাপ্টা মিনিমাল ডিজাইন ছোট রান্নাঘরে ভালো মানায়। আর বড় রান্নাঘরে চাইলে শোকেস-ধরনের কেবিনেটও ব্যবহার করা যায়। রঙ বাছাই করার সময় রান্নাঘরের আলো, টাইলস ও দেয়ালের রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখুন। হালকা রঙ রান্নাঘরকে উজ্জ্বল ও খোলামেলা দেখায়, গাঢ় রঙে আসে এক ধরনের এলিগ্যান্স।

বাজেট আগে ঠিক করুন

কেবিনেট কেনার ক্ষেত্রে বাজেট একটি বড় বিষয়। শুধুমাত্র ডিজাইন দেখে সিদ্ধান্ত নিলে পরে খরচ বাড়তে পারে। তাই আগে থেকেই ঠিক করে নিন কত টাকা খরচ করতে চান। বাজার ঘুরে দাম তুলনা করুন এবং প্রয়োজনমতো কাস্টমাইজড কেবিনেটের খরচ জেনে নিন।

হার্ডওয়্যার ও ফিটিংসের মান

কেবিনেটের দরজার হ্যান্ডেল, কবজা, ড্রয়ারের ট্র্যাক—এসব ছোটখাটো জিনিসই দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহার নিশ্চিত করে। ভালো মানের হার্ডওয়্যার ব্যবহার করলে দরজা বারবার আটকে যাওয়া বা ট্র্যাক নষ্ট হওয়ার ঝামেলা এড়ানো যায়।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার সহজতা

রান্নাঘরে তেল-ঝোল ও ধুলোবালি বেশি হয়। তাই এমন কেবিনেট বেছে নিন যেটি সহজে পরিষ্কার করা যায়। হাই-গ্লস ল্যামিনেট বা স্টেইনলেস স্টিল কেবিনেট মুছলেই চকচকে হয়ে ওঠে। কাঠের কেবিনেট পরিষ্কার করতে বেশি যত্নের প্রয়োজন হয়।

ভবিষ্যতের কথা মাথায় রাখুন

আজকের ডিজাইন কালকে পুরোনো লাগতে পারে। তাই ট্রেন্ডি নয়, বরং সময়হীন (timeless) ডিজাইন বেছে নিন। আবার ভবিষ্যতে যদি রান্নাঘরে কিছু পরিবর্তন বা সম্প্রসারণ করতে চান, তাহলে কেবিনেটের ফ্লেক্সিবল ডিজাইন রাখুন।

শেষকথা

রান্নাঘরের কেবিনেট শুধু জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখার জায়গা নয়, এটি আপনার পুরো বাড়ির নান্দনিকতা ও আরামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই কেনার আগে একটু গবেষণা, পরিকল্পনা এবং সচেতন সিদ্ধান্ত নিলে রান্নাঘর হবে আপনার প্রিয় জায়গাগুলোর একটি।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর