নটিংহ্যামে দেখা মিললো শৈশবের নায়কের
২৫ জুন ২০১৯ ১৬:১০
লম্বা, ছিমছাম সুদর্শন এক পুরষ। প্রাণ শক্তিতে ভরপুর। মাথায় ঝাঁকড়া চুল, ফ্রেঞ্চ কাট দাঁড়ি। পিঠে ধনুক আর কোমরে তরবারি নিয়ে ঘোড়ায় চড়ে চষে বেড়ান তামাম দুনিয়া। সর্বক্ষণের সঙ্গি লিটল জন, ফ্রেয়ার টাক, অ্যালান অ্যা ডেইল ও উইল স্কারলেট। চলার পথে যখনই যেখানে বিপত্তির খবর পান বিদ্যুৎ বেগে ছুটে যান।
ঝামেলার জায়গায় পৌঁছতে না পৌঁছতেই দ্রুত ছুটে চলায় ঘোড়ার ওপর থেকেই নিখুঁত নিশানায় তীর বিদ্ধ করেন অত্যাচারিকে। কখনো কখনো হাতে উঠে আসে ধারালো তলোয়ার আর তাতেই চলে শত্রুর বিনাশ। ওদিকে নিশ্চিত হারের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে উল্লাসে ফেটে পড়ে মার খাওয়া শিবির।
ঠিক এমন একটি চরিত্রকে টিভি পর্দায় দেখে কেটেছে মধুর শৈশব। কত শতবার তার মত হওয়ার স্বপ্ন উঁকি দিয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। বাস্তবে আর তার মতো হয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। বলছিলাম রবিন হুডের কথা।
আশ্চর্যজনকভাবে শৈশবের সেই সুপার হিরোর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল নটিংহ্যামে। এসেছি সারাবাংলা ডট নেটের হয়ে ক্রিকেট বিশ্বকাপ কাভার করতে। কাজের ফাঁকেই সামান্য ঘোরাঘুরি। শুধু আমিই না। আমার মত যে কেউই নটিংহ্যামে গেলে একবার হলেও তাকে দেখে আসেন। তার সঙ্গে দেখা না হলে, ছবি না তুললে যেন নটিংহ্যাম সফর অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
প্রথমবারের মতো শৈশবের নায়কের সাথে দেখা। তাও নিঃশ্বাস দূরত্ব থেকে। এমনকি মিললো ছুঁয়ে দেখার সুযোগ। তবে এই দেখা টা পাথুরে মূর্তির সাথে না হয়ে রক্তমাংসের রবিন হুডের সাথে হলে অনুভূতিটা যে অন্যরকম হত তা বলার বাইরে। শোষিত, বঞ্চিত মানুষের জন্য আত্মত্যাগের জন্য একটা ধন্যবাদ তাকে দিতাম। সেই সুযোগ না পেলেও প্রিয় নায়কের মূর্তি দেখে চিত্তের খোরাক মিটেছে কিছুটা।
রবিন হুডকে রাখা হয়েছে নটিংহ্যাম ক্যাসলের ঠিক সামনে। টিভি পর্দার মত এখানেও তার সঙ্গি হয়েছেন লিটল জন, ফ্রেয়ার টাক, অ্যালান অ্যা ডেইল ও উইল স্কারলেট। ডিজাইনার জেমস রবিনহুডের সাগিরেদদের তাদের প্রিয় দলনেতার সঙ্গ থেকে বঞ্চিত করেননি।
মুর্তিটি প্রথমবারের মতো উন্মোচিত হয়েছিল ১৯৫২ সালে। শহরের প্রাণকেন্দ্র নটিংহ্যাম ক্যাসলের প্রাঙ্গনে ডাচেস অব পোর্টল্যান্ড দর্শনার্থীদের জন্য রবিন হুডের মূর্তি উন্মোচন করেছিলেন। স্মরণীয় সেই মুহুর্তে সেখানে উপস্থিত ছিলেন রানী এলিজাবেথ ও ডিউক অব এডিনবার্গ।
জেমস উডফোর্ডের বিখ্যাত ডিজাইনটি বাস্তবায়নে সাহায্য করেছিলেন স্থনীয় ধনকুবের ফিলিপ ই এফ ক্লে। সেসময়ে মূর্তিটি বানাতে খরচ হয়েছিল ৫ হাজার পাউন্ড।
ইংলিশ লোক সাহিত্যের বিখ্যাত চরিত্র রবিন হুডের এই মূর্তিটি গবেষণার জন্য সমৃদ্ধ এক ভান্ডার। এখানে এলে কল্পনার রবিন হুডকে নিয়ে গবেষকদের নানা জিজ্ঞাসার জবাব মেলে আর সেই সাথে মেটে কৌতূহলী দর্শনার্থীদের মনের খোরাক।
সারাবাংলা/এমআরএফ/আরএফ