Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যত্নে থাকুক শীতের কাপড়  


১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৭:১৪

লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।

বছর ঘুরে আবার এসেছে শীত। ঢাকায় না পড়লেও সারাদেশে জাঁকিয়ে বসেছে শীত। আলমারি থেকে নেমেছে শীতের কাপড়, লেপ, কম্বল ইত্যাদি। এসময়ে আবহাওয়া কিছুটা শুকনো থাকায় বাতাসে ধুলোবালি বেড়ে যায়। দ্রুত ময়লা হয় শীতের কাপড়। তাই শীতের কাপড়ের প্রয়োজন বাড়তি যত্ন।

আসুন জেনে নেই শীতের কাপড়ের যত্ন নেবেন কীভাবে

শীতের শুরুতে

শীতের কাপড় আলমারি থেকে বের করে সরাসরি গায়ে দেওয়া উচিৎ না। অনেকদিন ব্যবহার না করায় এগুলোতে এক ধরনের ভ্যাপসা ভাব থাকে।

তাই শীত শুরু হওয়ার কিছুদিন আগে সোয়েটার, মাফলার, জ্যাকেট, গায়ের চাদর ও কম্বল বের করতে হবে।  পোশাকগুলো ভালো করে ঝেড়ে নিয়ে হালকা রোদে দিতে হবে। তবে কম্বল তুলনামূলক ভারী হওয়ায় ব্যবহারের আগে কড়া রোদ দিতে ভুলবেন না।

শীতের কাপড়ের যত্ন

পশম বা উলের পোশাকের যত্ন

পশম বা উলের পোশাক ময়লা হয় দ্রুত। কিন্তু বার বার ধুলে এই পোশাকগুলো নষ্ট হয়ে যায়। তাই এগুলোর বাড়তি যত্ন নিতে হয়। পশম বা উল রঙিন হলে ধোয়ার সময় পানিতে সামান্য একটু ভিনেগার দিতে হবে আর সাদা হলে লেবুর রস দিতে হবে। এ জাতীয় কাপড় ধোয়ার সময় ব্রাশ ব্যবহার করা উচিত না। তাতে কাপড় নষ্ট হয়ে যায়।

পশম বা উলের কাপড় ধোয়ার জন্য ডিটারজেন্টের চেয়ে শ্যাম্পু ব্যবহার করা ভালো। ধোয়ার পর সুতি কাপড়ের মতো না চিপে শুধু হাত দিয়ে হালকাভাবে পানি নিংড়ে নিতে হবে। এরপর হালকা রোদে কিছুক্ষণ শুকাতে দিতে হবে।

শীতের কাপড়গুলো ভারি হওয়ার কারণে শুকাতে সময় বেশি লাগে। অনেকে তাড়াতাড়ি শুকানোর জন্য কড়া রোদে এই কাপড়গুলো শুকাতে দেন। যা মোটেও উচিত না। এতে কাপড়ের রং নষ্ট হয়ে অল্পদিনেই কাপড় মলিন হয়ে যায়। উলের কাপড় ধোয়ার পরে ঝুলিয়ে শুকাতে দেবেন না। এতে কাপড়ের আকৃতি নষ্ট হয়ে যায়। কোন একটি পরিষ্কার জায়গায় বিছিয়ে রেখে শুকাবেন।

বিজ্ঞাপন

পশম বা উলের কাপড়ে সরাসরি গরম ইস্ত্রি ব্যবহার করা উচিত না। এই ধরনের কাপড়ে স্টিম ব্যবহার করে ইস্ত্রি করতে হয়। অর্থ্যাৎ উলের কাপড়ের ওপর একটি সুতি কাপড় বিছিয়ে দিয়ে তারপর ইস্ত্রি করতে হবে। এতে কাপড়ের কোন ক্ষতি হবে না। গরম বা উলের কাপড় অবশ্যই ঠান্ডা পানি দিয়ে ধোবেন।

উলের কাপড় ওয়াশিং মেশিনে না ধোয়াই ভাল। তবে ধুতে চাইলে ওয়াশিং মেশিনের উল অপশন চালু করে ধুতে হবে।

