শীতকাল শরীরচর্চার জন্য নিঃসন্দেহে খুব ভালো সময়। এই সময়ে ঘাম কম হয়, ক্লান্তিও তুলনামূলক কম লাগে। তবে শীতে ব্যায়াম শুরু করার আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সঠিক সময় নির্বাচন করা। কারণ ঠান্ডা, কুয়াশা আর তাপমাত্রার ওঠানামার কারণে ভুল সময়ে ব্যায়াম করলে উপকারের বদলে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।
শীতের ভোরে তাপমাত্রা সবচেয়ে কম থাকে এবং কুয়াশাও বেশি হয়। এই সময়ে শরীরের পেশি সহজে উষ্ণ হতে চায় না। ফলে খুব ভোরে জগিং বা ভারী ব্যায়াম করলে পেশি টান ধরা, হাঁটু বা কোমরে ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। পাশাপাশি কুয়াশার মধ্যে বাতাসে থাকা দূষণ শ্বাসনালির জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে। তাই ভোরে ব্যায়াম করতে হলে অবশ্যই দীর্ঘ সময় ধরে হালকা ওয়ার্ম-আপ করা জরুরি।
শীতকালে ব্যায়ামের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ও উপযোগী সময় হলো সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এই সময়ে সূর্য ওপরে ওঠে, তাপমাত্রা তুলনামূলক উষ্ণ থাকে এবং শরীর দ্রুত গরম হয়। এতে ইনজুরির ঝুঁকি কমে যায়। একই সঙ্গে সূর্যের আলো থেকে শরীর ভিটামিন–ডি পায়, যা হাড়ের শক্তি বজায় রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
যদি দিনের বেলায় ব্যায়ামের সুযোগ না পান, তাহলে সন্ধ্যায়ও শরীরচর্চা করা যেতে পারে। তবে সন্ধ্যার পর ধীরে ধীরে ঠান্ডা বাড়তে থাকে। তাই ব্যায়াম শুরুর আগে ভালোভাবে ওয়ার্ম-আপ করতে হবে এবং ব্যায়াম শেষে কুল-ডাউন করা খুব প্রয়োজন। সন্ধ্যায় বা রাতে বাইরে জগিং করলে আলো প্রতিফলিত হয় এমন পোশাক ব্যবহার করা নিরাপদ।
শীতে ব্যায়াম করার সময় আরও কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরি। ঠান্ডায় পেশি গরম হতে সময় নেয়, তাই ওয়ার্ম-আপের কোনো বিকল্প নেই। হালকা কিন্তু একাধিক স্তরের পোশাক পরলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। শীতকালে পিপাসা কম লাগলেও শরীর পানিশূন্য হতে পারে, তাই ব্যায়ামের আগে ও পরে পানি পান করা দরকার।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিজের শরীরের প্রয়োজন বুঝে সময় বেছে নেওয়া। উষ্ণ ও নিরাপদ সময়ে নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস ধরে রাখতে পারলে এই শীতেও সুস্থ, ফিট ও সতেজ থাকা সম্ভব।