কম্বলের যত্ন

কম্বল ঘরে থাকলেও অল্পদিনেই ধুলোময়লা জমে যায়। এজন্য কম্বলের যত্ন নিতে হবে। অনেকেই শীত আসার আগেই কম্বল ড্রাই ওয়াশ করে নেয়। সপ্তাহে অন্তত একদিন কম্বল ভালভাবে ঝেড়ে কড়া রোদে কিছুক্ষণ রাখতে হবে। আর চাইলে কম্বলে কভার লাগাতে পারেন। এতে কম্বল ময়লা কম হবে। নিয়মিত কম্বল কভার ধুতে হবে।

শীতের কাপড়ের যত্ন

হাত পায়ের মোজা, মাফলার বা টুপি

শীতকালে সোয়েটার, জ্যাকেট বা চাদরের চেয়েও যেসব জিনিস বেশি ময়লা হয় সেগুলো হলো মাফলার, টুপি, হাত ও পা মোজা। তাই এগুলো এক জোড়া না কিনে দুই তিন জোড়া কেনা ভাল। এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। ঠান্ডা পানিতে ডিটারজেন্ট মিশিয়ে মাফলার, মোজা ও টুপি ধুতে হয়। পানিতে কিছুটা লেবুর রসও মিশিয়ে নিতে পারেন। ধোয়ার সময় ব্রাশ ব্যবহার না করে হাত দিয়েই কচলিয়ে ধুতে হবে।

কোট লেদারের কাপড়ের যত্ন

লেদারের কাপড় বাসায় পরিষ্কার না করে লন্ড্রিতে দিতে হবে। তাছাড়া শীত শেষ হওয়ার পর লেদারের কাপড় পলিথিন ব্যাগে রাখতে হবে, যাতে কাপড়ে ধুলো জমতে না পারে। লেদারের পোশাক ব্যবহারের সময়ও কিছুটা যত্ন নিতে হবে। বাইরে থেকে আসার পর নরম ব্রাশ দিয়ে লেদারের পোশাক ঝেড়ে নিতে হবে, যাতে ধুলোবালি না থাকে। এরপর হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে বাইরে কিছুক্ষণ রেখে তারপর আলমারি বা ওয়ারড্রপে রাখতে হবে।

বিজ্ঞাপন

ফ্লানেল কাপড়

ফ্লানেল কাপড় শ্যাম্পু দিয়ে ধুতে হবে। পানিতে ভেজানোর ১ ঘন্টা পরেই ধুয়ে ফেলতে হবে। ফ্লানেল কাপড় কড়া রোদে শুকানো যাবে না। এতে রং নষ্ট হয়ে যাবে। তাই অল্প রোদে কিংবা ছায়ায় রেখে শুকাতে হবে।

শীতের কাপড়ের যত্ন

শীত শেষে যা করবেন

শীত শেষ হলেই কাপড়গুলো অনেকদিনের জন্য বাক্সবন্দি হয়ে যায়। তাই শীতের কাপড় তুলে রাখার আগে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হয়-

  • সোয়েটার, চাদর, মাফলার, টুপি, জ্যাকেট এগুলো শীত শেষে ধুয়ে রাখবেন। আর লেদার জ্যাকেট, কোট ও কম্বল ড্রাই ওয়াশ করবেন।
  • শীতের কাপড় কখনই বাইরে রাখা উচিত না। জ্যাকেট ও কোট ছাড়া অন্যান্য শীতের পোশাকগুলো ভাঁজ করে রাখবেন। শীতের পোশাক মোটা পলিথিন বা সুতি কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে রাখবেন যাতে ধুলোবালি না জমে। এমনকি কম্বলও বড় পলিথিনের ভেতর ভাঁজ করে রাখতে হবে।
  • শীতের কাপড় আলমারিতে রাখার আগে ন্যাপথলিন দিয়ে রাখা ভাল।
  • উল বা পশমের কাপড় কখনই হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে আলমারিতে রাখা উচিত না। এতে কাপড়ের আকৃতি নষ্ট হয়ে যাবে। তাই এই ধরনের কাপড়গুলো সবসময় ভাঁজ করে রাখতে হবে।

সারাবাংলা/এসএস/আরএফ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর